ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

১৮ বছরের আগে বিয়ে দিয়ে মেয়েদের ভবিষ্যত নষ্ট করবেন না ॥ আইনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

১৮ বছরের আগে বিয়ে দিয়ে মেয়েদের ভবিষ্যত নষ্ট করবেন না ॥ আইনমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মেয়েদের ন্যূনতম স্নাতক পর্যন্ত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনারা ১৮ বছরের আগে বিয়ে দিয়ে মেয়েদের ভবিষ্যত নষ্ট করবেন না। এ সময় ১৮ বছরের আগে মেয়েদের বিয়ে দেয়া বা বিয়ে করা আইনত দ-নীয় অপরাধ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। শনিবার সকালে ঢাকার মিরপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিশ্বাস করে যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া সুশিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তাই সরকার ভিশন-২০২১ এবং ভিশন ২০৪১-কে সামনে রেখে সুশিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাকে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছে। এ জন্য সরকার বাস্তবমুখী বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের বছর শুরুর দিনেই পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, আধুনিক যুগোপযোগী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে সিলেবাস প্রণয়ন, ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান, শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, কোচিং বাণিজ্য বন্ধে নীতিমালা প্রণয়ন, কারিগরি শিক্ষার প্রসার ও মাদ্রাসা শিক্ষা আধুনিকায়নসহ সরকার নানা কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে সাফল্যের ধারা হয়েছে অবারিত। আইনমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বর্তমান সরকার বিভিন্ন ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে সরকারী, বেসরকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ইতোমধ্যে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় আধুনিক ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। মোবাইল ব্যাংকিং হচ্ছে এর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। মূলত মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি চমৎকার সুযোগ। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বেতন ও ফি প্রদান, গ্যাস-বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ, টাকা জমা ও উত্তোলন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সম্ভব। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক দেশে প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে। সত্যিকার অর্থে আধুনিক ব্যাংকিং সেবা প্রদানের পাশাপাশি সমাজ উন্নয়নে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ভূমিকা প্রশংসনীয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মতো অন্যান্য ব্যাংকও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে। দেশ ও জাতি গঠনে এগিয়ে আসবে। তিনি বলেন, আজকের ছাত্র-ছাত্রীরাই আগামী দিন দেশ পরিচালনা করবে। তারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে। তাই এই তরুণ সমাজের মেধা বিকাশে সঠিক যতœ ও রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সকলের জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা আমাদের জাতীয় কর্তব্য। সরকারের একার পক্ষে এই বিশাল দায়িত্ব পালন করা দুরূহ ব্যাপার। সেজন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তি বিশেষকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে সরকারের হাত আরও বেশি শক্তিশালী হবে এবং ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি অনুকরণীয় রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আইনমন্ত্রী বলেন, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সবসময় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি দিয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক সরকারের এ প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করছে। মেধাবী অথচ আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যাণে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের শিক্ষাবৃত্তি কার্যক্রমের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমি আশা করব- এই কার্যক্রম ব্যাংকটি ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে এবং দেশ ও জাতি গঠনে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ফজলে কবির, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মোঃ শিরিন বক্তৃতা করেন। এ্যাডভোকেট সুরুজ্জামানের মৃত্যুতে আইনমন্ত্রীর শোক ॥ ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক সদস্য এ্যাডভোকেট সরদার মোঃ সুরুজ্জামনের মৃত্যুতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। মন্ত্রী এক শোক বাণীতে এ্যাডভোকেট মোঃ সুরুজ্জামানের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। উল্লেখ, এ্যাডভোকেট সরদার মোঃ সুরুজ্জামান বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি... রাজিউন)। শুক্রবার তার লাশ দাফন করা হয়।
×