ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আনন্দ আয়োজনে বটতলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 আনন্দ আয়োজনে বটতলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আলোচিত নাট্যদল বটতলা। নিছক বিনোদনের বদলে নাটকের মাধ্যমে রাজনীতি কিংবা সমাজ পরিবর্তনের কথা বলে আসছে দলটি। সম্প্রতি পথচলার ১০ বছর পূর্ণ করেছে দলটি। দর্শকের ভালবাসায় এগিয়ে যাওয়া দলটি বর্ণিল আয়োজনে উদ্যাপন করল দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। শনিবার সন্ধ্যায় বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে নাদিম স্মৃতি শ্রেষ্ঠ নাট্যকর্মী পদক প্রদান করা হয় তৌফিক হাসান ভূঁইয়াকে। দুই পর্বে সাজানো আয়োজনের প্রথম পর্বে বটতলার কর্মীদের মাধ্যমে নির্বাচিত নিবেদিত নাট্যকর্মী তৌফিক হাসান ভূঁইয়াকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। পদক প্রদান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন গত শতকের পঞ্চাশের দশকের ঢাকার মঞ্চাভিনেত্রী মার্থা রিতা গোমেজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যকার ও নির্দেশক মাসুম রেজা, আজাদ আবুল কালাম, মোহাম্মদ বারী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। দ্বিতীয় পর্বে ছিল বটতলার নিজস্ব শিল্পীদের পরিবেশনায় গান। সেই সঙ্গে কাটা হয় বটতলার জন্মদিনের কেক। রাত ৮টায় সুকুমার রায়ের ‘হেসোরাম হুঁশিয়ারের ডায়েরি’ অবলম্বনে ইভান রিয়াজের নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হয় শিশুতোষ নাটক ‘বন্যথেরিয়াম’। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন ধ্রুব কায়েস, শে’উতি শাগুফতা, হাফিজা আক্তার ঝুমা, সুমিত তেওয়ারি রানা, নোঙর রাসেল, পঙ্কজ মজুমদার, ম. সাঈদ, শাহদাৎ হোসেন, মাফরুর জাওয়াদ, আবু জাফর, তৌফিক হাসান ভূঁইয়া, কেএম মুত্তাকি ও ইভান রিয়াজ আজিজুল ইসলামের বাঁশিতে সকালের রাগ ॥ বাঁশির সুরে সিক্ত হলো শ্রোতা। শরতের ঝাঁঝালো রোদমাখা সকালে প্রশান্ত হলো অন্তর। শনিবার জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো এই ব্যতিক্রমী বাঁশি বাদন। আর সেই বাঁশিতে সুর তুললেন একুশে পদকজয়ী বাঁশরিয়া উস্তাদ আজিজুল ইসলাম। সাধারণত গান-বাজনা বলতেই বুঝি সন্ধ্যা বা রাত। সেই প্রেক্ষাপটে সঙ্গীতবিষয়ক পত্রিকা মাসিক সরগম সকালবেলায় আয়োজন করে এ অনুষ্ঠান। সেখানে শিল্পী পরিবেশন করেন ‘সকালের রাগ’। রাগা ভায়রো দিয়ে পরিবেশনা শুরু করেন আজিুল ইসলাম। বাঁশিতে ফুঁ দেবার সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টে যায় মিলনায়তনের পরিবেশ। ¯িœগ্ধ সুরের অনুরণন বয়ে যায় শ্রোতাদের মাঝে। প্রায় পঁয়ত্রিশ মিনিটের বাদনের শুরুতে তিনি দীর্ঘসময় আলাপ করেন। এরপর ঝাঁপতাল ও ত্রিতালের গদ বাজানোর পর শ্রোতাদের বিপুল করতালির মাধ্যমে তার প্রথম পরিবেশনা শেষ হয়। বাজানোর ফাঁকে ফাঁকে মুখেও তিনি সুরের চলাচল বর্ণনা করেন। তার পরবর্তী পরিবেশনা ছিল রানা জৈনপুরী। খেয়াল ধরনের প্রথমে বিলম্বিত ও পরে একতাল ও ত্রিতাল বাজিয়ে তিনি শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন। এরপর ছোট করে রাগ ললিত ও চন্দ্র মৌলি পরিবেশন করেন এবং ভৈরবী বাজিয়ে তার পরিবেশনার সমাপ্তি টানে। বাদন শেষে আজিজুল ইসলাম বলেন, ক্ল্যাসিকেল শিল্পীরা যা জানেন তার প্রকাশ সবাই পছন্দ করেন। কিন্তু এটি অনেক ক্ষেত্রে অবহেলিত হচ্ছে। স্বাধীনতা ৪৭ বছরেও ক্ল্যাসিক্যাল শিল্প প্রকাশের সুযোগ তেমন সৃষ্টি হয়নি। এ শিল্প প্রকাশের প্ল্যাটফরম নেই। মানুষের মননশীলতাকে উৎকর্ষ করতে এ শিল্পের প্রকাশ খুবই প্রয়োজন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে চিত্রশিল্পী হাশেম খান বলেন, ক্ল্যাসিক্যাল বাঁশি, গান এমন এক মনোমুগ্ধকর জগতে নিয়ে যায়, যেখানে ফিরে আসা সত্যি খুব কষ্টসাধ্য। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের শ্রোতা কম। তবে ধীরে ধীরে বেশ শ্রোতা তৈরি হচ্ছে। বেঙ্গল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত উৎসবে শ্রোতার মধ্যে তরুণরাই বেশি। এই শিল্পের প্রতি আরও জোর দেয়া উচিত। কেননা, ভাল গান, সুর মানুষের মনের কুলষকে দূর করে। হাশেম খান সরগমের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে শিল্পীর হাতে ‘স্মারক ক্রেস্ট’ তুলে দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সরগম সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের এত সমৃদ্ধিশালী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শুধু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ধীরে ধীরে ম্রিয়মান হয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সমাজের সকলের এগিয়ে আসা উচিত এবং এ ধরনের অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষকতা করা উচিত। উস্তাদ আজিজুল ইসলামের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে এসে সরগমের ডাকে সাড়া দেয়ায় তাকে শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা জানাই। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন বাচিকশিল্পী মুনা চৌধুরী। নজরুলের প্রয়াণবার্ষিকীতে শিশু একাডেমির আয়োজন ॥ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪২তম প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন শিশু একাডেমি। বিকেলে একাডেমি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জাতীয় অধ্যাপক ও নজরুল গবেষক রফিকুল ইসলাম কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও কর্মভিত্তিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির পরিচালক আনজীর লিটন।
×