স্টাফ রিপোর্টার ॥ অচিরেই নতুন দুটি নাটক মঞ্চে আনছে সংস্কার নাট্যদল। নাটক দুটির নাম ‘ভুল স্বর্গ’ ও ‘মহাপতঙ্গ’। দর্শকরা এক টিকিটে নাটক দুটি দেখতে পাবেন। এর মধ্যে ‘ভুল স্বর্গ’ নাটকটি রচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নাটকটির নবনাট্যরূপ ও নির্দেশনা অধ্যাপক ড. ইউসুফ হাসান অর্ক। অন্যদিকে ‘মহাপতঙ্গ’ নাটকটির মূল গল্প আবু ইসহাক, নাট্যরূপ ড. রুবাইয়াৎ আহমেদ। আর নির্দেশনা দিয়েছেন হাবিব মাসুদ। নাটকের সঙ্গীত পরিকল্পনায় মনামী ইসলাম কনক। ‘ভুল স্বর্গ’ এবং ‘মহাপতঙ্গ’ নাটক দু’টির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করবেন ইভা, পৃথা দে, সুজন কির্ত্তনিয়া, জুলি ইসলাম, মাসুদ, রতœা ইসলাম, ইসমাইল, নদী, বাপ্পী সাইফ আরিয়ান, আশিক, টোটন, শিহাব, প্রিন্স ও সাজ্জাদ।
‘ভুল স্বর্গ’ নাটকের কাহিনীতে দেখা যাবে নেহাত একটি বেকার লোক। যার নানা রকমের শখ। পটে চিত্র আঁকা, মাটির ঢেলা দিয়ে নানা বস্তু তৈরি করা ইত্যাদি। বাড়ির লোকের কাছে তার লাঞ্ছনার সীমা ছিল না। মাঝে মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতো আর পাগলামি করব না। কিন্তু স্বভাবগত পাগলামি তাকে ছাড়ত না। সারাজীবন অকাজে পার করলেও মৃত্যুর পর জানতে পারে তার স্বর্গে যাওয়া মঞ্জুর। কিন্তু নিয়তি তার পিছু ছাড়ে না। স্বর্গের দূত তাকে ভুল করে অকেজো লোকের স্বর্গে না পাঠিয়ে কেজো লোকের স্বর্গে দিয়ে আসে। ভুল স্বর্গে গিয়ে তৈরি হয় নানা বিপত্তি। যেখানে সকলেই নানা কাজে ব্যস্ত। তাদের কোন অবসর নেই। আর বেকার লোকটিই কোন কাজ পায় না। স্বর্গের ব্যস্ত মেয়ের ঘটে চিত্রপট একে দিয়ে তাকে মুগ্ধ ও চিন্তিত করে ফেলে। তৈরি হয় কেজো লোকের স্বর্গবিরোধী আচরণ। সভা বসে। স্বর্গের প্রধান জ্ঞানী গুণীজন তার এই কর্মে চিন্তিত হয়ে পরে। তারপর ডাক পড়ে দূতের। জানা যায়, তাকে ভুল করে ভুল স্বর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয় আবার বেকার লোকটিকে পৃথিবীতে পাঠানো হবে। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকের কাহিনী।
অন্যদিকে ‘মহাপতঙ্গ’ নাটকের কাহিনীতে দেখা যাবে ছোট একটি শহরের ছোট একটি বাড়ির দেয়ালের ফোকড়ে বাস করে দু’টি চড়ুই দম্পতি। বাসায় তাদের দু’টি ছোট ছানা রয়েছে। তারা বহু আদরে বেঁচে থাকার কায়দা শেখায় বাচ্চাদের। একবার গল্প বলতে বলছে এক মহাপতঙ্গের কথা বলে। দেখতে ফড়িংয়ের মতো মহা সেই প্রাণি ভোঁ ভোঁ শব্দ করে এসেছিল। সেইবার বন্যায় দুর্গত দো-পেয়ে দৈত্য অর্থাৎ মানুষকে তারা বস্তা করে শস্য দিয়ে গিয়েছিল। উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছিল নিরাপদ স্থানে। খরা বন্যায় দো-পেয়ে দৈত্য, পশু-পাখি অনাবৃষ্টির দেশে যায়। আবার ফিরেও আসে। কিন্তু চড়ুই দম্পতি কোথাও যায় না। এমন সময় আবার আকাশে দেখা যায় মহাপতঙ্গের। পুরুষ চড়ুই ঘরে ছোট ছোট বাচ্চা আর স্ত্রীকে রেখে বের হয় খাদ্যের খোঁজে। এই বারে দেখে মহাপতঙ্গের ভিন্নরূপ। দো-পেয়ে দৈত্য দ্বারা চালিত মহাপতঙ্গ বড় বড় ডিমের মতো কি যেন ফেলে। এ (বোম) বড় বড় ডিম ফেটে চৌচির হয়ে যায় (দো-পেয়ে দৈত্য) এর ঘরবাড়ি, গাছ-পালা প্রান্তর। হারিয়ে যায়। চড়ুইয়ের সুখের সংসার। পুরুষ চড়ুই মানুষের জয়গান করেছিল এক সময়। আর সেই মানুষের কারণেই তৈরি হয়েছে হত্যা, ধ্বংস যজ্ঞের। আর্তচিৎকারে ফেটে পড়ে চড়ুই পাখিটি। ছি ছি শব্দ তোলে গণহত্যাকারী দো-পেয়ে দৈত্যদের বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত এই দুটি প্রয়োজনাই সংস্কার নাট্যদলের কর্মশালা প্রযোজনা। নাটক দু’টির ব্যাপ্তি বিরতিসহ ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট। সবকিছু ঠিক থাকলে জুলাইর মাঝা-মাঝি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে নাটক দুটির মঞ্চায়ন হবে।
