ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোটা নিয়ে ছাত্রলীগ যেন বাড়াবাড়ি না করে, নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২৩ জুলাই ২০১৮

কোটা নিয়ে ছাত্রলীগ যেন বাড়াবাড়ি না করে, নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কারও কোন শর্ত মেনে আগামী নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। এ নিয়ে কারও সঙ্গে কোন সংলাপেরও প্রয়োজন নেই বলে সরকার মনে করছে। আর দেশে এমন কোন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে সংলাপ করতে হবে। কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোটা সংক্রান্ত আন্দোলন নিয়ে ছাত্রলীগের বিষয়ে যেন আর কোন বাড়াবাড়ির অভিযোগ না আসে তার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন নিয়ে কোন শর্ত নাকচ করে দেন তিনি। প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ চারটি শর্ত পূরণ হলে আগামী নির্বাচন হতে পারে- বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ড. এমাজউদ্দীন আহমদের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বিএনপিকে কর্মসূচীতে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে দলটির অভিযোগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশ করছে, আগামীতেও রাজনৈতিক দলগুলো সভা-সমাবেশ করবে, এ বিষয়ে কেউ অনুমতি চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। অক্টোবরে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, অক্টোবরের যে কোন সময়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হবে। সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলো নিয়েই এ সরকার গঠন হবে। অন্য কাউকে রাখার কোন সুযোগ নেই। নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এতদিন বলেছে, খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এখন এক কাঠি বাড়িয়ে বলছে, নির্বাচন তারা প্রতিহত করবে। এতে আমরা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র এবং নাশকতার আশঙ্কা করছি। তবে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এসব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করব। এটাকে বেসুরা আওয়াজ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, আমরা অনেক কনফিডেন্ট। ২০১৪ সালে যা হয়েছে সেটার পুনরাবৃত্তি বাংলাদেশে ঘটবে না। সেটা ঘটতে দেয়া হবে না। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নানা ধরনের ‘চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র’ করছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ইস্যু খুঁজতে গিয়ে কখনও কোটা আন্দোলন, কখনও লর্ড কারলাইলকে ভারতে এনে দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটানোর চেষ্টা- এ রকম অনেক কিছু করা হয়েছে। এখনও চক্রান্তমূলক পরিকল্পনার ছক তৈরি করছে অনেকে বিদেশ থেকে।’ নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে কোন উদ্যোগ নেয়া হবে কিনা একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি আসবে না সেটা ওই দলটির নিজস্ব ব্যাপার। আমি বার বার এই একটা কথা বলি, ইলেকশন বিএনপির জন্য দয়ার দান নয়, সরকারী দলের অনুদান নয়, এটা বিএনপির অধিকার। সরকার কেন অনুনয় বিনয় করে টেনে আনতে চাইবে? আপনি আসবেন না নির্বাচন কি থেমে থাকবে? গণতন্ত্র কি থেমে থাকবে? নির্বাচনে আসতে বিএনপির সামনে যেহেতু ‘কোন’ বাধা নেই, সেহেতু নির্বাচন নিয়ে তাদের সঙ্গে সংলাপেরও কোন প্রয়োজন নেই। সংলাপ তো হয়েছে, ইলেকশন কমিশন সংলাপ করেছে। বিএনপির সঙ্গেও সংলাপ করেছে, এখানে আমাদের কোন বিষয় নেই, ইলেকশন কমিশন সংলাপ করবে কিনা সেটা তারা ঠিক করবে। দেশে এমন কোন পরিস্থিতি নেই যে সেটার জন্য সংলাপ করতে হবে। আসন্ন তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছি যাতে নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি কেউ লঙ্ঘন না করে, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতেই ওবায়দুল কাদের শনিবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, ইতিহাসে এই প্রথম এত বড় একটি অনুষ্ঠানে একজনই বক্তা ছিলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী। আমি শুধু মানপত্রটা পাঠ করেছি। এই শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় যে, আওয়ামী লীগ সংগঠিত, সুশৃঙ্খল, স্মার্ট এবং মডার্ন। মন্ত্রী বলেন, জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি শনিবারই করা হয়েছে। মিছিলের পাশে পরিবহন চলতে পারে কি না সেইদিকে নজর ছিল আমাদের কড়া। তবে তারপরেও দু’একটি ঘটনা ঘটে থাকলে সেজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া একটি কঠোর নির্দেশনারও কথাও উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী। গণসংবর্ধনা সফলে কাদেরের কৃতজ্ঞতা ॥ এদিকে ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নতি, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশ বিজয়, গ্লোবাল উইমেন্স লিডারশিপ এ্যাওয়ার্ড এবং ভারতের আসানসোল কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডিলিট অর্জন’ করায় শনিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সব নাগরিক, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সংস্কৃতি কর্মী, দেশের সব শ্রেণী-পেশার সম্মানিত অতিথি, শিক্ষক, লেখক, কবি, সাংবাদিক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ও ঢাকা মহানগরবাসীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।
×