ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

সারাদেশে সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু কাল

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৯ জুলাই ২০১৮

সারাদেশে সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু কাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কিশোর ও তরুণদের সংস্কৃতি মনস্ক করে গড়ে তুলতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে দেশের ৬৪টি জেলায় একযোগে সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে দুইদিনব্যাপী এ উৎসব। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ উৎসব সহযোগিতায় রয়েছে জেলা প্রশাসন, শিল্পকলা একাডেমি ও জেলা তথ্য অফিস। এ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন হয় তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে বুধবার দুপুরে। এতে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তথ্যসচিব আবদুল মালেক, সংস্কৃতি সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতিমন্ত্রী এ উৎসব কর্মসূচীর বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজন কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। স্থানীয় শিল্পী, কবি ও সাহিত্যিকদের অংশগ্রহণে এই উৎসব হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যেসব জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক চর্চা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে সেসব বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ নেয়া ছাত্রছাত্রীদের এই অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হবে। উৎসবে স্থানীয় শিল্পীরা রবীন্দ্র ও নজরুল সঙ্গীত, আধুনিক ও দেশাত্মবোধক গান, কবিতা আবৃত্তি, একক অভিনয়, পল্লীগীতি, লালনগীতি, লোকগীতি, জারি, সারি ও মুর্শিদী গান ছাড়াও আঞ্চলিক গান পরিবেশন করবেন। এছাড়া স্থানীয় সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং ফুটিয়ে তোলে, এমন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে উৎসবে প্রাধান্য দিয়ে পরিবেশনের চেষ্টা করা হবে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে সরকারের জনকল্যাণমূলক ও উন্নয়ন কর্মকা-ের ওপর নির্মিত বিভিন্ন ভিডিও তথ্যচিত্র প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হবে। এ সাংস্কৃতিক উৎসব সফলভাবে আয়োজনের মাধ্যমে দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আরও বিকশিত হবে এবং কিশোর-তরুণ সমাজসহ সর্বস্তরের জনগণ বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হবে। এই উৎসবের মধ্যদিয়ে সরকারের জনকল্যাণমূলক ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও জনগণকে অবহিত করা হবে বলে জানান সংস্কৃতিমন্ত্রী। নাচ, গান আর কথামালায় কার্ল মার্কসের দ্বি-শততম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন ॥ শোষণ বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে শ্রেণীহীন মানবিক পৃথিবী রচনার সংগ্রামে যারা নিয়োজিত তাদের শিক্ষক, পথপ্রদর্শক ও অনুপ্রেরণার উৎস হলেন কার্ল মার্কস ও তার শিক্ষা। তিনিই সর্বপ্রথম বস্তুজগৎ ও মানবসমাজের বিকাশের নিয়ম অনুযায়ী পৃথিবীকে পরিবর্তনের জন্য বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদের রূপরেখা প্রণয়ন করেছিলেন। এবছর পূর্ণ হলো তার জন্মের দুইশত বছর। নাচ, গান আর আলোচনানুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে কার্ল মার্কসের দ্বি-শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয় বুধবার সন্ধ্যায়। শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক