ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু কাল

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৪ অক্টোবর ২০১৮

গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু কাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গঙ্গা ও যমুনার একই শ্রোতধারার মতো বহমান দুই বাংলার সংস্কৃতি। প্রকৃতির সবুজ শিল্পময়তা, বাউলের সুরগাঁথা, আবহমান বাংলার ঐতিহ্যপূর্ণ দুই বাংলার মানুষে মানুষে মেলবন্ধন সৃষ্টিতে রেখে চলেছে এক ঐতিহাসিক ভূমিকা। মানবতাবিরোধী কোন অপশক্তি রুদ্ধ করতে পারেনি সম্পৃতির এ অগ্রযাত্রা। সংস্কৃতির এ মহাশক্তিকে আরেকবার জনসম্মুখে উপস্থাপনের লক্ষ্যে আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৮’। ভারত ও বাংলাদেশের অভিন্ন সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা বিনিময় ও মৈত্রী বন্ধন দৃঢ়তার লক্ষ্যে সপ্তমবারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করেছে গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব পর্ষদ। এ উপলক্ষে রাজধানীর সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন হয় বুধবার দুপুরে। এতে উপস্থিত ছিলেন উৎসব পর্ষদের আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছ, নাট্যজন মান্নান হিরা, অনন্ত হীরা, আহমেদ গিয়াস, ঝুনা চৌধুরী, মীর জাহিদ, মার্কেন্টাইল ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ আবদুল হামিদ সোহাগ, গণসঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীর, নৃত্যশিল্পী মাহফুজুর রহমান, আবৃত্তিশিল্পী শিরীন ইসলাম প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে পর্ষদের সদস্য সচিব আকতারুজ্জামান তার লিখিত বক্তব্যে উৎসবের বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে আগামীকাল শুক্রবার বিকেল ৫টায় ১১ দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন নাট্যজন বিভাষ চক্রবর্তী ও মামুনুর রশীদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সম্মানিত অতিথি থাকবেন নাট্যসারথী আতাউর রহমান, নাট্যজন নাসির উদ্দিন ইউসুফ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। সভাপতিত্ব করবেন উৎসব পর্ষদের আহ্বায়ক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম কুদ্দুছ। স্বাগত বক্তব্য দেবেন পর্ষদের সদস্য সচিব আকতারুজ্জামান। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তন, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল ও স্টুডিও থিয়েটার হলে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে নাটক। এতে বাংলাদেশের ২৬টি ও ভারতের ৪টি নাট্যদল নাটক মঞ্চায়ন করবে। উৎসব প্রাঙ্গণের উন্মুক্ত মঞ্চে প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়ে চলবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত। এতে অংশ নেবে ৯টি পথনাটক দল, ৯টি শিশু, ২টি মাইম আর্ট, ১৭টি আবৃত্তি, ১৬টি সঙ্গীত ও ১০টি নৃত্য সংগঠন। এছাড়াও রয়েছে যাত্রাপালা পাঠ, একক আবৃত্তি ও সঙ্গীত পরিবেশনা। উদ্বোধনী সন্ধ্যায় প্রধান মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হবে ভারতের ড্যান্সার গিল্ডের নৃত্যনাট্য ‘তোমারই মাটির কন্যা’ এবং স্টুডিও থিয়েটার হলে চন্দ্রকলা থিয়েটারের নাটক ‘তন্ত্রমন্ত্র’। উদ্বোধনী দিন উন্মুক্ত মঞ্চে সাংস্কৃতিক পর্বে অংশগ্রহণকারী সংগঠন হচ্ছে বহ্নিশিখা, ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী, নটরাজ, কথা আবৃত্তি চর্চাকেন্দ্র, ঢাকা স্বরকল্প, তাল কালচারাল একাডেমি ও গতি থিয়েটার। একাডেমির সেমিনার কক্ষে ১২ অক্টোবর সকাল ১০টায় ‘গঙ্গা-যমুনা পাড়ের সংস্কৃতি ও একটি অনুসন্ধান শীর্ষক সেমিনার হবে। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন নাট্যজন অনন্ত হিরা। প্রধান অতিথি থাকবেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। বিশেষ অতিথি থাকবেন প্রকাশ ভট্টাচার্য। সভাপতিত্ব করবেন গোলাম কুদ্দুছ। একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠিত হবে উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিসচিব নাসির আহমেদ। বিশেষ অতিথি থাকবেন নাট্যজন কেরামত মওলা, গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, নাট্যজন মান্নান হিরা, নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকামউল্লাহ। সভাপতিত্ব করবেন গোলাম কুদ্দুছ। উৎসব সহযোগিতায় রয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি, ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক। সংবাদ সম্মেলনে উৎসব আহ্বায়ক সংস্কৃতিজন গোলাম কুদ্দুছ বলেন, নাট্যোৎসব দিয়ে শুরু হয়ে এখন রূপলাভ করেছে সাংস্কৃতিক উৎসবে। আমাদের ইচ্ছা ভবিষ্যতে এর কলেবর আরও বড় হবে। এটা সকল ধারার সংস্কৃতির মিলিত উদ্যোগে পরিণত করার ইচ্ছা আছে। এখানে ভবিষ্যতে চারুশিল্প ও চলচ্চিত্রকেও যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, সংস্কৃতির বড় জাগরণ এই উৎসব। দেশের মানুষের মধ্যে অসাম্প্রদায়িক, মানবিক বোধ এ উৎসবের মধ্য দিয়ে জাগাতে চাই আমরা। সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে আমাদের অবস্থান জানিয়ে দিতে চাই। সকল ধারার সংস্কৃতি কর্মীদের মেলবন্ধন তৈরিতেই এ উৎসব।
×