ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আইটিআইয়ের সাত দশক পূর্তি উৎসব বর্ণিল আয়োজনে

প্রকাশিত: ০৬:০১, ২ নভেম্বর ২০১৮

আইটিআইয়ের সাত দশক পূর্তি উৎসব বর্ণিল আয়োজনে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পথচলার ৭০ বছরে পদার্পণ করল ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট (আইটিআই)। ইউনেস্কোর উদ্যোগে ১৯৪৮ সালের পহেলা জুলাই যাত্রা শুরু করে আইটিআই। দীর্ঘ সাত দশকে বিশ্ব থিয়েটারের অভিভাবকসম প্রতিষ্ঠানটি সৃজনশীল উৎসাহ দিয়ে আসছে নাটক, নৃত্য ও মিউজিক থিয়েটারে। আইটিআইয়ের কর্মকা- সবচেয়ে বিস্তৃত হয়েছে এশিয়া, আফ্রিকা ও আরব দেশগুলোতে। নিরন্তর এই পথচলায় নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার সংগঠনটির বিশ্ব সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানে তিনি সংগঠনটির সাম্মানিক সভাপতি। এমন প্রেক্ষাপটে সাড়ম্বরে উদ্্যাপিত হচ্ছে আইটিআইয়ের সাত দশক পূর্তি। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় তিন দিনের উৎসবের মাধ্যমে সাজানো হয়েছে আয়োজন। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া আয়োজনে নাট্যশালার লবিতে শোভা পাচ্ছে বাংলাদেশের মঞ্চনাটকের সাড়ে চার দশকের বেশি সময়ের পথচলা নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনী ‘ফিরে দেখা’। এছাড়া তিন দিনের আয়োজনে রয়েছে বিভিন্ন নাটকের কোলাজ মঞ্চায়ন, নৃত্যনাট্য ও লোকনাট্য পরিবেশনা এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। আইটিআইর বাংলাদেশ কেন্দ্রের আয়োজনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে শুরু হয় বর্ণিল এই উৎসব। সন্ধ্যায় প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসব উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইটিআইয়ের সাম্মানিক সভাপতি রামেন্দু মজুমদার ও নাট্যজন আতাউর রহমান। আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্রের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রসাদ দেবনাথ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রখ্যাত অভিনয়শিল্পী লাকী ইনাম। বাংলাদেশে আইটিআইয়ের কর্মকা- প্রসারিত করার আহ্বান জানিয়ে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, নাট্যকর্মী হিসেবে এই সংগঠনটির কাছে আমাদের প্রত্যাশাটা একটু ভিন্ন। আইটিআই এমন উৎসব বা অনুষ্ঠান করবে যা দেখে আমরা কিছু জানতে ও শিখতে পারব। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নাটককে কেন্দ্র করে যেসব ঘটনা ঘটছে তা তুলে ধরতে হবে। পৃথিবীজুড়ে নাটক নিয়ে নানা ঘটনা ঘটছে। সেগুলো আমরা আইটিআইয়ের মাধ্যমে জানতে চাই। তিন দিনের উৎসব উপলক্ষে জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনের সামনের লবিতে প্রদর্শিত হচ্ছে ‘ফিরে দেখা (১৯৮১-২০১৮)’ শীর্ষক প্রদর্শনী। নানা আলোকচিত্রের মাধ্যমে এ প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশে আইটিআইয়ের কর্মপ্রবাহ। উদ্বোধনী আলোচনা পর্ব শেষে নৃত্য পরিবেশন করে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা। নৃত্য পরিবেশনায় ছিল পল্লবী ড্যান্স সেন্টারের শিল্পীরাও। সব শেষে বাংলাদেশের অগ্রগণ্য সাতটি নাট্যদল তাদের বিভিন্ন দর্শকপ্রিয় নাটকের অংশবিশেষ নিয়ে পরিবেশন করে থিয়েটার কোলাজ। আজ শুক্রবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে ‘অন্তরঙ্গ কথন : আমার নাট্যপথ’ শীর্ষক থিয়েটার লেকচার। এতে বক্তব্য রাখবেন পশ্চিমবঙ্গের নাট্যজন বিভাস চক্রবর্তী। সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের চিন্তক থিয়েটার পরিবেশন করবে লোকনৃত্যনাট্য ‘বেহুলা ভাসান’। উৎসবের সমাপনী দিন শনিবার একই মঞ্চে মানিকগঞ্জের ফকির আজিজ সরকার ও তার দল পরিবেশন করবে লোকনাট্য ‘গাজীর গান’। ২৫ সংগঠন নিয়ে বাঙালী সাংস্কৃতিক বন্ধনের আত্মপ্রকাশ ॥ সমমনা ২৫টি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে নিয়ে আত্মপ্রকাশ হলো বাঙালী সাংস্কৃতিক বন্ধন নামে একটি ঐক্যবদ্ধ সাংস্কৃতিক সংগঠন। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ সংগঠনের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন এর সভাপতি চিত্রনায়ক ফারুক। সংগঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, যে চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সে চেতনাকে ধরে রাখতেই এ সংগঠনের আত্মপ্রকাশ। এ সংগঠন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নানা কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করবে। সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, সমমনা ২৫টি সংগঠন নিয়ে বাঙালী সাংস্কৃতিক বন্ধন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, আওয়ামী শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলার মুখ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, আওয়ামী সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ লোক সাংস্কৃতিক পরিষদ, বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, স্বাধীনতা চারুশিল্পী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ, শিল্পী কলাকুশলী সমিতি, ভাওয়াইয়া অঙ্গন, বাংলাদেশ ললিতকলা পরিষদ, বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টি সংসার, প্রতিভা মূল্যায়ন সংসদ, স্বাধীনতা সাংস্কৃতিক একাডেমি ও বঙ্গমাতা পরিষদ। ফারুক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর আশা ছিল, সংস্কৃতির বিকাশ ঘটবে বাধাহীনভাবে। কিন্তু সেটি হয়নি। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের দোসররা ফিরিয়ে এনেছিল পাকিস্তানী ভাবধারার সমাজব্যবস্থা, পাকিস্তানী সংস্কৃতি। সে শক্তি এখনও এ দেশের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চায়। তাদের বিরুদ্ধে লড়তে শেখ হাসিনাকে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় নিয়ে আসতে হবে। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আজম বাশার বলেন, আগামী দিনের চলার পথে বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে এই সংগঠন কাজ করবে। সময়ের দাবি পূরণ করবে বাঙালী সাংস্কৃতিক বন্ধন। নাট্যজন ড. ইনামুল হক বলেন, আমরা শিল্পবান্ধব সরকার চাই, বর্তমান সরকার শিল্পবান্ধব সরকার। এই সরকারকেই আমরা চাই। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কবি ও সংসদ সদস্য কাজী রোজী, শিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, মনোরঞ্জন ঘোষাল, সঙ্গীতজ্ঞ শেখ সাদী খান, নাট্যজন এস এম মহসিন, শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ এবং বাউল শিল্পী শফি মণ্ডল।
×