ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুত বাণিজ্যে ছাড় দেয়ার প্রতিশ্রুতি ভারতের

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুত বাণিজ্যে ছাড় দেয়ার প্রতিশ্রুতি ভারতের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্রস বর্ডার ইলেক্ট্রিসিটি ট্রেড বা আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুত বাণিজ্যে ভারত ছাড় দেয়ার কথা জানিয়েছে। একইসঙ্গে বিদ্যুত বিক্রির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে কর অবকাশের সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি। সোমবার বিকেলে সিলেটে দু’দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার দু’দেশের বিদ্যুত সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতের পক্ষে ওয়ার্কিং গ্রুপে দেশটির বিদ্যুত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মিজ ভারতী এবং বাংলাদেশের পক্ষে বিদ্যুত বিভাগের যুগ্মসচিব (উন্নয়ন) ফয়জুল আমিন নেতৃত্ব দেন। বৈঠক সূত্র ভারতীয় কঠোর নীতি আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সব থেকে বড় বাধা ছিল। দক্ষিণ এশিয়াতে বিদ্যুত বাণিজ্য সম্প্রসারণ হওয়ার পথ উন্মুক্ত হলে ভারত ২০১৪ সালের শেষের দিকে এ সংক্রান্ত একটি নীতি প্রণয়ন করে। ওই নীতিতে বলা হয়, প্রতিবেশী দেশগুলো ভারতের ভূখ- ব্যবহার করে বিদ্যুত নিতে গেলে বিদ্যুত কেন্দ্রে ভারতের সরকারী বা বেসরকারী কোন কোম্পানির অংশীদারিত্ব থাকতে হবে। একইসঙ্গে ভারতের কোন ট্রেডিং কোম্পানির মাধ্যমে সেই বিদ্যুত ক্রয় বিক্রয় করতে হবে। এ নিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ভারতকে নীতি পরিবর্তন করার আহ্বান জানিয়ে আসছিল। ভারতের নীতির কারণে নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে জলবিদ্যুত কেন্দ্র দ্বিপাক্ষিকভাবে নির্মাণ করতে পারছে না বাংলাদেশ। সোমবারের বৈঠকে বিষয়টি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হলে ভারতের প্রতিনিধিরা জানায়, এ সংক্রান্ত আগের নীতিটি পরিবর্তন করা হচ্ছে। নতুন নীতিতে দ্বিপাক্ষিক নীতি পরিবর্তন করে ত্রিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক নীতি করছে তারা। এ সংক্রান্ত নীতির খসড়া করা হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করেই নীতিটি চূড়ান্ত করা হবে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে। এছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশে বিদ্যুত বিক্রির ওপর কর প্রত্যাহারের বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। এক্ষেত্রেও ভারত সহনশীল মনোভাব দেখিয়েছে। প্রথম ধাপে বিদ্যুত আমদানির সময় কর না থাকলেও বাংলাদেশ বিদ্যুত আমদানি বৃদ্ধি করলে ভারত করারোপ করে। বাংলাদেশ এ বিষয়ে বিরোধিতা করে। তবে ভারত এর আগে বিষয়টি বিদ্যুত বিভাগের একার পক্ষে করা সম্ভব নয় বলে এড়িয়ে যায়। আগের বৈঠকে তারা বিষয়টি ভারতের রাজস্ব বিভাগকে জানাবে বলে জানিয়েছিল। সোমবারের আলোচনায় ভারতের প্রতিনিধি দল জানিয়েছে কর প্রত্যাহারের বিষয়ে তাদের সরকার ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে বিদ্যুত আমদানিতে কর না থাকে বিষয়টি তারা বিবেচনা করছে। জানতে চাইলে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রধান যুগ্মসচিব (উন্নয়ন) ফয়জুল আমিন সন্ধ্যায় জানান, তারা বলছে আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনবে। এ সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিও করেছে। আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেই তা চূড়ান্ত করা হবে। তবে এখনও আমরা ওই নীতি দেখিনি। নীতিটি না দেখে আমরা কিছু বলতে পারছি না। বিদ্যুত আমদানিতে কর প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা এ বিষয়েও আমাদের আশ^াস দিয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য এখনও আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। এদিকে মঙ্গলবার ভারতের বিদ্যুত সচিব অজিত কুমার বালা এবং বাংলাদেশের বিদ্যুত সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এর মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। দুই দেশের যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত হবে।
×