ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দৃশ্যমান পদ্মা সেতু শেখ হাসিনার একক সাহসী নেতৃত্বের ফসল ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৪ অক্টোবর ২০১৮

দৃশ্যমান পদ্মা সেতু শেখ হাসিনার একক সাহসী নেতৃত্বের ফসল ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে যেসব সফলতা, অবদান ও কৃতিত্ব সবকিছু বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। দৃশ্যমান পদ্মা সেতু শেখ হাসিনার একক সাহসী নেতৃত্বের সোনালি ফসল। এখানে অন্য কারও কোন অবদান নেই। পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ যুক্ত হচ্ছে, যা জনদাবি ছিল। বহু প্রতীক্ষিত সেই রেল সংযোগও রবিবার উদ্বোধন হবে। এটাও একটা নতুন ডাইমেনশন। অধীর আগ্রহে এই দিনের জন্য অপেক্ষা করছি। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজার কাছে প্রধানমন্ত্রীর সুধী সমাবেশের মঞ্চ পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব। মন্ত্রী সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে আপনারা ঝড়, বৃষ্টি, কুয়াশা উপেক্ষা করে এমনকি ঈদের দিনেও আমার পাশে ছিলেন। নিউজ কাভারেজ দিয়েছেন। এজন্য অবশ্যই আপনাদের ধন্যবাদ প্রাপ্য। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নিরাপত্তার কোন ঘাটতি নেই। সতর্কভাবে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। অত্যন্ত সঙ্কটের সময় তিনি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তখন বিশ্বব্যাংক সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করবে না বলে সরে গিয়েছিল। তিনি আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তা বিপদসঙ্কুল। কিন্তু আমি আমার লিডারের দেয়া সেই দায়িত্ব অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করেছি। আমি একা নই, এখানে একটি দল কাজ করেছে। এখানে সচিব, পিডি, সেনাবাহিনীর মূল্যবান অবদান ছিল। ওবায়দুল কাদের বলেন, এমন একটা সময় ছিল যখন হলি আর্টিজান হামলার পর পদ্মা সেতুতেও হামলার ষড়যন্ত্র ছিল। সেনাবাহিনীর উপস্থিতি এক্ষেত্রে কতটা কাজে লেগেছে তা বাস্তবে হাড়ে হাড়ে আমি টের পেয়েছি। অস্বীকার করার কিছু নেই। বিদেশী প্রকৌশলী, পরামর্শকরা চলে যেতে চেয়েছিলেন। এই রকম প্রতিকূল পরিবেশে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাহস জুগিয়েছে। বাস্তবে এই সত্যতা অস্বীকার করার কিছু নেই। অস্বীকার করার কিছু নেই পদ্মা পারের মানুষের অবদান। শিবচর, জাজিরা, লৌহজং, শ্রীনগর উপজেলার জনগণ, জনপ্রতিনিধি সীমাহীন কষ্ট স্বীকার করেছেন। পৈত্রিক সম্পত্তি ছেড়ে দিতে হয়েছে। পৈত্রিক সম্পত্তি ছেড়ে দেয়ার বেদনা অঙ্কুরে বিদ্যমান। সেই ত্যাগ স্বীকার করেছেন এই দুই পারের মানুষ। পদ্মা সেতু নির্মাণ এই পর্যায়ে আসার পেছনে উভয় পারের জনগণের সীমাহীন ত্যাগ ও অবদান রয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ। বিএনপি রাজনীতিতে বিষফোঁড়া- কাদের ॥ স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যারা নীতি নৈতিকতার কথা বলে, গণতন্ত্রের নামে মায়া কান্না করে তারা আজ খুনী-সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তথাকথিত জাতীয় ঐক্য করতে যাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার আসামিদের মতো ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানার ঘটনায় হত্যায় জড়িতদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে বিএনপির নির্ধারিত একটি টিম। