ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

পকেটে পদক নিয়ে ঘুরছেন মেন্ডি!

প্রকাশিত: ০৭:০০, ৩০ জুলাই ২০১৮

পকেটে পদক নিয়ে ঘুরছেন মেন্ডি!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একেই বলে সৌভাগ্য! ম্যানচেস্টার সিটির জার্সিতে গত মৌসুমে মাত্র ১১ ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন বেঞ্জামিন মেন্ডি। কিন্তু সেই প্রভাব পড়েনি তার দলে। বরং দাপটের সঙ্গে খেলেই ২০১৭-১৮ মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। রাশিয়া বিশ্বকাপেও দেখা গেল একই চিত্রনাট্য। গ্রুপপর্বে মাত্র ৪০ মিনিট খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন বেঞ্জামিন মেন্ডি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তার দল ফ্রান্স। মাঠে খুব বেশি সময় না খেলেও চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য হিসেবে বিশ্বকাপের ট্রফি আর পদক নিয়েই বাড়ি ফিরেন তিনি। ২০১৮ বিশ্বকাপের সেই পদকটা এখন সবসময় নিজের পকেটেই রাখেন ২৪ বছরের এই তরুণ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি এখন যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে। প্রাক-মৌসুম টুর্নামেন্ট ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন্স কাপ খেলছে পেপ গার্ডিওলার শিষ্যরা। ম্যানসিটির ফরাসী ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন মেন্ডি মিয়ামিতে এক সাক্ষাতকারেই জানালেন তার পদক পকেটে রাখার কথা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপের সেই পদক এখনও আমার পকেটে।’ হাস্যোজ্জ্বল মেন্ডি জানান, এই পদক সবসময়ই সঙ্গে রাখি আমি। মেন্ডি এ সময় আরও বলেন, ‘বিশ্বকাপের আগেই আমি ড্রেসিংরুমে কথা দিয়েছিলাম, আমি যদি চ্যাম্পিয়ন হই তাহলে পদক নিয়েই ফিরব। এটা এখন আমার শরীরেরই একটা অংশ। শুধু তাই নয়, আগামী চার বছর এটা আমার জীবনেরই অংশ হয়ে থাকবে। চার বছর পর আমরা বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন পাব। তবে এই মুহূর্তে আমরাই রাজা।’ বেঞ্জামিন রাশিয়া বিশ্বকাপে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার মতো খেলেছেন। তবে এক মিনিট না খেলেও এবার এই দলের সদস্য হিসেবে পদক জিতেছেন আল ফোন্সো আরিওলা। রাশিয়ায় ১ মিনিটও খেলার সুযোগ পাননি প্যারিস সেইন্ট জার্মেইর এই ফরাসী গোলরক্ষক। তারপরও স্বপ্নের বিশ্বকাপের ট্রফিটাকে উঁচিয়ে ধরেছেন তিনি। ফ্রান্সের ২৩ সদস্যের বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য হয়ে সোনার পদক পরেই বাড়ি ফিরেন আল ফোন্সো আরিওলা। ফ্রান্সের গোলরক্ষক হিসেবে আল ফোন্সো আরিওলা ছিলেন দিদিয়ের দেশমের তৃতীয় পছন্দ। এই তালিকায় প্রথম ছিলেন দলপতি হুগো লরিস। তারপর স্টিভ মান্দানা দুই নম্বর। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপে ফ্রান্সের গোলপোস্টকে সুরক্ষিত করতে এককভাবেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন অধিনায়ক হুগো লরিস। তার অনুপস্থিতিতে স্টিভ মান্দানার ওপরেই আস্থা রেখেছেন দেশম। এর ফলে ২০১৮ বিশ্বকাপে ফ্রান্সের ২৩ সদস্যের স্কোয়াডে থাকলেও এক মিনিটও খেলার সুযোগ পাননি আল ফোন্সো। শুধু রাশিয়া বিশ্বকাপ কেন? আল ফোন্সো এখন পর্যন্ত ফ্রান্সের হয়ে কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচেই প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাননি। একেই তো বলে রাজকপাল। তবে ফুটবল ইতিহাস এমন ঘটনার সাক্ষী আরও আগেই হয়েছে। তবে সেটা জানতে আপনাকে যেতে হবে আরও সাড়ে তিন দশকেরও বেশি সময় পেছনে। ১৯৮২ বিশ্বকাপে কোন ম্যাচ না খেলেও বিশ্বকাপ ট্রফির ছোঁয়া পেয়েছিলেন ইতালিয়ান ডিফেন্ডার ফ্রাঙ্কো বারেসি। এসি মিলানের এই তারকা ফুটবলার ছয়বার ইতালিয়ান সিরি’এ লীগ এবং তিনবার ইউরোপিয়ান কাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন বিশ্বকাপ জয়ের আগেই। অথচ স্পেনে যখন ইতালি চ্যাম্পিয়ন হয় ততদিন পর্যন্ত জাতীয় দলের জার্সিতে এক মিনিটও খেলার সুযোগ পাননি ফ্রাঙ্কো বারেসি। তবে পরবর্তীতে ১২ বছরের ক্যারিয়ারে ইতালির হয়ে ৮১ ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বারেসি। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে না হারলে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়েরও স্বাদ পেয়ে যেতেন এই ইতালিয়ান আইকন। সেবার বারেসিই কিন্তু ইতালির প্রথম ফুটবলার নন যিনি টুর্নামেন্টের কোন ম্যাচ না খেলেই বিশ্বকাপ জয়ের দেখা পান। আরিওলার মতো সেই বিশ্বকাপে জিওভান্নি গালিও ছিলেন ইতালির তৃতীয় পছন্দের গোলরক্ষক। ১৯৮২ বিশ্বকাপে ইতালি চ্যাম্পিয়ন হলে এক মিনিট না খেললেও জিওভান্নি বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য হিসেবে সোনার পদক পরেন। তবে ২০১৪ সালে কোন ম্যাচ না খেলেও বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য হিসেবে সোনার পদক পরেছিলেন জার্মানির এরিক ডার্ম। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের এই জার্মান খেলোয়াড় ব্রাজিল বিশ্বকাপে এক মিনিটও খেলার সুযোগ পাননি। কিন্তু এর আগে জার্মানির জাতীয় দলের হয়ে এক ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি।
×