ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও জাতীয় পার্টি নেবে ॥ এরশাদ

প্রকাশিত: ০৫:০২, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও জাতীয় পার্টি নেবে ॥  এরশাদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে তার সফলতা নিয়ে সন্দিহান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আওয়ামী লীগ ইভিএমের পক্ষে অবস্থান নিলেও তাদের রাজনৈতিক মিত্র এরশাদ এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে যন্ত্রে ভোটগ্রহণের সফলতা নিয়ে সংশয়ের কথা জানান। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে জাতীয় পাটি অংশ নেবে। শনিবার জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ের এক যোগদান অনুষ্ঠানে এরশাদ বলেন, আমাদের মানুষ তো টিপসই দিতে পারে না, ইভিএমে টিপ দেবে কীভাবে? এতগুলো আসনে যদি একসঙ্গে ইভিএম হয়, তবে তার সফলতা নিয়ে আমরা নিশ্চিত নই। তিনশটি সংসদীয় আসনের একশটিতে ইভিএম ব্যবহারের একটি ভাবনা ইসির মধ্যে থাকলেও এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে সিইসি জানিয়েছেন। বিএনপি সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করে বলছে, এর মাধ্যমে ‘ডিজিটাল জালিয়াতির’ আশঙ্কা রয়েছে তাদের। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সিলেটে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপের সময় আমরা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট নেয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। এর পক্ষে আমরা বিভিন্ন যুক্তিও উপস্থাপন করেছিলাম। নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচনে চিন্তা করছে ১০০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের। তার মানে এটাই চূড়ান্ত কিছু নয়। ইসির প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়, সংসদীয় কমিটি হয়ে সংসদে গিয়ে আইনটি পাশ হবে। তাই এ বিষয়ে অনেক আলোচনা ও মতামতের সুযোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ বলেন, ইভিএমের বিষয়ে জনমনে অনেক সন্দেহ রয়েছে। তাই এই ভোটিং পদ্ধতি চালুর আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে তা না করে ইভিএম জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না।’ এরশাদ বলেন, আগামী বুধবার জাতীয় পার্টির এক বর্ধিত সভায় বিষয়টি নিয়ে দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। কামাল হোসেনের গণফোরামকে সঙ্গে নিয়ে এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর যুক্তফ্রন্টের জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগকে কীভাবে দেখছেন- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, আমি আমার জোট নিয়ে আছি। ২০১৭ সালের মে মাসে এরশাদ ‘ইসলামী মূল্যবোধের’ নতুন জোট সম্মিলিত জাতীয় জোট (ইউনাইটেড ন্যাশনাল এ্যালায়েন্স) গঠনের ঘোষণা দেন। তাতে যোগ দেয় জাতীয় ইসলামী মহাজোট, বাংলাদেশ জাতীয় জোট, ইসলামিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় জোট। পরে খেলাফত মজলিসকে নিয়ে জোটভুক্ত দলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচে। এরশাদ জানান, বিএনপি নির্বাচনে না গেলে তারা আলাদাভাবে নির্বাচনে অংশ নেবেন। তিনি বলেন, যদি তারা আসে, তবে অন্যভাবে নির্বাচন করব। চেষ্টা করলে আমরা ক্ষমতায় যেতে পারব। সে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। শনিবারের অনুষ্ঠানে এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন কুড়িগ্রাম সদরের আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান পনির উদ্দিন আহমেদ। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে তিনি কুড়িগ্রাম-২ আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী। অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোঃ হাফিজ উদ্দিন, মসিউর রহমান রাঙা, সুনীল শুভ রায়, এসমএম ফয়সল চিশতী, খালেদ আখতার, সফিকুল ইসলাম সেন্টুসহ চেয়ারম্যানের উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে সম্ভাবনাময় দল। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় যেতে পারবে। আর এ কারণেই প্রতিদিন অনেকেই জাতীয় পার্টিতে যোগ দিতে চাচ্ছেন। রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও জনসমর্থন বিবেচনা করে দলে নিচ্ছি। তিনি বলেন, আমাদের ৩শ’ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি আছে। প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত আছে। কুড়িগ্রাম জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন- নাছির মোল্লা, জয়নাল, আঃ হামিদ, আব্দুল জলিল, হাবিবুর রহমান, মাহাফুজুর রহমান, আওলাদ হোসেন, রেজোয়ান আলী, মনোয়ার হোসেন, আমজাদ হোসেন, আশরাফ উদ্দিন মোল্লা, রত্না বেগম প্রমুখ।
×