ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মিঠামইনে সুধী সমাবেশ

এলাকার উন্নয়ন করবে এমন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করুন ॥ রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

এলাকার উন্নয়ন করবে এমন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করুন ॥ রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ২৬ সেপ্টেম্বর ॥ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ কখনও কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করেননি উল্লেখ করে বলেছেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসলে দেশ ও এলাকার উন্নয়ন হবে এমন দলকে নির্বাচিত করুন। আর যারা কেবল নিজের লাভের চিন্তা করে এমন ব্যক্তিকে ভোট দেবেন না। বরং যিনি সৎ চিন্তা করে, দেশ ও এলাকার উন্নয়ন করবে জনগণকে সতর্কতা অবলম্বন করে এমন যোগ্য মানুষকে বেছে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পরামর্শ দেন। তিনি বুধবার বিকেলে নিজ জন্মভূমি হাওড় অধ্যুষিত মিঠামইনে মুক্তিযোদ্ধা আঃ হক কলেজ মাঠে আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি হাওড়ের ভৌগলিক অবস্থানের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আপনাদের ভোটে আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। এ সময়ের মধ্যে ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নীতকরণসহ সার্বিক উন্নয়নে কাজ করেছি। এখনও এ অঞ্চলের জীবনমান উন্নয়ন বাস্তবায়নের অনেক কাজ চলছে। কখনও হাওড়ের শিকড়ের কথা ভুলেনি বরং জীবনভর এ হাওড় ও এলাকার মানুষদের নিয়ে চিন্তা করেছি। এ জন্য এখন শুধু দেশে নয় বিদেশেও এ হাওড়কে নতুনভাবে পরিচিত করিয়েছি। এ সময় আয়োজিত সভাটি লোকজনের আগমনে জনসভায় রূপ নেয়। নাগরিক কমিটি আয়োজিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আবদুস শাহিদ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক ও স্পেশাল পিপি এম. এ আফজল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বৈষ্ণব, সাবেক সভাপতি রইছ উদ্দিন আহমেদ, সদর ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শরীফ কামাল প্রমুখ। এ সময় বিভিন্ন সামরিক, বেসামরিক উধর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় সুধী সমাবেশে তাকে দেয়া গণসংবর্ধনার জবাবে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, হাওড়ের প্রতি উপজেলার ইউনিয়নের সঙ্গে জেলা শহরের যোগাযোগ ফ্লাইওভারের মাধ্যমে করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাছাড়া প্রতিটি হাওড়েই কৃষকের সুবিধার জন্য সাবমার্সেবল রাস্তা করা হচ্ছে। এছাড়াও হাওড়ে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাওড়ের প্রধান ফসল ধান। এক সময়ে হাওড়ে ধান কাটার জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার শ্রমিক আসত। এখন মানুষের জীবনমানের উন্নতি হওয়ায় তারা আর সেভাবে আসে না। তবে দেশে ধান কাটার প্রযুক্তি এসেছে। এ ক্ষেত্রে হাওড়ের একটা সমস্যা হলো- ধান কাটার সময় জমিতে পানি থাকে। এখন এমন প্রযুক্তিও তৈরি হয়েছে যে, জমিতে কাদা থাকলেও ধান কাটা যায়। এছাড়া ড্রাই মেশিনে ধান শুকানোও যায়। এসব প্রযুক্তিগুলো আমাদের-আপনাদের কাজে লাগাতে হবে। এর আগে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ইটনা থেকে ছিলনি পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করেন। পরে হেলিকপ্টারযোগে তিনি মিঠামইন পৌঁছলে সেখানে তাকে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে তিনি গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন। বিকেলে রাষ্ট্রপতি উপজেলাস্থ মুক্তিযোদ্ধা আঃ হক সরকারী ডিগ্রী কলেজ মাঠে সুধী সমাবেশে যোগদান করাসহ চারটি স্থাপনার উদ্বোধন করেন। রাষ্ট্রপতি বক্তব্যে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মিঠামইনে তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে, তিনি এসবের স্মৃতিচারণ করেন। এ সময় শিক্ষা জীবন ও রাজনীতিসহ নানা বিষয়ের স্মৃতি তুলে ধরেন। পরে তিনি সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অডিটরিয়ামে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ইটনা উপজেলা কমান্ড অফিস উদ্বোধন ॥ এদিকে বাসস জানায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বুধবার জেলার ইটনা উপজেলায় দুটি বিদ্যালয় পরিদর্শন এবং ইটনা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড অফিস উদ্বোধন করেছেন। রাষ্ট্রপতি ইটনা জিরো পয়েন্টের উন্নয়ন কার্যক্রম এবং কিশোরগঞ্জের তিন উপজেলার মধ্যে সংযোগকারী নির্মাণাধীন ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম মহাসড়ক পরিদর্শন করেন। ইটনা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড অফিস উদ্বোধনকালে তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। রাষ্ট্রপতি ইটনা উপজেলা সদরে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইটনা উপজেলা পরিষদ বিদ্যাপীঠ এবং ইটনা বালিকা উচ্চবিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
×