ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় অপচিকিৎসায় প্রাণ গেল নৈশ প্রহরীর

প্রকাশিত: ০৬:১১, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বগুড়ায় অপচিকিৎসায় প্রাণ গেল নৈশ প্রহরীর

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ কুসংস্কারের থাবা আর কথিত কবিরাজের জিন ছাড়ানোর নামে অপচিকিৎসায় অসুস্থ ব্যক্তিকে মাটিতে ফেলে তার ওপর নাচানাচি করায় প্রাণ গেল বগুড়ার পল্লীর এক নৈশ প্রহরীর। তার নাম মোফাজ্জল হোসেন মক্কা (৫০)। এই ঘটনা বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ধোড়া গ্রামের। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে কবিরাজসহ দশজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর পুলিশ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গাবতলী উপজেলার ধোড়া পূর্বপাড়া গ্রামের এক মেয়ে শিশু জেমি (১২) জ¦রে আক্রান্ত হয়। তার বাবা বাদশা মিয়া এলাকার চিকিৎসকের দেয়া ওষুধ সেবন করান। মেয়ের জ¦র না সারলে লোকজন কবিরাজের কাছে যেতে বলে। জেমির বাবা মহিষাবানের কবিরাজ নজরুল ইসলাম ভেটুর কাছে যান। কবিরাজ মেয়েকে দেখে বলে জিন ধরেছে। তুলা রাশির কোন জাতকে পেলে এই জিন ছাড়ানো যাবে। এলাকার লোক একজন তুলা রাশির জাতকের খোঁজ দেয়, যিনি গোলাবাড়ি বণিক সমিতির নৈশ প্রহরী মোফাজ্জল হোসেন মক্কা। তিনি হাঁপানি রোগী। বিষয়টি জেনে তিনি মেয়েকে বাঁচানোর জন্য রাজি হন। এরপর কবিরাজ নজরুল ইসলাম ভেটু তার সঙ্গী জয়নাল আবেদীনসহ কয়েকজনকে নিয়ে বুধবার গভীর রাতে মেয়ে জেমিকে সারাতে ধোড়া গ্রামে যায়। এরপর কবিরাজদের জিন ছাড়ানোর তা-ব শুরু হয়। তুলা রাশির জাতক নৈশ প্রহরী মক্কার বুকের ওপর তা-ব নাচ শুরু করলে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে শিশু জেমির পরিবার এবং কবিরাজরা পালিয়ে যায়। রাত একটার দিকে গ্রামের লোকজন মোফাজ্জল হোসেন মক্কাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি মারা যান। এই ঘটনায় নিহত মক্কার ছেলে বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে গাবতলী থানায় দুই কবিরাজসহ দশজনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। পুলিশ সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালক বাদলকে গ্রেফতার করেছে।
×