ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মেসি জাদুতে বার্সিলোনার টানা দ্বিতীয় জয়

প্রকাশিত: ০৭:০২, ৫ অক্টোবর ২০১৮

মেসি জাদুতে বার্সিলোনার টানা দ্বিতীয় জয়

জাহিদুল আলম জয় ॥ লিওনেল মেসির জাদুকরী পারফর্মেন্সে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে বার্সিলোনা। বুধবার রাতে ‘বি’ গ্রুপের এ্যাওয়ে ম্যাচে স্বাগতিক ইংলিশ ক্লাব টটেনহ্যাম হটস্পারকে ৪-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে কাতালানরা। লন্ডনের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে বার্সার হয়ে জোড়া গোল করেন অধিনায়ক মেসি। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের প্রথম ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছিলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। লন্ডনে বার্সার হয়ে মেসি ছাড়াও একটি করে গোল করেন ফিলিপ কুটিনহো ও ইভান রাকিটিচ। গ্রুপের আরেক ম্যাচে ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলানও টানা দুই জয় পেয়েছে। ডাচ ক্লাব আইন্দহোভেনকে ২-১ গোলে হারিয়েছে তারা। ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচেও টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে স্পেনের এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও জার্মানির বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। এ্যাটলেটিকো ৩-১ গোলে ক্লাব ব্রুগেকে ও ডর্টমুন্ড ৩-০ গোলে হারিয়েছে ফরাসী ক্লাব মোনাকোকে। স্প্যানিশ লা লিগায় শেষ তিনটি ম্যাচে জয়হীন থাকা বার্সিলোনা চাপ নিয়েই লন্ডন এসেছিল। কিন্তু ইংল্যান্ডের জাতীয় স্টেডিয়ামে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের যেন অতীত অভিজ্ঞতাই সহায়তা করেছে। ১৯৯২ ও ২০১১ সালে এই মাঠেই তারা জয় করেছিল ইউরোপিয়ান কাপ। সেই স্মৃতিকে পুঁজি করে এই ভেন্যুতে দারুণ এক জয় তুলে নিয়েছে আর্নেস্টো ভালভার্ডের দল। হুগো লোরিসের মতো অভিজ্ঞ গোলরক্ষককে নিয়েও টটেনহ্যাম শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি। মূলত মাত্র ৯২ সেকেন্ডের মধ্যে ফিলিপ কুটিনহোর গোলে বার্সিলোনার এগিয়ে যাওয়া স্পার্সদের পুরো ম্যাচে আর ফিরতে দেয়নি। ২০০৫ সালের পর চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এটাই বার্সিলোনার সবচেয়ে দ্রুততম গোল। ২৮ মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডার ইভান রাকিটিচের দুর্দান্ত হাফভলিতে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। নাটকীয় দ্বিতীয়ার্ধে হ্যারি কেন টটেনহ্যামের হয়ে এক গোল পরিশোধ করলেও মেসির কল্যাণে তৃতীয় গোলের দেখা পায় বার্সা। এরিক লামেলার ডিফ্লেকটেড শট টটেনহ্যামকে আবারও লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনলেও ম্যাচের শেষ মিনিটে মেসির দ্বিতীয় গোলে গ্রুপপর্বে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নেয় বার্সিলোনা। অন্যদিকে টানা দুই ম্যাচ হেরে তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কায় পড়েছে টটেনহ্যাম। ইন্টার মিলানের বিপক্ষে মৌসুমের প্রথম ম্যাচে ২-১ গোলে পরাজিত হয়েছিল মরিসিও পোচেত্তিনোর দল। আগামী ২৪ অক্টোবর পরবর্তী ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ পিএসভি আইন্দহোভেন। ম্যাচে মাত্র দুই মিনিটের মধ্যে মেসির নৈপুণ্যে বার্সা এগিয়ে যায়। সন হেয়াং-মিনের বাধা পেরিয়ে মেসি জর্ডি আলবার দিকে দারুণভাবে বল এগিয়ে দেন। টটেনহ্যাম ডিফেন্ডার কিয়েরান ট্রিপারের পাশ কাটিয়ে আলবা কুটিনহোর দিকে বল বাড়িয়ে দিলে সাবেক এই লিভারপুল ফরোয়ার্ড জোরালো শটে বার্সিলোনাকে এগিয়ে দেন। ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক লোরিসের এটি ছিল আগস্টের পর প্রথম ম্যাচ। থাইয়ের ইনজুরির কারণে তিনি এতদিন বিশ্রামে ছিলেন। ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন, ডেলে আলি, মোসা ডেম্বেলের মতো তারকারার ইনজুরির কারণে খেলতে না পারায় টটেনহ্যাম প্রথম থেকেই ব্যাকফুটে ছিল। ২৫ মিনিটে কেনের একটি শট আটকাতে খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগানকে। তবে ২৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে কোন ভুল করেননি রাকিটিচ। মেসির বাড়ানোর পাস কুটিনহো টাচলাইনের পিছন থেকে নিয়ে রাকিটিচকে এগিয়ে দেন। জোরারো হাফ ভলিতে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এই ক্রোয়েট তারকা। বিরতির পর শুরুতে মেসি টটেনহ্যামকে নিয়ে যেন ছেলেখেলা শুরু করে। তারজন্য গোল করা সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় মেসির একটি শট গোলপোস্টে লেগে ফেরত আসে। ৫২ মিনিটে অবশ্য কেন টটেনহ্যামকে কিছুটা জীবন ফিরিয়ে দেন। ক্যারিয়ারে ১২টি চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ম্যাচে এই নিয়ে দশম গোল করলেন কেন। ৫৬ মিনিটে আলবার পাস থেকে মেসি লোরিসকে পরাস্ত করেন। এরপরও ম্যাচ ছেড়ে দেয়নি স্বাগিতকরা। ৬৬ মিনিটে লামেলার গোলে আবারও স্বপ্ন দেখতে শুরু করে টটেনহ্যাম। কিন্তু ৯০ মিনিটে আলবার ক্রস থেকে মেসি নিজের দ্বিতীয় গোল করলে বার্সার জয় নিশ্চিত হয়।
×