ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পকলায় ‘আমি’ নাটকের মঞ্চায়ন আজ

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ২৬ জুলাই ২০১৮

শিল্পকলায় ‘আমি’ নাটকের মঞ্চায়ন আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ থিয়েটারের অন্যতম প্রশংসিত মনোড্রামা ‘আমি’। ‘আমি’ বাংলাদেশ থিয়েটারের ১৭তম প্রযোজনা। বাংলাদেশ থিয়েটারের এই প্রযোজনাটি ইতোমধ্যে দেশে-বিদেশে অসংখ্যবার মঞ্চায়নের পর প্রশংসিত হয়েছে। নাটকটির বিশেষ মঞ্চায়ন হবে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্য ৭টায়। দল সূত্রে জানা গেছে, আজ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে নাটকটির মঞ্চায়ন হবে। বাংলাদেশ থিয়েটারের ‘আমি’ নাটকটি রচনা করেছেন তরুণ নাট্যকার মাহবুব আলম। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন ড. আইরিন পারভীন লোপা। আর এতে একক অভিনয় করেন বাংলাদেশ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহ আলম। এছাড়া নাটকটির মঞ্চ পরিকল্পনায় করেছেন ফজলে রাব্বী সূকর্ণ, আলোক পরিকল্পনায় কলকাতার জয়ন্ত মুখার্জী। আবহ সঙ্গীত পরিকল্পনা করেছেন শেখ জসিম। নাটকের গল্পে একজন শিল্পীর ব্যক্তিগত জীবনের নানা টানাপোড়েনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। একজন শিল্পী তিনি তার সবকিছু দিয়ে শিল্পচর্চার মাধ্যমে সমাজের মানুষকে আনন্দ দিয়ে যান। আনন্দ দেয়ার কারণে সমাজে সবচেয়ে আকর্ষণীয় মানুষ একজন শিল্পী। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে তিনি সমাজে কতটা আনন্দ অনুভূতি বেঁচে থাকেন। অথবা তার ব্যক্তিগত জীবনই বা কতটা সুখের বা কষ্টের তার খবর কেউ রাখে না। বিশেষ করে বলা যায় একজন শিল্পীর শিল্পী হয়ে উঠতে নানা সামাজিক, আর্থিক প্রতিবন্ধকতা পার করতে হয়। অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে তবেই একজন শিল্পী নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে অধিষ্ঠিত হতে পারে। একজন শিল্পী তার নিজের চর্চার বাইরে সামাজিক, অর্থনৈতিক নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে থাকে এগিয়ে যেতে হয়। নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে সে হাল ছেড়ে দেয়। তবে একসময় সে নিজের চর্চার কাছে শিল্পের কাছে ফিরে আসে। এমনি ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে এগিয়েছে ‘আমি’ নাটকের কাহিনী। বস্তুতপক্ষে শিল্পীর জীবনের নানা টানাপোড়েনের বিষয়কে ‘আমি’ নাটকে তুলে ধরেছে নাট্যকার। যার নান্দনিক উপস্থাপন করে অভিনয়শিল্পী খন্দকার শাহ আলম। ত্রিমাত্রিক অভিনেতা খন্দকার শাহ্ আলম ‘আমি’ নাটকে অভিনয় দক্ষতার গুণে নিজেকে উচ্চমাত্রায় নিয়ে গেছেন। তার অভিনয়গুণেই ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ থিয়েটারের সপ্তদশ এই প্রযোজনাটি দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ‘আমি’ নাটকের গল্পে দেখা যায় একজন মানুষের যাপিত জীবন ব্যাপ্ত থাকে নানাবিধ কর্মময়তায়। রুশদু তেমনি একজন মানুষ, যার পুরো জীবন জড়িয়ে আছে শিল্পের বাতাবরণে। আর দশটা সাধারণ মানুষের মতো তার জীবন নয়। সৃষ্টিশীল এই মানুষটা বেঁচে থাকতে চায় তার শিল্পের জীবনের মধ্য দিয়ে। কিন্তু শিল্পের মাঝে যাপন করা শিল্পীর জীবন মসৃণ নয় কারণ শিল্প সাধনায় যে সুখ তা শুধু শিল্পের জন্য বাঁচা যায়, যা শিল্পের সুদীর্ঘ কণ্টকাকীর্ণ পথকে মসৃণ করে। শিল্প স্রষ্টার এই বেঁচে থাকা সমাজের জন্য, শিল্প সৃষ্টির জন্য। তাই শিল্পীর ব্যক্তি জীবনের সঙ্কট কখনোই লোকচক্ষুর সামনে দৃশ্যমান হয় না। শিল্পের জীবন যাপনের একজন শিল্পী বা শিল্পস্রষ্টা তার ব্যক্তি জীবনে কত কঠিন পরীক্ষা আর ত্যাগের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তা কেবলমাত্র শিল্পের সাধনায় ব্রত মানুষটিই অনুধাবন করতে পারে। ‘আমি’ নাটকটি শিল্পের সাধক রুশদুর শিল্প জীবন ও ব্যক্তি জীবনের টানাপোড়নের মিথস্ক্রিয়া। এই নাটকের পরতে পরতে রয়েছে ব্যক্তি ও শিল্প জীবনের দ্যোতনা। চমৎকার ভাষায় রচনা করেছেন তরুণ নাট্যকার মাহবুব আলম। যা বর্তমান সময়ে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। শিল্পী জীবনের এই টানা পোড়েনের গল্পটির নান্দনিক চিত্র মঞ্চে নির্মাণ করেছেন নির্দেশক ড. আইরিন পারভীন লোপা। এই নাটকের প্রাণ, অভিনেতা খন্দকার শাহ্ আলম। কঠিন এই পা-ুলিপিটি অভিজ্ঞ অভিনেতা খন্দকার শাহ্ আলমের অভিনয় দক্ষতার কারণেই মঞ্চে অপূর্ব দৃশ্যকাব্য রচিত হয়। প্রসঙ্গত, গত বছরের ১০ আগস্ট উদ্বোধনী মঞ্চায়নের পর এ পর্যন্ত নাটকটির মোট বেশ কয়েকটি সফল মঞ্চায়ন হয়েছে। এছাড়া গত বছরের ভারতের বীজপুর চতুর্থ সূত্র আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব এবং মুর্শিদাবাদসহ আরও কয়েকটি স্থানে নাটকটির একাধিক মঞ্চায়নের পর প্রশংসিত হয়।
×