ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রার্থীদের ভোট দেয়ার আহ্বান সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৭ নভেম্বর ২০১৮

মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রার্থীদের ভোট দেয়ার আহ্বান সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে আসন্ন নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের প্রার্থীদের ভোট দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জোট নেতারা বলেন, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সামনে রেখে পথ চলে। যেসব প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাস করে না তাদের নির্বাচিত না করতে ভোটারদের প্রতি তারা আহ্বান জানিয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ছয় দফা দাবি পেশ করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন জোটের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ, সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, গণসঙ্গীত শিল্পী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ফকির আলমগীর ও আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহ্্কাম উল্লাহ্। লিখিত বক্তব্যে গোলাম কুদ্দুছ নির্বাচনকে সামনে রেখে ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলোÑ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সকল মত ও চিন্তার প্রতিফলন জাতীয় সংসদে হওয়া; নির্বাচনে সকল প্রার্থীর সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা; মন্ত্রী-এমপিদের কোন ধরনের সরকারী সুযোগ-সুবিধা প্রদান না করা; নির্বাচনে দলীয় স্বার্থে সকল ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা; মানবতাবিরোধী অপরাধে দ-িত ও মামলায় অভিযুক্ত মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ব্যক্তিদের পোষ্যদের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা; কালো টাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা এবং নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বাঙালীর হাজার বছরের মূল্যবোধ, নীতি-নৈতিকতা বিরোধী অপপ্রচার প্রতিরোধে নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ৫ জানুয়ারি নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ২০১৪ সালের ঐ নির্বাচন একটি দল শুধু বর্জনই করেনি, প্রতিরোধেরও ঘোষণা দিয়েছিল। এর ফলে জনগণ তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল, এর দায়ভার তাদেরই নিতে হবে। তবে এবার সব দলের অংশগ্রহণে প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশা করেন। কওমি শিক্ষাব্যবস্থা ও রবিবারের সমাবেশের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওই দিন হেফাজত ইসলামের কোন সমাবেশ ছিল না। সেটা ছিল ছয়টি কওমি মাদ্রাসা বোর্ডের সম্মিলিত একটি সমাবেশ। বিভিন্ন পেশাজীবী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা যেমন যেতে পারেন, তেমনি ওই অনুষ্ঠানেও তিনি যেতে পারেন। এটাকে আমরা খুব বেশি নেতিবাচক হিসেবে দেখতে চাই না। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তিনি বাহাত্তরের সংবিধানের প্রণেতা। সেখানে তিনি বাঙালী জাতীয়তাবাদের কথা বলেছিলেন। আর আজ তিনি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি নিজেই নিজের সংবিধানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তার বিষয়ে আমাদের কোন মন্তব্য নেই। তার অবস্থান জাতি ঠিক করবে। নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, আদর্শগত মিল না থাকলেও জোট গঠন হতে পারে। এটা অনেকটা ‘শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু’র মতো বিষয়। এ ধরনের কোন জোট দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হয়। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধে আদর্শ নিয়ে যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে জনগণ তাদেরই নির্বাচিত করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি ঝুনা চৌধুরী, নৃত্যশিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহফুজুর রহমান, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারশনের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আকতারুজ্জামান, পথনাটক পরিষদের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান প্রমুখ।
×