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কের সংযোগ সড়কের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বিষফোঁড়া। যাদের রাজনীতির হাতিয়ার হচ্ছে সন্ত্রাস। যারা পলিটিক্স ও ভায়ালেন্সকে একত্রিত করে ফেলেছে। ২১ আগস্ট হত্যা মামলা রায় হওয়ার পর তারা আসলেই ধরা পড়ে গেছে। ওই যে একটি গান আছে ‘ফাঁদে পড়িয়া বগা কান্দে রে..।’ বিএনপির অবস্থাটা এখন সেই রকম। এখন তাদের মুখে বিষ ছাড়া আর কিছুই নেই। সত্যকে আড়াল করার জন্য মুখের বিষ সমানে চালিয়ে যাচ্ছে। এটাই হচ্ছে এই মুহূর্তের বাস্তবতা। মন্ত্রী বলেন, সর্বশেষ তাদের মুখের বিষ এসে পড়ছে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওপর। সেনাপ্রধানের মতো স্পর্শকাতর জায়গায়ও তাদের মুখের বিষ এসে ঝরে পড়ছে। তারা এখানেও হাত দিয়েছে। তাদের চিন্তাবিদরাও সেনাপ্রধানকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি। পরে আবার স্লিপ হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন। এ ধরনের মন্তব্য অত্যন্ত বিপদজনক। সেনাপ্রধান সম্পর্কে না জেনে না শুনে মিথ্যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অসত্য মন্তব্যের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় এর জন্য বিএনপিকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি আতিকুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলীউল হোসেনসহ কাঁচপুর সেতু নির্মাণ কাজে নিয়োজিত জাপানের প্রকৌশলীসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা। মন্ত্রী বলেন, এখন তারা ২৫ ফেব্রুয়ারির পিলখানা হত্যাকা-ের ওপর তারা কথা বলছে, বিষোদাগার করছে। সরকারের সংশ্লিষ্টতা তথাকথিত অভিযোগ তুলছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, কথা বার্তা সাবধান হয়ে বলা উচিত। শালিনতার সীমা রেখা অতিক্রম করা উচিত নয়। দায়িত্বশীলতার অতিরিক্ত কিছু বলা কোন দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতার করা উঠিত নয়। আপনি কিন্তু বেসামাল বক্তব্য দিতে শুরু করেছেন। বিএনপির নেতৃবৃন্দরা ২১ আগস্ট হত্যার মামলা রায়ের পর বেপরোয়া চালকের চাইতেও আরও বেপরোয়া হয়ে গেছে। ২৫ ফেব্রুয়ারিকে টেনে আনছে। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই কে দায়ী ? আদালতের রায়ে সেটা প্রমাণ হয়ে গেছে। বিচারকার্য সম্পাদিত হয়েছে। এত মামলার বিচার হয়েছে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। আজকে সেখানেও বিএনপির মুখের বিষ ঝরে পড়ছে। তারা বলছে সরকার নাকি দায়ী। মন্ত্রী বলেন, ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব, আমি আপনার কাছে জানতে চাই ? ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টার পর আপনার নেত্রী (বেগম খালেদা জিয়া) বাড়ি ছেড়ে কোথায় পালিয়ে গিয়েছিলেন ? ২৪ ঘণ্টায় হারানো বিজ্ঞপ্তির পর্যায়ে তিনি ছিলেন কেন ? ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার আসামিদের মতো ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানার ঘটনায় হত্যায় জড়িতদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে বিএনপির নির্ধারিত একটি টিম। এটা আমার সাজানো কথা নয়। যিনি সকাল ১১টার আগে ঘুম থেকে উঠেন না, সকাল সাড়ে ৭টায় তিনি পালিয়ে গেলেন, নিখোঁজ হয়ে গেলেন। এ প্রশ্নের জবাব চাই। কেঁচো খুড়তে চান, কেঁচো খুড়তে গেলে বিষধর সাপ বেড়িয়ে আসবে। সেই সাপ আপনাদেরই দংশন করবে।
×