ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

সাইদ আহমেদের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ‘বাহ্য প্রতীক’

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সাইদ আহমেদের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ‘বাহ্য প্রতীক’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রঙের সঙ্গে অপ্রচলিত উপকরণের সম্মিলনে চিত্রিত হয়েছে অনেক ক্যানভাস। বিচিত্র বর্ণের বিশাল চিত্রপটগুলো উদ্ভাসিত হয়েছে বহুবিধ বিষয়। ছবিগুলো এঁকেছেন তরুণ কাজী শিল্পী সাইদ আহমেদ। সেসব ছবি নিয়ে আলিয়ঁস ফ্রঁসেস দো ঢাকার লা গ্যালারিতে চলছে প্রদর্শনী। শিরোনাম ‘বাহ্য প্রতীক’। অপ্রচলিত উপকরণে আশ্রয়ে চিত্রকর্ম সৃজনে নিমগ্ন শিল্পী সাইদ আহমেদ। চিত্রকর্মের জমিনকে সব সময়ই নতুনতর অর্থে খোদাই করতে চেয়েছেন এই শিল্পী। সেই সূত্রে রপ্ত করেছেন পাট বা চটের ক্যানভাসে বিষয়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠার কৌশল। সত্যের কুহক রচনা না করে, তিনি চিত্রিত অংশকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন চিত্রপটে; যা কিনা চিত্রপটের জমিনকে ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ে বাইরের দিকে। ছবির আঁকার ক্ষেত্রে স্পেস বা পরিসরকে সাধারণত নিরপেক্ষ বিবেচনা করা হয়। কিন্তু এই তরুণ শিল্পীর ইশারায় সেই একই উপাদান সুযোগ সৃষ্টি করেছে ¯œায়বিক হয়ে উঠতে। যদিও একজন শিল্পী হিসেবে আহমেদ অভিব্যক্তিপূর্ণ সম্ভাবনার চূড়ান্ত পর্যায়কে দৃশ্যত এড়িয়ে যেতে চান, তিনি সব সময়ই এক মাঝামাঝি অবস্থানে সন্তুষ্ট থেকেছেন। এভাবেই কাজী সাইদ আহমেদ তার চিত্রপটের প্রতিনিধিত্বমূলক উপাদানগুলোর যুগপৎ সহাবস্থানগুলোকে ভিন্ন আবিষ্কার করেছেন। চিত্রের উপরিত্বককে উদ্ভাসিত করেছেন উন্মুল পন্থায়। প্রকৃত উপাদানগুলোর পুনরুপস্থাপনায় শিল্পী কখনও প্রাতিষ্ঠানিক বাস্তবতার প্রতি বশ্যতা স্বীকার করলেও ছবির পৃষ্ঠতলকে দেখেছেন দর্শনের এক ইতিবাচক ক্ষেত্র হিসেবে। চিত্রকর্মে প্রায় পাঁচ বছর ধরে অবলম্বন করছেন এই কৌশল। সেই সূত্রে দর্শন বা দৃশ্যকল্পনা হওয়ার চেয়ে পৃষ্ঠতল যেন শিল্পীর চিত্রকর্ম সৃজনের অন্যতম রণকৌশল। বাস্তবতা কিংবা জীবন্ত অভিজ্ঞতা এই দূরতম অবস্থান বজায় রেখে তার পৃষ্ঠতল হয়ে উঠেছে বহুস্তরীয়। ধারক হয়ে উঠেছে যেন হারিয়ে যাওয়া সময়ের আর অপসৃয়মান প্রকৃতির প্রতীকের । প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে বিশাল ক্যানভাসে ১২ টি চিত্রকর্ম। পক্ষকালব্যাপী প্রদর্শনীটি চলবে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সোম থেকে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং শুক্র ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। ‘ক্রাচের কর্নেল’ নাটকের ৩৪ তম প্রদর্শনী ॥ নানা যুক্তিতর্কের মাধ্যেমে অজানা রাজনৈতিক তুলে ধরা নাটক ‘ক্রাচের কর্নেল’। নাট্যদল বটতলা পরিবেশিত প্রযোজনাটিতে উঠে এসেছে বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অস্থির সময়। শাহাদুজ্জামানের উপন্যাস থেকে নাটকটির নাট্যরূপ দিয়েছেন সৌম্য সরকার ও সামিনা লুৎফা নিত্রা। নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ আলী হায়দার। শিল্পকলা একাডেমিতে চলমান পাঁচ দিনব্যাপী আইএলডিসি নাট্য উৎসবে নাটকটির ৩৪তম মঞ্চায়ন হলো বৃহস্পতিবার। বিকেলে একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল হলে নাটকটির এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। গত শতকের সত্তরের দশকে পুঁজিবাদী ও সমাজতান্ত্রিকÑএই দুই শিবিরে বিভক্ত ছিল সারা পৃথিবী । সেই সময় তৃতীয় বিশ্বের তরুণরা একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে ছিল বিভোর। কর্নেল তাহের ছিলেন পরিবর্তনকামী সেই তরুণদের একজন। তাঁকে কেন্দ্র করেই এগিয়েছে নাটকের কাহিনী। উঠে এসেছে দেশের নানা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। ধরা দিয়েছে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পালাবদল ও অস্থিতিশীল সময়। ঘটনাচক্রে যুক্ত হয়েছে সিরাজ শিকদারের নেতৃত্বে জাসদ গঠন ও কর্নেল তাহেরের সেনাবাহিনী ছেড়ে রাজনীতিতে যোগদান। খন্দকার আব্দুর রশিদ ও খন্দকার মোশতাক আহমেদ গংয়ের চক্রান্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা। খন্দকার মোশতাক সরকারের ক্ষমতা গ্রহণ। সেই সরকারের বিরুদ্ধে খালেদ মোশাররফের অভ্যুত্থানের সঙ্গে বর্ণিত হয়েছে জেলখানায় বন্দী চার জাতীয় নেতাকে হত্যাকা-। ঘটনার পালাবদলে কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে গৃহবন্দী দশা থেকে উদ্ধার করা হয় মেজর জিয়াউর রহমানকে। পরবর্তীকালে ক্ষমতালোভী জিয়াউর রহমানের অকৃতজ্ঞতা ও প্রহসনের বিচারে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয় কর্নেল তাহেরকে। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইমরান খান মুন্না, কাজী রোকসানা রুমা, তৌফিক হাসান ভুঁইয়া, পঙ্কজ মজুমদার, ইভান রিয়াজ, ম. সাঈদ, মনজুরুল ইসলাম রনি, গোলাম মাহবুব মাসুম ও নাফিউল ইসলাম।
×