ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আগামী নির্বাচন ঘিরে ‘সাইবার যুদ্ধের’ আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  আগামী নির্বাচন ঘিরে  ‘সাইবার যুদ্ধের’ আশঙ্কা

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রচারের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুক এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আসছে সাধারণ নির্বাচনেও ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম একটি বড় প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহৃত হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলো এ বিষয়ে বেশ মনোযোগীও হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম শনিবার যশোরে দলের নেতা-কর্মীদের বলেছেন, আসছে নির্বাচনে সাইবার যুদ্ধ হবে। এমন প্রেক্ষাপটে দলটির কর্মী-সমর্থকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি সক্রিয় হতে পরামর্শ দেন তিনি। খবর বিবিসির। বিবিসি’র রাজনৈতিক বিশ্লেষণে বলা হয়, এইচ টি ইমামকে উদ্ধৃত করে ঢাকার একটি দৈনিক লিখেছে, ‘তারা যদি একটি মিথ্যা লেখে, আপনারা দশটি জবাব লিখুন। আপনারা কেন পিছিয়ে থাকবেন। আগামী নির্বাচন কেন্দ্রিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের লড়াইটা হবে সাঙ্ঘাতিক। তাই আপনাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে তার প্রমাণ মিলছে কয়েক বছর ধরে। ক্ষমতাসীন দল মনে করে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ফেসবুকে অনেক সক্রিয় এবং সরকারবিরোধী নানা ‘অপপ্রচারে’ লিপ্ত। কিন্তু এর বিপরীতে আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকরা ফেসবুকে ততটা সোচ্চার নন বলেই দলের শীর্ষ পর্যায়ে ধারণা। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাইবার ব্রিগেড গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে। তারা বলছে, এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘গুজব ছড়ানো প্রতিহত’ করা। এছাড়া আগামী নির্বাচনের জন্য ‘সরকারের উন্নয়ন’ প্রচার করা। সাইবার যুদ্ধ এবং আগামী নির্বাচন ॥ বাংলাদেশ রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘সাইবার যুদ্ধ’ প্রথমবারের মতো ব্যাপক আকার ধারণ করে ২০১২ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে ঢাকার শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের সময়। এই মঞ্চের আন্দোলনকারীরা যেভাবে অনলাইন ব্লগ এবং সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন তেমনি ফেসবুকসহ ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপকভাবে সক্রিয় হয়ে উঠে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থকরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসিফ নজরুল মনে করেন, আসছে নির্বাচন অনলাইন- বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। বর্তমানে এই মাধ্যম সারা পৃথিবীতে নির্বাচনী প্রচার এবং খবর আদান-প্রদানের জন্য বেশ জনপ্রিয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষক বিএম মইনুল হোসেন বলেন, এবারের নির্বাচন সামনে রেখে ফেসবুকে রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা নিজেদের প্রচার জোরেশোরে শুরু করেছেন। কোন পোস্টে কয়টি লাইক পড়েছে, কতগুলো শেয়ার হচ্ছে- এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে একটি ইমপ্যাক্ট (প্রভাব) তৈরি হয়। তিনি বলেন, ফেসবুক এমন এক মাধ্যম যার সাহায্যে অতি কম সময়ে বহু মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দেয়া যায়। হোসেন বলেন, সাইবার যুদ্ধ বলতে তো আর প্রথাগত যুদ্ধ বোঝায় না। এ যুদ্ধ ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিজেদের প্রচার করা এবং প্রতিপক্ষের ভুল চিহ্নিত করাই এর উদ্দেশ্য। এমন প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুক নিয়ে সরকার বাড়তি সতর্ক হয়ে উঠেছে। মাস খানেক আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হলে ফেসবুকসহ যে কোন কিছু বন্ধ করতে হবে। ফেসবুকে অনেক গ্রুপ এবং পেজ আছে যেখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর কর্মকা-ের সমর্থন করা কিংবা প্রতিপক্ষের সমালোচনা করা হয়। নিজেদের কর্মকা-ের প্রচারের সঙ্গে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নানা প্রচারের বিষয়ও লক্ষণীয় এসব পেজে।
×