ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শুধু নৌমন্ত্রী ও সেতুমন্ত্রী নয়, সরকারের পদত্যাগ চাইলেন ফখরুল

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ৩ আগস্ট ২০১৮

শুধু নৌমন্ত্রী ও সেতুমন্ত্রী নয়, সরকারের পদত্যাগ চাইলেন ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোটা সংস্কার ও সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার অনিয়মের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে অভিনব উল্লেখ করে এ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির এ অবস্থানের কথা জানান। তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার অনিয়মের জন্য শুধু নৌমন্ত্রী বা সড়কমন্ত্রী নয় বর্তমান সরকারের পদত্যাগ চাই। ফখরুল বলেন, এ সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ সরকার। সারাদেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। দেশে এখন কারও জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। সড়ক দুর্ঘটনা থেকে শুরু করে দেশে একের পর এক অঘটন ঘটলেও এ সরকার তা নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ফখরুল বলেন, পরিবহন খাতে ভয়াবহ কা- চলছে, পাশবিক অত্যাচার- নির্যাতন চলছে। সমস্ত জায়গায় অরাজকতা চলছে। সে কারণেই যার যা খুশি করছে। মনে হচ্ছে, সরকার বলে কোন কিছু নেই। তিনি বলেন, ছাত্রদের অভিনব আন্দোলনে সরকার বাধ্য হয়েছে নতি স্বীকার করতে। শিক্ষার্থী নিহতের পর মন্ত্রী শাজাহান খান যা বলেছেন সেটা কোন রাজনৈতিক নেতা বলতে পারেন না। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন না করে উল্টো তিনি হেসেছেন। একজন মন্ত্রী এত নির্লজ্জ হতে পারে। দেশের সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন একেবারেই শেষ। তারা শুধু পারে বিরোধী মতকে দমন করতে। এ বিষয়টি জনগণের জানা আছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, তিনি বলেছেন, জিয়াউর রহমান নাকি শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু ওনার বিচারটা তিনি করে যেতে পারছেন না। জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কারও কোন অভিযোগ নেই। কোথাও কেউ বলেনি, কোন সাক্ষ্যে কেউ তাকে দায়ী করেননি, প্রমাণও নেই। অথচ জিয়াউর রহমানকে দায়ী করছেন প্রধানমন্ত্রী। মূলত বর্তমান পরিস্থিতির মোড় অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য তিনি এমন বক্তব্য রাখলেন। ফখরুল বলেন, তাহলে আমরাও তো দায়ী করতে পারি যে, আপনি বিদেশ থেকে ফিরে আসার ১৭ দিনের মধ্যে জিয়াউর রহমান নিহত হন। কিন্তু এ ধরনের কথা আমরা সমীচীন মনে করি না। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আতাউর রহমান ঢালী, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, নির্বাহী কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট রফিক শিকদার প্রমুখ। বিএনপি জোট রাস্তায় নামলে সরকার পালিয়ে যাবে- নজরুল ॥ বর্তমান সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই তাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সামনে নতি স্বীকার করেছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট রাস্তায় নামলে এ সরকার নতি স্বীকার করে পালিয়ে যাবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। নজরুল বলেন, এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। তারা ক্ষমতায় এসে পুলিশ প্রশাসন দিয়ে টিকে আছে। এ ধরনের সরকার আন্দোলনের মুখে টিকে থাকতে পারে না। আমাদের সে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এ জন্য সর্বপ্রথম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে এবং এই মেরুদ-হীন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু তাহের চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ওই সংগঠনের মহাসচিব আবুল কাশেম, ডিএলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ উদ্দীন মনি, এনডিপির মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈশা, ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ। সরকারের ব্যর্থতার কারণেই শিক্ষার্থীরা রাজপথে- মঈন খান ॥ সরকারের ব্যর্থতার কারণেই শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আন্দোলন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মঈন খান বলেন, কেউ কেউ প্রশ্ন করছে আন্দোলনরত ছাত্ররা রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ির ড্রাইভারদের লাইন্সেস দেখতে চাচ্ছে- এটা ঠিক কিনা? আমি বলব, যারা আজ দেশ পরিচালনা করছে তারা যদি ব্যর্থ না হতো তাহলে তো ছাত্ররা রাস্তায় নামত না। তিনি বলেন, ছাত্ররা বুঝতে পেরেছে এই সরকার রাষ্ট্র পরিচালনা করতে ব্যর্থ তাই তারা রাস্তায় নেমে সরকারকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। তারা সরকারের অত্যাচারের বহির্প্রকাশ ঘটাচ্ছে। মঈন খান বলেন, এই কোমলমতি ছাত্রদের আন্দোলনের ভাষা ও তাদের দুঃখ-কষ্ট যদি আমরা বুঝতে না পারি যদি তাদের সঙ্গে একত্মতা প্রকাশ করতে না পারি তাহলে সেটা আমাদের জন্যও ব্যর্থতা। কোমলমতি শিশুদের আন্দোলনের মাধ্যমে মনে হচ্ছে দেশের জনগণ একদিন জেগে উঠবে আর সেদিন এই সরকার পালানোরও রাস্তা খুঁজে পাবে না। আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা মেহেদী হাসান পলাশের সভাপত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন,জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন প্রমুখ। আজ থেকে তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে বিএনপির স্থায়ী কমিটি ॥ আজ থেকে তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হবে। আজ শুক্রবার সকালে রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগের এবং বিকেলে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবে। এ ছাড়া শনিবার সকালে চট্টগ্রাম, প্রস্তাবিত কুমিল্লা ও সিলেট বিভাগ এবং বিকেলে ঢাকা, ময়মনসিংহ ও প্রস্তাবিত ফরিদপুর বিভাগের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা। জানা যায়, মতবিনিময়কালে একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দলীয় কর্মকৌশল ও খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন নিয়ে তৃণমূলের নেতাদের দিকনির্দেশনা দেয়া হবে।
×