ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

পরিকল্পনা না মানলে কোন চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়তে হবে ॥ মে

নো ডিল ব্রেক্সিটের হুঁশিয়ারি

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নো ডিল ব্রেক্সিটের হুঁশিয়ারি

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে বলেছেন, আমি যে ব্রেক্সিট পরিকল্পনা দিয়েছি সেটি গৃহীত না হওয়ার অর্থ হবে নো ডিল ব্রেক্সিট। কোন চুক্তি না করেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করা। এদিকে ব্রেক্সিট ইস্যুটি নিয়ে টেরেসা মে যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে তাকে সঠিক বলে মনে করেন না প্রতি দশ জনে আট জন ব্রিটেন। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও বিবিসি। টেরেসা মে দলের বিদ্রোহীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, তার দেয়া ব্রেক্সিট ডিল মেনে না নিলে শেষ পর্যন্ত কোন চুক্তি ছাড়াই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়তে হতে পারে। আগামী বছর ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্য ইইউ ছাড়বে। তবে ইইউর সঙ্গে একটি পূর্ণাঙ্গ হবে কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা হুমকি দিয়ে রেখেছেন তারা মে’কে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দেবেন না। এই পটভূমিতে মে বিবিসি টেলিভিশনকে বলেছেন, আমার ব্রেক্সিট ডিল না মানলে শেষ পর্যন্ত নো ডিল ব্রেক্সিট হবে। উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং আইরিশ রিপাবলিকের সঙ্গে ব্রিটেনের সীমান্তের প্রকৃতি কি রকম হবে সেটা ব্রেক্সিট চুক্তির ভিত্তিতেই ঠিক হওয়ার কথা। ইইউর প্রধান আলোচক মাইকেল বার্নিয়ার সীমান্তে চেকিং সীমিত করার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার বিষয় নতুন একটি প্রটোকলের ভাষা ঠিক করছেন বলে টাইমস পত্রিকা জানিয়েছে। ইইউ পরিকল্পনার আওতায় পণ্য সামগ্রী বারকোডের মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে। এছাড়া ‘ট্রাস্টেড ট্রেডার স্কিমের আওতায় নিবন্ধিত কোম্পানিগুলো কেবল শিপিং কন্টেনার আনা নেয়ার দায়িত্ব পালন করবে। ব্রিটেনের সঙ্গে ব্রেক্সিট নিয়ে ইইউর চুক্তির খসড়া তৈরির কাজে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। টাইমসের সূত্র অনুযায়ী এ মাসের ৩০ তারিখ কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে আলোচনার পর চুক্তির খসড়া ইউরোপীয় সরকারগুলোর কাছে বিলি করা হবে। এদিকে মে বিবিসিকে বলেছেন, তিনি বলেন, ‘ইইউর সঙ্গে কিভাবে আমরা একটি ভাল চুক্তি করতে পারি, যা যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষা করবে, সেদিকে আমাদের সবার দৃষ্টি দেয়া উচিত। মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন জনসন। জনসন মনে করেন, মে যে পরিকল্পসাটি উপস্থাপন করেছেন তাতে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ইইউর সঙ্গে বাণিজ্য ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ, ইইউ বিরোধী কনজারভেটিভ নেতা জ্যাক রিজ মগ, পরিবেশমন্ত্রী মাইকেল গোভ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট অবশ্য মে’র পক্ষে আছেন। টেরেসা মে সরকার ব্রেক্সিট ইস্যুতে যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে তাকে সঠিক বলে মনে করেন না প্রতি দশ জনে আট জন ব্রিটেনবাসী, বিবিসি রেডিও ফাইভ লাইভের জন্য করা কমরেস জরিপ থেকে এটি জানা গেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী এক-তৃতীয়াংশ মনে করে ইইউ থেকে আলাদা হওয়ার পর আগামী পাঁচ বছর দেশের অবস্থা ভাল থাকবে। অর্ধেকের মতো উত্তরদাতা মনে করে ব্রেক্সিট দেশের জন্য ভাল হবে না। দশ জনে কেবল চারজন ব্রেক্সিটকে ইতিবাচক মনে করে। ৭৯ শতাংশ মনে করে টেরেসা মে যেভাবে ব্রেক্সিট নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন তা যথাযথ নয়। জরিপের ফল মে’র জন্য হতে পারে আরেকটি ধাক্কা, কারণ তিনি এই ইস্যুতে নিজের দলের মধ্যে প্রচ- চাপের মধ্যে আছেন। মে ইতোমধ্যেই বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নেতৃত্ব নিয়ে খবরে তিনি কিছুটা ‘বিরক্ত’।
×