ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপিপন্থীদের সঙ্গে আওয়ামী আইনজীবীদের হাতাহাতি সুপ্রীমকোর্টে

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১ নভেম্বর ২০১৮

বিএনপিপন্থীদের সঙ্গে আওয়ামী আইনজীবীদের হাতাহাতি সুপ্রীমকোর্টে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদে ডাকা বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের আদালত বর্জনের ঘোষণা সত্ত্বেও সুপ্রীমকোর্টের (আপীল ও হাইকোর্ট) উভয় বিভাগে বিচারকার্য পরিচালিত হয়েছে। তবে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন থেকে আদালত ভবনে ঢোকার দুটি পথেই তালা ঝুলিয়ে দেয় বিএনপিপন্থী আইনজীবীগণ। এ সময় বিক্ষোভরত বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীগণ বাগ্বিত-ায় জড়ায় এবং দফায় দফায় ধাক্কাধাক্কি, এমনকি হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। আদালত বর্জনের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ প্রতিবাদ সভা করে। বিএনপিপন্থী আইনজীবীরাও সংবাদ সম্মেলন করে। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ও বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন প্রতিবাদ সভায় বলেন, অনেকদিন ধরে বিচার অঙ্গনকে (সুপ্রীমকোর্ট) বিশেষ একটি দলের (বিএনপি) রাজনৈতিক মঞ্চ করার চেষ্টা চলছে। ‘আমরা বলে এসেছি, এটা কোর্ট, একটি পবিত্র স্থান। কোন দলের মঞ্চ করার জন্য সুপ্রীমকোর্ট করা হয়নি।’ বুধবার সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের দক্ষিণ হলে ওই প্রতিবাদ সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের এই সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক এ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু, নূরুল ইসলাম সুজন, আজাহারুল্লাহ ভূঁইয়া ও এএম আমিন উদ্দিন মানিক প্রমুখ। ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ২৯ অক্টোবর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সভা নিয়মবহির্ভূতভাবে ডাকা হয়। সভা ডেকে আইনজীবী সমিতি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়। তারা খালেদা জিয়ার সাজার রায়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ হয়ে রায়কে প্রশ্নবিদ্ধ করে। অনেকে বলে, এটা ফরমায়েশি রায়। কিন্তু তাদের এ ধরনের বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। ক্ষত দূর করা না হলে কঠোর কর্মসূচী ॥ বিচার বিভাগে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেছেন, প্রধান বিচারপতিকে (সৈয়দ মাহমুদ হোসেন) বলেছিলাম বিচার বিভাগের এই ক্ষত দূর করতে, কিন্তু তা করা হয়নি। অচিরেই বিচার বিভাগের এই ক্ষত দূর করা না হলে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে। বুধবার সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্ট ১০ বছরের সাজার যে রায় দিয়েছে, তা সরকারের চাপের মুখে বাধ্য হয়ে দিয়েছে বলে সাধারণ আইনজীবীদের ধারণা। আইনজীবী সমাজ এবং দেশের মানুষ একটি রাজনৈতিক মামলায় বিচার বিভাগের ওপর এ ধরনের হস্তক্ষেপ অতীতে কখনও দেখেনি। এটা দেশ ও জাতির জন্য দুঃখজনক। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সুপ্রীমকোর্টে মানববন্ধন হয়েছে। দেশের অন্যান্য আদালতেও মানববন্ধন করা হবে। সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গোলাম মোস্তফা, গোলাম রহমান ভূঁইয়া নাসরিন আক্তার, কাজী জয়নুল আবেদীন, মাহফুজ বিন ইউসুফ, ব্যারিস্টার শফিউল আলম মাহবুব, আহসান উল্লাহ, মেহেদী হাসান, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমানসহ বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
×