ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঐক্যফ্রন্টের সাত দফার একটিও মানা হবে না ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২৭ অক্টোবর ২০১৮

 ঐক্যফ্রন্টের সাত দফার একটিও মানা হবে  না ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বহুল কাক্সিক্ষত মেট্রো রেলের কাজ এগিয়ে চলেছে। রাজধানীর যানজট নিরসনে সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের মধ্যে এটি একটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে। ফলে রাজধানীতে যানজটের অসহনীয় অবস্থা কমবে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মেট্রোরেল এমআরলাইন ৬-এর উদ্বোধন হবে বলে জায়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার উত্তরা দিয়াবাড়ীতে মেট্রোরেল কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদকদের প্রশ্নের জবাবে তিএ কথা জানান। প্রকল্প পরিদর্শন শেষে চলমান রাজনীতি ও বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবি-দাওয়া নিয়েও কথা বলেন কাদের। তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবির একটিও মানা হবে না। যদিও বিএনপিসহ ফ্রন্টের নেতারা বারবারই বলছেন তাদের উত্থাপিত সাত দফা সরকারকে মানাতে বাধ্য করা হবে। অন্যথায় আন্দোলনের হুমকিও দিয়ে যাচ্ছেন ড. কামালের নেতৃত্বে নবগঠিত রজনৈতিক মোর্চার নেতারা। কাদের বলেন, এমআরলাইন ৬ মেট্রোরেল এখন আর স্বপ্ন নয়, তরুণ প্রজন্মের ড্রিম প্রজেক্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেগা প্রজেক্ট। মেট্রোরেল প্রকল্প এখন ভিজিবল রিয়েলিটি, এটা এখন দৃশ্যমান একটি প্রকল্প। এ সময় সেতুমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পের কাজ দুই ফেজে শেষ হবে। ফার্স্ট ফেজে কাজ হবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত। এই কাজ শেষ হবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে। সেকেন্ড ফেজে আগারগাঁও থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত কাজ শেষ হবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে। বাংলাদেশ এই প্রথম পাতাল রেল হবে মন্তব্য করে তিবলেন, বাংলাদেশ প্রথম পাতাল রেল হবে এমআরলাইন-১। এরই মধ্যে আমরা এমআরটি লাইন ১-এর চুক্তি করে ফেলে। এর আওতায় কমলাপুর থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত পাতাল রেল হবে। এমআরলাইন ১-এর কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালে। মন্ত্রী বলেন, প্রতি ঘণ্টায় উত্তরা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ৬০ হাজার মানুষ আসা-যাওয়া করবে। এতে দিনে পাঁচ লাখ মানুষ যাতায়াত করবে। আরও এরকম পাঁচটি এমআরটি লাইন আছে। এমআরলাইন ৫-এর কাজ জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হবে। এই ছয়টি লাইনের কাজ শেষ হলে ঢাকা শহরের যানজট নিরসন হবে বলে আমরা আশা করি। মেট্রোরেল প্রজেক্ট ২০২৪ সালে শেষ করার কথা ছিল দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাপানীরা সময় কমাতে কমাতে এটাকে ২০২০ সালে নামিয়ে এনেছে। দেখুন, হআর্টিজান ঘটনার পর এই প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হবে এটা কেউ বিশ্বাস করেনি। কিন্তু জাপানীরা এগিয়ে আসায় ছয় মাস পিছিয়ে যাওয়া কাজকেও জাইকা এগিয়ে নিয়ে এসেছে। জাপাীরা এগিয়ে আসার পেছনে কূটনৈতিক উদ্যোগ ছিল কি না জানতে চাইলে ক্ষমতাসীন দলের এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, দে, বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে জানে। এখানে আমাদের কূটনৈসাফল্য আছে। তাছাড়া, আমরা সিকিউরিটি-সেফটি এনশিওর করতে পেরেছি, তাই কাজ হচ্ছে। এক দফাও মানব না ॥ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফার এক দফাও মানা হবে না বলে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের দাবি করা সব দফা ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক। সম্প্রতি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সাত দফা দাবি পেশ করেছে। এর জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের সব দাবি অযৌক্তিক। সাত দফার এক দফাও মানা হবে না। তাই নিরপেক্ষ সরকারের দাবি উঠতে পারে না। নির্বাচনের সময় সরকার তার এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়ন করবে। বিশ্বের অন্য দেশে যেভাবে থাকে আমাদের দেশেও একইভাবে সরকার থাকবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনই নিরপেক্ষ কমিশন এবং এই কমিশনে বিএনপির লোক আছে বলে জানান তিনি। বিএনপি আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেও তাদের দাবিতে নত না হওয়ার কথা আবার জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের বিজয়ী হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তাদের আন্দোলনের হুমকিতে কোন চাপ অনুভব না করার কথা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এত বড় ঐক্যফ্রন্ট! কয়টা লোক হলো? বড় বড় বাঘা বাঘা নেতারা সেখানে গেলেন বোমা ফাটাতে, জনগণের সাড়া কি মিলেছে? কোনদিন মিলবে না। বাংলাদেশের ইতিহাস বলে, আন্দোলনে যারা বিজয়ী হতে পারে না, নির্বাচনেও তারা বিজয়ী হতে পারে না। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের দরকার কী? নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন তো আছে। নির্বাচন যখন হবে, তখন নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের আন্ডারে। এই নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি নিরপেক্ষ। আর পরিবর্তনের সময় কই, মহামান্য রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি গঠন করে এই নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। এখানে বিএনপির লোকও তো আছে। ইসিতে মতভেদের বিষয়ে মন্ত্রী কাদের বলেন, এটা কি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যে পাঁচজন সর্বসম্মত না দিলে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না? এখানে পাঁচজনের মেজরিটি যা বলে, তাই সিদ্ধান্ত। এটা বিভক্তি নয়। বিএনপি নিষ্ক্রিয় ‘সংস্কারপšী’’দের সক্রিয় করার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে তাদের দেউলিয়াত্বের প্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি কতটা দেউলিয়া যে এখন আবার তাদের দেয়া হয়েছে। দলের লোকজনকে সংস্কারপন্থী বলে কোণঠাসা করে রেখেছিল বিএনপি। এখন এই লোকরা এসে আন্দোলনে শক্তি জোগাবে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। তাছাড়া ফখরুল সাহেব নিজেও সংস্কারবাদী ছিলেন। কৃষক, শ্রমিক, জনতা লীগের আবদুল কাদের সিদ্দিকী সাত দফা সমর্থনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে কাদের বলেন, করুক, আরও বাড়ুক তারা। নেতায় নেতায় ঐক্য হোক, তাতে জনসমর্থন পাবে না।
×