অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত ১০ বছরে দেড় কোটি, দেড় কোটি করে মোট তিন কোটি নতুন ভোটার হয়েছেন। এটি দেশের মোট ভোটারের প্রায় ৩০ শতাংশ অর্থাৎ প্রতি তিনজন ভোটারের মধ্যে একজন তরুণ ভোটার। তাই সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে এই নতুন ভোটারদের তথা যুবকদের প্রত্যাশার প্রতিফলন থাকতে হবে।’
শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম, বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সিনিয়র ফেলো ও আয়োজক সংঠনের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে জাতীয় পর্যায়ে যেসব কর্মসূচী বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি তার নেতৃত্ব দেবে আজকের যুবসমাজ। এই যুব সমাজের প্রত্যাশা, তাদের আকাঙ্খাকে নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিন কোটি যুব ভোটারদের মনোভাবকে আমাদের বুঝতে হবে, নেতাদের জানতে হবে এবং দেশের কাজে লাগাতে হবে।’
দেবপ্রিয় বলেন, ‘রূপান্তরমুখী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, সংস্থা এবং নাগরিক সমাজের যথাযথ অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরী। এই লক্ষ্যে দেশের নাগরিক সমাজের উদ্যোগে জুন ২০১৬ সালে গঠিত হয়েছে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম, বাংলাদেশ। এই প্লাটফর্মের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এসডিজি সম্পর্কে অংশীজনদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি, বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারের পাশাপাশি সক্রিয় ভূমিকা রাখা এবং এ প্রক্রিয়ার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।’
এসডিজি বাস্তবায়নে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে বাংলাদেশে দুইটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী ১৪ অক্টোবর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে নাগরিক প্লাটফর্মের উদ্যোগে ‘যুব সম্মেলন-২০১৮, বাংলাদেশ ও এজেন্ডা ২০৩০- তারুণ্যের প্রত্যাশা’ শীর্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই সম্মেলনে মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, গ্রাম ও শহর এলাকায় বসবাসরত যুবকদের মাঝে এসডিজি’র বিভিন্ন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরা, জাতীয় উন্নয়ন সম্পর্কে যুবকদের আকাক্সক্ষা ও প্রত্যাশা তুলে ধরার জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করা এবং স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নীতিবিষয়ক বিষয়ে যুবকদের মতামত কার্যকরভাবে তুলে ধরা।’
প্রাক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘে ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন (এসডিজি) অর্জনে অনান্য দেশের মতোই কাজ শুরু শুরু করেছে বাংলাদেশ। নাগরিক প্লাটফর্মের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, এসডিজি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা রাখা, স্বচ্ছতা ও নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়াকে কার্যকর ফলপ্রসূ করা। এসডিজি বাস্তবায়নে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। এটি বাস্তবায়ন করা না গেলে আমাদের তরুণ সমাজই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক শাহীন আনাম, এ্যাকশন এইডের ম্যানেজার নাজমুল আহসান, ব্র্যাকের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আজাদ রহমান প্রমুখ।
তারা বলেন, ‘এবারের যুব সম্মেলনে অসম্প্রাদায়িক, বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।’ এ সময় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে যুবসমাজ, প্রযুক্তি উদ্ভাবনে এবং মাদকের বিরুদ্ধে যুব সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।