ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন রঙিন অণুর সন্ধান

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১১ জুলাই ২০১৮

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন রঙিন অণুর সন্ধান

সাহারা মরুভূমির তলদেশ থেকে পাওয়া প্রাচীন এক পাথরখ-ে পৃথিবীতে টিকে থাকা সবচেয়ে প্রাচীন জৈবরং আবিষ্কারের দাবি করছেন অস্ট্রেলীয় বিজ্ঞানীরা। ১১০ কোটি বছর পুরনো ওই রঞ্জক উজ্জ্বল গোলাপী বর্ণের; ঘনীভূত অবস্থায় সেগুলো রক্ত লাল থেকে গাঢ় বেগুনী বর্ণ ধারণ করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সামুদ্রিক প্রাণীকোষের উৎপাদিত ক্লোরোফিলের জীবাশ্ম অণু থেকে ওই রঞ্জকগুলো পাওয়া গেছে। মাটি থেকে পাওয়া পাথরের শিলা গুঁড়িয়ে সেগুলোকে আলাদা করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এএনইউ) সহযোগী অধ্যাপক জোসেন ব্রুকস বলেন, ‘কল্পনা করুন, আপনারা একটি জীবাশ্ম ডাইনোসরের চামড়া পেয়েছেন, যাতে এখনও তার মৌলিক রংটি রয়ে গেছে, সবুজ কিংবা নীল। আমাদের আবিষ্কারও অনেকটা সেই ধরনের। এগুলো সত্যিকারের অণু, পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো রঙিন অণু। সূর্যালোকের বিপরীতে ধরলে এগুলোকে নীলাভ গোলাপী বর্ণের দেখায়।’ চূর্ণ শিলার মধ্যে জৈব দ্রাবক চালিয়ে এএনইউর পিএইচডি শিক্ষার্থী ড. নুর গুনেলি ওই রঞ্জকগুলো আবিষ্কার করেছেন। পাথর থেকে রঞ্জক পৃথকীকরণের প্রক্রিয়াটি অনেকটা কফি মেশিনের মতোই বলেও মন্তব্য ব্রুকসের। তিনি বলেন, ‘যখন এটি বেরিয়ে এলো তখন পরীক্ষাগার থেকেই তার (নুর গুলেনি) চিৎকার শুনতে পাই আমি, সে আমার কার্যালয়ে দৌড়ে আসে। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম পাথরখ-টি বোধহয় বিষাক্ত। এত দীর্ঘসময় ধরে যে একটি জৈব রং টিকে থাকতে পারে, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য।’ যে পাথরখ- থেকে পৃথিবীর ‘সবচেয়ে পুরনো রঙিন অণু’ পাওয়া গেছে, সেটি বছরদশেক আগে মৌরিতানিয়ার তাউদেনি অববাহিকা থেকে একটি খনি কোম্পানি তুলে এনেছিল। কয়েক শ’ মিটার নিচে খনন করার পর পাথরটি পাওয়া পায়। গবেষকদের বিশ্লেষণে জানা গেছে, পাথরে পাওয়া রঞ্জকগুলো শতকোটি বছর আগে সমুদ্রের সায়ানোব্যাকটেরিয়া থেকে প্রস্তুত হয়েছিল। পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশের বিষয়ে তখনকার পরিস্থিতি কেমন ছিল তা জানতে নতুন এ আবিষ্কার ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা ব্রুকসের। তিনি বলেন, ‘অতিক্ষুদ্র সায়ানোব্যাকটেরিয়া শতকোটি বছর আগে সমুদ্র অববাহিকার খাদ্যশৃঙ্খলকে প্রভাবিত করত, সেসময় কেন প্রাণীর অস্তিত্ব ছিল না, তা বুঝতে এটি সহায়তা করেছে। প্রাণী বিকশিত হতে শুরু করেছে মাত্র ৬০ কোটি বছর আগে থেকে, এর আগে এ বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের উৎসই ছিল না। এএনইউর এ গবেষণায় জাপান ও মার্কিন বিজ্ঞানীরাও জড়িত ছিলেন। এ সংক্রান্ত একটি নিবন্ধ যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল এাকাডেমি অব সায়েন্সের জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে।-বিবিসি।
×