পর্ষদ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ‘শিল্প-সাহিত্যে মার্কসবাদ ও শ্রেণীসংগ্রাম’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, উদীচীর সভাপতি ড. সফিউদ্দিন আহমদ, খ্যাতনামা চলচ্চিত্রকার মশিউদ্দিন শাকের ও গণসংস্কৃতি কেন্দ্রের সভাপতি জাকির হোসেন। আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন সাংস্কৃতিক পর্ষদের সদস্য সচিব ও উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন। সঞ্চালনা করেন পর্ষদের সদস্য সচিব ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সদস্য বিপুল কুমার দাস। আলোচনা পর্বের পর দ্বিতীয় পর্বের শুরুতেই দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের শিশু শিল্পীরা। এরপর গণসঙ্গীতের কালজয়ী পুরুষ হেমাঙ্গ বিশ্বাসের অমর সৃষ্টি ‘শঙ্খচিল’ গানটির নৃত্যরূপ নিয়ে মঞ্চে আসেন উদীচীর নৃত্যশিল্পীরা। গানটির নৃত্যরূপ দিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নৃত্য গবেষক, শিক্ষক ও শিল্পী ড. মহুয়া মুখোপাধ্যায়। এরপর একে একে গণসঙ্গীত নিয়ে মঞ্চে আসেন বিবর্তন, গণসাংস্কৃতিক কেন্দ্র, চারণ, স্বাধিকার, তীরন্দাজ, সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের শিল্পীরা। এছাড়া, কবিতা পরিবেশন করেন স্বরব্যঞ্জন ও গণশিল্পী সংস্থার বাচিক শিল্পীরা। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন গণসঙ্গীত শিল্পী কফিল আহমেদ। ‘বিনম্র রোদের ছায়া’ আবৃত্তি অনুষ্ঠানের ২৬তম পর্ব অনুষ্ঠিত ॥ ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে নিয়মিত আবৃত্তি চর্চা করে চারুকণ্ঠ আবৃত্তি সংসদ। নবীন আবৃত্তিশিল্পীদের বাচিক, উপস্থাপনা ও আবৃত্তিশিল্পী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিগত কয়েক বছর ধরে নিয়মিতভাবে ‘বিনম্র রোদের ছায়া’ শিরোনামে আবৃত্তি অনুষ্ঠান করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় সেগুনবাগিচায় শল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে বুধবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানের ২৬তম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। পর্বটি সাজানো হয় সংগঠনের সদস্য প্রয়াত কবি বেলাল চৌধুরীর কবিতা থেকে। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন জি এম মোর্শেদ, আনোয়ার পারভেজ, ঝিনুক হালদার, ফারজানা রোজি, গুলশান আরা লুনা, নাঈমা বিনতে মুজিব ইভা, সাইফুল ইসলাম, তাবাস্সুম মুন্নী, মো. ইস্তাকুর রহমান, মো. মাঈন উদ্দীন, নুরুন নবী মিল্লাত, রোকসানা আক্তার সুকন্যা, সাদিয়া নিশাত, আমিরুল ইসলাম। এছাড়া বিশেষ পর্বে আবৃত্তি করেন চারুকণ্ঠ আবৃত্তি সংসদের পদ্মাবতী দেবী, কণ্ঠসাধন আবৃত্তি পর্ষদ, চান্দিনা, কুমিল্লার সারওয়ার নাঈম, মিথস্ক্রিয়ার অনিন্দ্য মাহাদী এবং ত্রিলোক বাচিক পাঠশালার হীরা চাকমা। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। সভাপতিত্ব করেন চারুকণ্ঠের সভাপতি অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী। শিল্পকলায় প্রাচ্যনাটের ‘কিনু কাহারের থেটার’ মঞ্চস্থ ॥ পুতনা রাজ্যের কাহিনী। রাজ্যের উজির এক নারীর শ্লীতাহানি করেছে। এ কারণে রাজ্যের বড়লাট সাহেব ক্ষেপেছেন। সাফ জানিয়ে দিলেন, এ অপকর্মের যদি বিচার না হয়, তাহলে আমি সিংহাসন ফেলে দিব। রাজা পড়লেন উভয়সংকটে। উজির তার প্রাণের দোসর, তাকে কী করে শাস্তি দেবেন? শুধু উজির নন, অপকর্মটি তিনি নিজেও করেছেন। তাই সাজা তাঁরও প্রাপ্য। এ নিয়ে শুরু ‘কিনু কাহারের থেটার’ নাটকের কাহিনী। প্রাচ্যনাট ১৫তম প্রযোজনা নাটকটি মঞ্চস্থ হয় বুধবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায়। মনোজ মিত্র রচিত নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন।
×