ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংঘাত সৃষ্টির জন্য বিএনপি সমাবেশের তারিখ বাড়িয়েছে ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সংঘাত সৃষ্টির জন্য বিএনপি সমাবেশের তারিখ বাড়িয়েছে ॥ নাসিম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংঘাত সৃষ্টির জন্যই বিএনপি তাদের পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশের তারিখ দু’দিন বাড়িয়ে শনিবার করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, গত কয়েক দিন আগে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপি সংঘাত সৃষ্টির জন্যই তাদের পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশের তারিখ দুইদিন বাড়িয়ে শনিবার করেছে। এটা কার উস্কানিতে হয়েছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের দ্বিতীয় সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ নাসিম এই কথা বলেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ এহতেশামুল হক দুলাল, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান এবং বেসরকারী ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। খেলার মাঠে দুইটি দল থাকে। খেলা পরিচালনার জন্য যেমন রেফারি থাকে তেমননি নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালন করবে। মানহীন ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়া হবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যেসব ক্লিনিকের মান নেই, ডাক্তার নেই, নার্স নেই। সেগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। ইতোমধ্যে এসব ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মানহীন এসব ক্লিনিকের কারণে দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের বদনাম হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দেশের নামিদামী হাসপাতালে মৃতদেহ আটকে রেখে বাণিজ্য হচ্ছে। এসব হাসপাতালের আইসিইউতে রোগী মারা যাওয়ার পরও তার মৃতদেহ আটকে রেখে টাকা কামাচ্ছেন। দুই একটি হাসপাতালে আমি নিজে ফোন করে মৃতদেহ ছাড়িয়েছি। সাভারের একটি হাসপাতালে মৃতদেহ আটকে রাখা হয়েছিল। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের মালিকদের বিভিন্ন দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, এবার আমারও কিছু দাবি আছে, সেগুলো আপনাদের পূরণ করতে হবে। আপনাদের সেবার মান বাড়াতে হবে। তা না হলে সভাপতি-সেক্রেটারিকে নিয়ে ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়া হবে। অনলাইন রেজিস্ট্রেশনে সময় লাগবে। এজন্য তিনি আরও সময় বৃদ্ধি করা হবে বলে ঘোষণা দেন। মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা অত্যন্ত স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করা হচ্ছে। প্রতিটি পদক্ষেপে দক্ষ লোকবল রাখা হয়েছে যাতে কোন ধরনের কারচুপি না হয়। রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, মায়ের মমতা ও বোনের স্নেহ দিয়ে এ দেশে ১০ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে। অথচ ইউরোপের অনেক ধনী দেশ এক লাখ শরণার্থী গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। বিশেষ প্রতিনিধি জানান, আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি সংঘাত বাধাতে চায়। আমরা শান্তি চাই, নির্বাচন চাই। আমরা সংঘাত বা সহিংসতা চাই না। তবে কেউ সংঘাত করতে চাইলে তার পরিণাম ভাল হবে না। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ বাস্তুহারা লীগের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০ তলা ভবনে বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন উপলক্ষে অয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ২৯ সেপ্টেম্বর ১৪ দলের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী। আর বিএনপির সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কর্মসূচী ছিল ২৭ সেপ্টেম্বর। তারা (বিএনপি) কারও সঙ্গে কোন কথা না বলেই তাদের কর্মসূচীর সময় পরিবর্তন করেছে। তারা পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করতে চাচ্ছে। সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সংবিধান অনুযায়ী এ বছরের ডিসেম্বর মাসে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। জনগণ তাদের পছন্দের দলকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। কিন্তু নির্বাচন এলেই বিএনপি জামায়াত নির্বাচন বানচালের জন্য চক্রান্ত শুরু করে। তারা সংবিধান ও আইন কিছুই মানে না। তারা আবার জনবিচ্ছিন্ন নেতাদের নিয়ে ঘোট পাকিয়েছে। তারা (বিএনপি) আবার শান্তিপূর্ণ দেশকে অশান্ত করতে চায়, নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়। এ লক্ষ্যে তারা চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। কিন্তু বার বার ঘুঘুকে আর ধান খেতে দেয়া হবে না। ১৪ দলীয় জোটের এই কেন্দ্রীয় মুখপাত্র বলেন, জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে রয়েছে। তাই পৃথিবীর এমন কোন শক্তি নির্বাচনকে ঠেকাতে পারবে না। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে নাসিম বলেন, আপনারা আগামী ২৯ নবেম্বর মহানগর নাট্যমঞ্চের ১৪ দলের সভায় উপস্থিত থাকবেন। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে যারা আন্দোলন করতে পারেননি, আগামী এক মাসেও তারা আন্দোলন করতে পারবে না। অক্টোবর মাসে আমরা সারাদেশে জেলা ও উপজেলায় সভা-সমাবেশ করব। শুধু রাজধানী নয় সারাদেশে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের দখলে রাখব।
×