ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভয়াবহ মাদক ‘খাত’ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৪ অক্টোবর ২০১৮

ভয়াবহ মাদক ‘খাত’ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্রীন টি-এর নামে আমদানি হওয়া মাদকের সর্বশেষ উপাদান খাত নিষিদ্ধ ঘোষণার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এ ঘোষণা দেবে। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সংস্থার মহাপরিচালক মোঃ জামাল উদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, খাত বা এনপিএস একটি ভয়াবহ মাদক। বিশ্বব্যাপী মাদকের তালিকায় এনপিএস বা খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশে এটা নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই ‘খাত’ নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে সরকার। ইতোমধ্যেই এনপিএস আমদানি রফতানিতে ২০-২২ জনের একটি চেইন আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। মাদকের গডফাদারদের আইনের আওতায় না আনার সীমাবদ্ধতা কোথায়? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, নতুন আইনটি পাস হলে আমরা খুব সহজেই গডফাদার, রাঘববোয়ালদের আইনের আওতায় আনতে পারব। অধিদফতরের কোন মাদক ব্যবসায়ীর পক্ষে এক পার্সেন্টও দুর্বলতা নেই। মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন, আমরা সেটি বাস্তবায়নেই কাজ করব। তাৎক্ষণিক বিচারকার্য পরিচালনার জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ইতোমধ্যে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পেয়েছে জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, দুজন ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এখনও কাজ শুরু না করলেও শীঘ্রই মাঠে নামবেন তারা। তাদের মাধ্যমে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হবে এবং এটা অধিদফতরের একটা বড় পরিবর্তন। বৈধতার লাইসেন্স থাকার পরও কেন বারগুলোতে হানা দেয়া হচ্ছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, বারের লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম শর্ত হচ্ছে বারটির মদ সংগ্রহের স্থান ও কি পরিমাণ সংগ্রহ করছে এগুলো নিয়মিত জানাতে হবে। এ ধরনের অভিযানকে মনিটরিং বলা যেতে পারে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ এর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আইনটি তৈরির ক্ষেত্রে যেসব মাদকের তালিকা দিয়েছিলাম, আইনে সেগুলোই থাকছে। কোনটি পরিবর্তন করা হয়নি। এ ছাড়াও একটি আইনের ধারা যুক্ত হচ্ছে যেখানে অধিদফতরকে যে কোনো মাদক নিষিদ্ধ ঘোষণার ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে। তবে আইনে অধিদফতরের কর্মকর্তাদের অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে কোন কিছু উল্লেখ করা হয়নি। যদি সরকার মনে করে অধিদফতরের কর্মকর্তাদের অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন তাহলে যে কোন সময় আমাদের সেই ক্ষমতা দেয়া হবে। চলতি মাসের ৪ থেকে ৬ তারিখ পর্যন্ত আগারগাঁওয়ে উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণ করবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। সেখানে মিলবে অধিদফতরের সব সেবা। এ বিষয়ে জামাল উদ্দীন বলেন, মেলা উপলক্ষে প্রতি জেলায় মাদকবিরোধী প্রচার চলবে। এছাড়াও ঢাকার স্টলে মাদক নিরাময়ের পরামর্শ, লাইসেন্সের আবেদনের মতো সেবা দেয়া হবে। যে কেউ স্টল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য ও সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। মাদক নিয়ন্ত্রণে অধিদফতরের সাফল্য তুলে ধরে মহাপরিচালক বলেন, অধিদফতর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত মোট ৩০ হাজার ৮৯৭টি অভিযান চালিয়ে ৯ হাজার ৯৩৪ মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ৮৪০৬টি মামলা করেছে। এছাড়াও গত ২০ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পরিচালিত বিশেষ সাঁড়াশি অভিযানে সারাদেশে ৬০৩ জন আসামির বিরুদ্ধে ৫৫৯টি মামলা দেয় অধিদফতর। এ সময় ৫৯ হাজার ৫০৬ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। ডিজি বলেন, কক্সবাজারে পরিচালিত টাস্কফোর্সের অভিযানে তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়িতে হানা দেয়া হয়েছে। এ অভিযানে মাদক ব্যবসায়ীদের ভিত নড়বড়ে হয়েছে। সামনে সেটা আরও নির্মূল হয়ে যাবে।
×