ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ধরলার ভাঙ্গনে রাস্তা বাড়ি বিলীন ॥ নীরব পাউবি

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ৪ আগস্ট ২০১৮

 ধরলার ভাঙ্গনে রাস্তা বাড়ি বিলীন ॥ নীরব পাউবি

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ ধরলা নদীর ভাঙ্গন থেকে জনপদ রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে বারবার আবেদন করে ফল না পেয়ে এলাকাবাসীর উদ্যোগে নির্মাণ করা হচ্ছে বাঁশের পাইলিং। সদর উপজেলার সারোডোব গ্রামের দরিদ্র এলাকাবাসী নিজেরাই চাঁদা ও শ্রম দিয়ে দেশীয় প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ভাঙ্গন প্রতিরোধের চেষ্টা করছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এই উদ্যোগের প্রশংসা করলেও বরাদ্দ না পাওয়ায় ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। সারোডোব গ্রামের প্রাক্তন মেম্বার আশরাফ আলী জানান, গত বছরের বন্যায় এই গ্রামের ওপর দিয়ে যাওয়া একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও বাংটুরঘাট-ফুলবাড়ী সড়কের সারোডোব বাঁধটির কয়েকটি স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ায় অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এবার বর্ষা চলে এলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি। স্থানীয় জনগণ বাঁধ মেরামতের দাবিতে মানববন্ধন করলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, গ্রামবাসী ভেঙ্গে যাওয়া ৪০০ মিটার অংশ মেরামত করলে তারা বাকি অংশ মেরামত এবং বাঁধ রক্ষার ব্যবস্থা নেবেন। গ্রামবাসী চাঁদা তুলে এই ৪০০ মিটার অংশ মেরামত করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধটি রক্ষার ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এ অবস্থায় জুনের শেষ সপ্তাহে ধরলার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সদর উপজেলার সারোডোব এলাকায় পাকা সড়কটি ভেঙ্গে যায়। পাশাপাশি গ্রামবাসীর উদ্যোগে মেরামত করা বাঁধটি ভেঙ্গে পানি ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবার পাশাপাশি পাকা সড়ক সংলগ্ন বসতভিটাগুলো একের পর এক বিলীন হচ্ছে। বিলীন হচ্ছে বাঁধ, রাস্তা, বসতভিটা, আবাদী জমিসহ অনেক স্থাপনা। এ পর্যন্ত এই এলাকায় গৃহহীন হয়েছে ৩০ পরিবার। ভাঙ্গনে শেষ সম্বল হারিয়ে অনেকে বাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। নদী ভাঙ্গনের শিকার আজিজল ইসলাম জানান, তারা কোনমতে বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়ে আছেন। আরও ৩০-৪০টি বাড়ি ভাঙ্গনের ঝুঁকির মুখে। ভাঙ্গনে এই এলাকার ইউপি সদস্য বাকিনুর মিয়ার বাড়িও বিলীন হয়েছে। রাস্তায় আশ্রয় নেয়া জবা বেগম বলেন, ধামার যাবার কোন জাগা নেই। টাকা পইসাও নাই। এখন কোথায় যাব জানি না। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রামবাসী যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে সাধ্যমতো সহায়তা করা হচ্ছে। আপাতত কিছু জিও ব্যাগ ও সিনথেটিক ব্যাগ দেব। ইতোমধ্যে ওই এলাকার ভাঙ্গন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ৫ কোটি টাকার বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত বরাদ্দ পেলে স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হবে।
×