ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

১০ টাকার চাল নিয়ে কোন অনিয়ম নয় ॥ খাদ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ২৯ আগস্ট ২০১৮

১০ টাকার চাল নিয়ে কোন অনিয়ম নয় ॥ খাদ্যমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ আজ বুধবার খাদ্য অধিদফতরের সভাকক্ষে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সম্পর্কিত মতবিনিময় সভায় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি ফুড) ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের (ডিসি ফুড) উদ্দেশ্যে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন আগামী মাস থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা দরে ৩০ কেজি করে চাল দেবে সরকার। নির্বাচনের আগে এই কর্মসূচির নিয়ে সরকার কোনো অনিয়ম দেখতে চায় না বলে । নীতিমালা অনুযায়ী বছরের মার্চ, এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নবেম্বর এই পাঁচ মাস ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেয়া হয় বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী। কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সুবিধাভোগীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে ভুল-ভ্রান্তি থাকতেই পারে। কিন্তু এবার আমরা মোটামুটি নির্ভুলভাবে এই কাজটা করতে চাই, ডিস্ট্রিবিউশনটা করতে চাই। এটা নির্বাচনের বছর, আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন। নির্বাচনের বছরে চাই না কোনো রকম অনিময় হোক, কোনো রকম অনিয়মের চিত্র পত্র-পত্রিকায়, মিডিয়ায় আসুক।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি ডিসি ফুড, আরসি ফুড কর্মকর্তাদের বলব, আপনারা অত্যন্ত সচেতন থাকবেন কোথাও যাতে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত না হয়। কোথাও কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তা সংশোধনের ব্যবস্থা করবেন। আমি পরিষ্কার বলতে চাই, কোথাও যাতে কোনো অনিয়ম না হয় সেজন্য আপনারা অতন্দ্র প্রহরীর মতো সজাগ থাকবেন।’ খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তা বিধানে নিরন্ন মানুষের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি। ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুড়িগ্রামে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। আড়াই কোটি মানুষ এই কর্মসূচির সুফল ভোগ করছে। চালুর পর এই কর্মসূচি নিয়ে পত্রপত্রিকায় অনেক নিউজ এসেছে। আমরা সেটা থেকে সাবধান হয়েছি। কিছু কারেকশন করার সুযোগ পেয়েছি। পরবর্তী প্রান্তিকে যখন আবার চালু হয়েছিল তখন আমরা প্রথম প্রান্তিকের ভুল-ভ্রান্তি সংশোধন করতে পেরেছিলাম। এখন যে কেউ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে যেকোনো স্থানের সুবিধাভোগীদের সংখ্যা, নাম-ঠিকানা দেখতে পারেন।’ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই কর্মসূচির তালিকা প্রস্তুতের সঙ্গে জড়িত জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের মধ্যেও রেশারেশি আছে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। অনেক ক্ষেত্রে রেশারেশির কারণে ম্যানিপুলেট করে সংবাদ সরবরাহ করার চেষ্টা করে। সেদিকেও আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘কোনো রকমের দুর্নীতি, কোনো রকমের অস্বচ্ছতা সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নবেম্বর- এই তিন মাসের কর্মসূচিতে যাতে ধরা না পরে। আমি চাই, এবারে এই কর্মসূচি একেবারে নির্ভুল হোক। সব ধরণের ত্রুটিমুক্ত এই কর্মসূচিটি যাতে এই কর্মসূচিটি থাকে।’ অনুষ্ঠানে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা দুর্গম অঞ্চলে ডিলারদের পরিবহন খরচ বাড়িয়ে দেয়ার প্রস্তাব করেন। ডিলাররা প্রায় সবাই রাজনৈতিক পরিচয়ধারী, তাই কর্মসূচি শুরুর আগে ডিলারদের নিয়ে বৈঠক করার প্রস্তাব দেন তারা। এর আগে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় কুড়িগ্রামে পুষ্টি চাল বিতরণ করা হয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবার নতুন ৮টি উপজেলায় পুষ্টি চাল দেয়া হবে। ঢাকার কেরানীগঞ্জ, গাজীপুরের কালিগঞ্জ, গোপালগঞ্জের মোকছেদপুর, ফরিদপুর সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও বিজয়নগর, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ এবং বরগুনার বামনা উপজেলায় পুষ্টি চাল দেয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ক্রমান্বয়ে সব উপজেলায় পুষ্টি চাল সরবরাহের ব্যবস্থা আমরা করব। সেই কার্যক্রম আমাদের চলছে।’ খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আরিফুর রহমান অপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ।
×