ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নজর থাকবে আজ স্টার্লিং-মানদুকিচে

প্রকাশিত: ০৭:০২, ১১ জুলাই ২০১৮

নজর থাকবে আজ স্টার্লিং-মানদুকিচে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনেক বড় একটি নাম, কিন্তু রাশিয়ায় চলমান বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। মারিও মানদুকিচ ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণভাগের অন্যতম খেলোয়াড়। দ্বিতীয় রাউন্ডে ডেনমার্কের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ একটি গোল করেছিলেন বলেই আজ ক্রোয়েটরা এতদূর পর্যন্ত আসতে পেরেছে। বড় ও চাপের ম্যাচের অন্যতম ভরসা তিনি দলের জন্য। ক্রোয়েশিয়ার এ আক্রমণভাগের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় কি আজ ত্রাস হয়ে উঠতে পারবেন? বিশ্বকাপে প্রথমবার ফাইনালে ওঠার জন্য তার জ্বলে ওঠা মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে। তার ওপর ভরসা নিয়েই তাকিয়ে থাকবে ক্রোয়েটরা। তবে ইংল্যান্ডের জন্যও ৫২ বছর পর আরেকবার বিশ্বকাপ ফাইনাল হাতছানি দিচ্ছে। শেষ চারের লড়াইয়ে আজ তারা মাঝমাঠে বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে তাকিয়ে থাকবে রাহিম স্টার্লিংয়ের দিকেই। ইংলিশদের অন্যতম এ তারকা কি আজ আস্থা হয়ে উঠতে পারবেন দলের? তার কাছে স্বপ্ন পূরণের জন্য চাওয়াটা অনেক বেশিই ইংল্যান্ডের। মাঝমাঠের চালিকাশক্তি স্টার্লিং আবার আক্রমণভাগেও যথেষ্ট ভূমিকা রাখেন। গত বিশ্বকাপেও গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। অথচ ১৯৯৮ সালে যখন প্রথমবার বিশ্বকাপ মঞ্চে এসেছিল দলটি সে সময়ই চমক দিয়েছিল তৃতীয় স্থান অর্জন করে। কিন্তু সেই চমক টিকে থাকেনি। গত চারটি বিশ্বকাপে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে দল। কিন্তু এবার অভিজ্ঞ-তরুণের মিশেলে দুর্দান্ত একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ দলে পরিণত হয়েছে ক্রোয়েশিয়া। আর এই দলকে এখন স্বপ্নের ঠিকানা পাইয়ে দেয়ার অন্যতম কারিগর হতে পারেন মানদুকিচ। চলমান বিশ্বকাপে ১২ ভেন্যুর মধ্যে মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামটিই সবচেয়ে বড়। এখানে ৮০ হাজার দর্শক খেলা দেখতে পারেন। তবে রাশিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে সোচির ফিশট স্টেডিয়ামে স্বাগতিক দর্শকদের চাপ ভালভাবেই সামলেছে ক্রোয়েশিয়া। এখন তাই মস্কোয় আরও একটি কঠিন লড়াইয়ে নামার আগে বাড়তি আত্মবিশ্বাস পেয়েছে ক্রোয়েটরা। দলের আক্রমণভাগের অন্যতম শক্তি হিসেবে এখানে আছেন ৩২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড মানদুকিচ। জাতীয় দলের জার্সিতে সবচেয়ে দুর্দান্ত ছিলেন ২০১৬ সালে। সে বছর ১১ ম্যাচে ৯ গোল এসেছিল তার পা থেকে। তবে গত বছর ৭ ম্যাচ খেলে একটি এবং এ বছর ৬ ম্যাচ খেলে মাত্র একটি গোল পেয়েছেন। সেই একমাত্র গোলটি এসেছে ডেনিশদের বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডে। প্রথম মিনিটেই গোল খেয়ে ব্যাকফুটে পড়ে গিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু ৪ মিনিটের সময় গোল করে দলকে সমতার স্বস্তি এনে দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ম্যাচটিতে জয় তুলে নেয় ক্রোয়েটরা। ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাসের হয়ে এ বছর ৪২ ম্যাচ খেলেছেন, গোল করেছেন ১০টি। গোলসংখ্যা কম হলেও তিনিই দলের আক্রমণভাগের অন্যতম চালিকাশক্তি এবং প্রতিপক্ষের জন্যও ভীতিকর। আজ তাই মানদুকিচের ওপর বাড়তি আস্থা রাখবে ক্রোয়েশিয়া। মানদুকিচ নিজে এ ম্যাচকে সামনে রেখে বলেছেন, ‘আমি বলতে পারি এই খেলায় সুযোগটা ৫০-৫০। কারণ উপযুক্ত দল হিসেবেই সেমিতে এসেছে সবাই। সব দলকেই আমরা সমান মর্যাদা দেই। কিন্তু আমরা কোন দলকেই ভয় পাই না এবং নিজেদের ওপর যথেষ্ট আস্থা ও বিশ্বাস আছে।’ মাত্র ২৩ বছর বয়সী স্টার্লিং জাতীয় দলের হয়ে ৪২ ম্যাচ খেলে গোল পেয়েছেন ২টি। ২০১৫ সালে লিথুয়ানিয়া ও এস্তোনিয়ার বিপক্ষে গোল দুটি করেছিলেন। গত ৩ বছরে ২২ ম্যাচ খেললেও কোন গোলের দেখা পাননি তিনি। তবে গোল করার চেয়ে গোল বানানোই তার কাজ। মাঝমাঠ থেকে আক্রমণভাগে তার উপস্থিতি ইংল্যান্ডের জন্য বাড়তি শক্তির যোগান। যদিও এ বিশ্বকাপে খুব বেশি জ্বলতে দেখা যায়নি এ এ্যাটাকিং মিডফিল্ডারকে। কিন্তু এরপরও ইংলিশদের মাঝমাঠকে আক্রমণের চালিকাশক্তি হিসেবে পরিণত করার পেছনে তরুণ স্টার্লিংয়ের অবদান অন্যতম। তাছাড়া ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে এ মাঝমাঠের তারকা এবারের মৌসুমেও ছিলেন দুর্দান্ত। ক্লাবের হয়ে ৪৬ ম্যাচ খেলেছেন বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মিলিয়ে, গোল করেছেন ২৩টি। আর সে কারণেই রাহিম স্টার্লিংয়ের ওপর নির্ভর করে ইংল্যান্ড। কিন্তু চলতি আসরে ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছেন নিষ্প্রভ স্টার্লিং। কারণ নিয়মিত যারা বিশ্বকাপের একাদশে ঠাঁই করে নিয়েছেন তাদের মধ্যে পারফর্মেন্স বিবেচনার হারে সবার নিচে রেটিং স্টার্লিংয়ের। অনেকেই এ জন্য মনে করছেন তিনি এখন ইংল্যান্ড দলের জন্য অকার্যকর এক বোঝা হয়ে উঠেছেন। তবে সেমিতে প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়ার কোচ জøাটকো দালিচ অবশ্য দাবি করেছেন, ‘সেমিফাইনালে সবচেয়ে বড় হুমকি আমাদের জন্য হতে পারেন রাহিম স্টার্লিং।’ এখন দেখার বিষয় সত্যি সত্যিই তিনি প্রতিপক্ষের জন্য মাথাব্যথার কারণ হতে পারেন কিনা। সেটিতো ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট মনেপ্রাণেই চাইছেন।
×