ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গায়ানায় আত্মবিশ্বাস ফেরানো এক জয়

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৪ জুলাই ২০১৮

গায়ানায় আত্মবিশ্বাস ফেরানো এক জয়

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ বহুল আলোচিত দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ফল অনুকূলে না থাকলেও একেবারে মন্দ খেলেনি টাইগাররা। এরপর জানুয়ারিতে ঘরের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজের শুরুটাও ছিল দুর্দান্ত। যদিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজটা ছিল হতাশার। মার্চে লঙ্কা-দ্বীপে ত্রিদেশীয় নিদাহাস টি২০ ট্রফির ফাইনালে ওঠার স্মৃতিও খুব বেশি পুরনো হয়ে যায়নি। কিন্তু ভারতের দেরাদুনে দুর্বল আফগানিস্তানের কাছে তিন ম্যাচের টি২০তে ‘হোয়াইটওয়াশের’ লজ্জা যেন ট্রমা হয়ে দেখা দেয়! ওয়েস্ট ইন্ডিজে ‘২-০’তে টেস্ট ভরাডুবিতেও ভর করে সেই ভূত। ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসতে প্রয়োজন ছিল একটিমাত্র জয়। ক্যাপ্টেন মাশরাফির হাত ধরে সেটি এলো অনেক স্বস্তি হয়ে। গায়ানায় প্রথম ওয়ানডেতে ক্যারিবীয়দের ৪৮ রানে হারিয়ে নিজেদের খুঁজে পেল টিম-টাইগার্স। তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে। আর প্রাণ ফেরানো জয়ে ক্যারিয়ারের মন্থরতম সেঞ্চুরিতেও ঔজ্জ্বল্য ছড়ালেন তামিম ইকবাল, বল হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন ম্যাশ। ওপেনার তামিম ইকবালের সময়োপযোগী-ধৈর্যশীল সেঞ্চুরি (অপরাজিত ১৩০), মাত্র ৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত সাকিব আল হাসানের ৯৭, আর শেষদিকে লিটল ম্যান মুশফিকুর রহীমের ১১ বলে ৩০ ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৭৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। এরপর মাশরাফি-মুস্তাফিজের দুরন্ত বোলিংয়ে ক্যারিবীয়দের ৯ উইকেটে ২৩১ রানে থামিয়ে দিয়ে আসে বহুকাক্সিক্ষত এ জয়। স্বস্তির জয়ে ম্যাচসেরা তামিম ইকবাল খেলেছেন ১৬০ বলে অপরাজিত ১৩০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস। তবু সমালোচিত তিনি! কারণ ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি ছুঁতেই যে ১৪৬টি বল খেলতে হয় অভিজ্ঞ এই ওপেনারকে। যা তামিমের তো বটেই, ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ইতিহাসে মন্থরতম সেঞ্চুরি। ‘যখন আমরা ব্যাটিংয়ে নামি, উইকেট খুব সহজ ছিল না। শক্ত অবস্থানে যেতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। ২৫ ওভার পর্যন্ত উইকেট খুবই কঠিন ছিল। বল টার্ন করছিল। আমাদের পরিকল্পনা ছিল, স্কোরবোর্ডের দিকে না তাকিয়ে যত লম্বা খেলা যায়।’ বলেন ম্যাচসেরা তামিম। পরে মাশরাফির নেতৃত্বে বোলিংয়েও ভাল করে বাংলাদেশ। অধিনায়ক নিজে নিয়েছেন ৪ উইকেট। দুটি গুরুত্বপূর্ণ শিকার ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানের, ‘আমরা জানতাম শুরুতে ভাল বোলিং করলে এখানে ২৮০ রান তাড়া করা কঠিন। আমাদের চাওয়া ছিল গেইল ও লুইসকে দ্রুত ফেরানো। সেটি হয়েছে। এরপর আমরা প্রতিপক্ষের ওপর চাপটা ধরে রাখতে পেরেছি।’ বলেন ম্যাশ। সুপার মাশরাফির কী এমন জাদু যে টেস্ট-টি২০তে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ ওয়ানডেতে এসে এভাবে ঘুরে দাঁড়াল? ‘ওদের বিশেষ কিছু বলিনি। স্রেফ বলেছি, হৃদয় উজাড় করে খেলতে, দেশের জন্য খেলতে। যা হয়েছে তা তো হয়েই গেছে (টেস্ট সিরিজের ব্যর্থতা বোঝাতে)। এটা নতুন একটা সিরিজ। শুরুটা ভাল করতে পারলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। প্রথম ম্যাচে ঠিক সেটাই হয়েছে। আশাকরি এই পারফর্মেন্স আমরা ধরে রাখতে পারব।’ বলেন অধিনায়ক। একই ভেন্যুতে বুধবার অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ওয়ানডে। সেখানে জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ। সিনিয়রদের পারফর্মেন্সে ঘুরে দাঁড়ানো টাইগাররা সেটা পারে কি না, সেটিই দেখার অপেক্ষা।
×