ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

’০৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তালুকদার আবদুল খালেক দৃশ্যমান অনেক উন্নয়ন করেছিলেন

উন্নয়নের পক্ষে রায় ॥ কোন্দল না থাকায় খুলনা সিটি নির্বাচনে সুফল পেল আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৭ মে ২০১৮

উন্নয়নের পক্ষে রায় ॥ কোন্দল না থাকায় খুলনা সিটি নির্বাচনে সুফল পেল আওয়ামী লীগ

শাহীন রহমান/অমল সাহা ॥ খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় কোন্দল না থাকার সুফল পেয়েছে আওয়ামী লীগ। এই একমাত্র সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিশাল ব্যবধানে তারা জয়লাভ করতে পেরেছে। এছাড়াও নগরীকে উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে আওয়ামী লীগের পক্ষে নামাতেও তারা সক্ষম হয়েছে। সর্বোপরি আগের মেয়াদে তালুকদার আব্দুল খালেক মেয়র থাকাকালে যেসব দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছিল, পরবর্তীতে সেভাবে কোন কাজ না হওয়ার বিষয়টিও ভোটাররা বিবেচনায় নিয়েছেন। অপরদিকে এই নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর দলগত সংহতির অভাব ছিল। তার দলের মেয়র থাকার পরও নগরীর কাক্সিক্ষত উন্নয়ন না হওয়া, দলের অন্তর্কলহসহ বিভিন্ন কারণ মঞ্জুর পরাজয়ের নেপথ্যে কাজ করেছে বলে ফল বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ফল বিশ্লেষণ এবং ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ২০০৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তালুকদার আব্দুল খালেক নগরীর অনেক দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছিলেন। কিন্তু দলীয় কোন্দলের কারণে তাকে ২০১৩ সালে পরাজয় বরণ করতে হয়। কিন্তু ২০১৩ সালে বিএনপি প্রার্থী মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলেও গত পাঁচ বছরে দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি। ফলে ভোটাররা উন্নয়নের পক্ষেই তাদের রায় দিয়েছে। এছাড়াও নির্বাচনী প্রচারে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নগরীর উন্নয়নের ওপর জোর দিয়ে প্রচার চালান। কিন্তু বিএনপি প্রার্থী এই ইস্যুটার ওপর কোন জোর দেননি। তিনি দলীয় চেয়ারপার্সনের মুক্তি এবং জাতীয় রাজনীতির ওপর বেশি জোর দেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের অত্যাচার নির্যাতন নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়রানির বিষয়টি তুলে ধরেছেন। কিন্তু জনগণ খুলনা নগরীর উন্নয়নের বিষয়কেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। মঙ্গলবার খুলনা সিটি নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। এর আগেও মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলেও এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অংশ নেন তিনি। কিছু অভিযোগ থাকলেও খুলনা সিটি নির্বাচন হয়েছে অবাধ সুষ্ঠু সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন। বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ ওঠেনি। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে বরাবরই এ নির্বাচন নিয়ে কারচুপির অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তবে তাদের অভিযোগ সুনির্দিষ্ট নয় বলেও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে তা নাকচ করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন স্বাভাবিকভাবেই সবার কাছেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সিটি নির্বাচন হলেও এ নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের একটি আবহ কাজ করছিল। তাই তারা এটিকে ব্যক্তিগত জয়-পরাজয় হিসেবে না দেখে দলীয় জয়-পরাজয় হিসেবে চিন্তা-ভাবনা করেছে। এর প্রভাবও আগামী নির্বাচনে পড়বে বলে তারা মনে করে। এ কারণেই মঙ্গলবারের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পর ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত দেশের মানুষের নজর ছিল খুলনা সিটি নির্বাচন ঘিরে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি উভয় পক্ষই বিজয়ের বিষয়ে প্রায় শতভাব নিশ্চিত ছিল। শেষ পর্যন্ত প্রায় ৬৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বিএনপি প্রার্থীকে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মতো এই সিটির নগরপিতা হিসেবে জনরায় পেয়েছেন। সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়লাভে দলের পক্ষে যেন আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে বিএনপি শিবিরে অনেকটাই হতাশা বিরাজ করছে। কারণ নির্বাচনকে তারা জাতীয় নির্বাচনের প্রতিচ্ছবি হিসেবে চিন্তা-ভাবনা করছেন। যদিও পরাজয়ের পর বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ করে ফলাফল তারা প্রত্যাখ্যানও করেছেন। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ভোট-ডাকাতি, ভোট-সন্ত্রাস, জাল ভোট, ভোটকেন্দ্র দখল, অবৈধ অস্ত্রের আস্ফালন ছাড়া আওয়ামী লীগের বিজয়নিশানে হাওয়া লাগে না। খুলনা সিটি নির্বাচনে নিরস্ত্র ভোটারদের ওপর অবৈধ সরকারের অবৈধ ক্ষমতা প্রদর্শন হয়েছে। আর দলের মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন খুলনাতে কোন ভোটই হয়নি। অপরদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন থেকে শিক্ষা না নিলে বিএনপিকে সামনে আরও বড় ধরনের পরাজয়ের মুখোমুখি হতে হবে। বিএনপির সামনে আরও বড় হার রয়েছে। খুলনা থেকেই তাদের শিক্ষা নিতে হবে উল্লেখ করেন। এদিকে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ পরস্পরকে দোষারোপ করলেও নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো মনে করছে খুলনা সিটি নির্বাচনে কিছুটা অনিয়ম হলেও তা ফলাফল বদলের মতো নয়। তারা বলেন, নির্বাচনে যে অনিয়ম লক্ষ্য করা গেছে তা না হলেও ফলাফল একই হতো। এ নির্বাচনে বিভিন্ন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রায় ২শ’ পর্যবেক্ষক সকাল থেকে নির্বাচন শেষ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাদের একটি সংস্থার নাম ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ বা ইডব্লিউজি। নির্বাচন শেষে বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পর্যালোচনা তুলে ধরেন। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মোঃ আব্দুল আলীম বলেন, ‘খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন কিছু বিচ্ছিন্ন সহিংসতা এবং নির্বাচনী অনিয়মের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও বেশকিছু কেন্দ্রে নির্বাচনী ফলাফল পরিবর্তনের জন্য সহিংসতা ও নির্বাচনী অনিয়ম করার প্রচেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বিচ্ছিন্ন ওই সব ঘটনার ব্যাপকতা বেশি না হওয়ায় তা ভোটের ফলাফল পরিবর্তনে কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। অর্থাৎ তার বক্তব্য অনুযায়ী, কোন অনিয়ম না হলেও তালুকদার খালেকই বিজয়ী হতেন। তবে বিএনপি ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ আনলেও নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় এবং বিএনপির পরাজয়ে নেপথ্যে অনেকগুলো কারণ বিশ্লেষণে উঠে এসেছে। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর পথে ঘারে বিভিন্ন চায়ের স্টলে নির্বাচনের জয়-পরাজয় নিয়ে নানা মহলে আলোচনা পর্র্যালোচনা হচ্ছে। এসব আলোচনায় এতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বিজয়ী হওয়ার পেছনে কয়েকটি বিষয় উঠে আসছে। তারা মনে করেন, প্রথমত দলগতভাবে সংঘবদ্ধ ছিল আওয়ামী লীগ। নগরীকে উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীও পক্ষে নামাতে সক্ষম হয়েছে। বিএনপির দুর্বল জায়গাগুলো সফলভাবে নিজেদের কাজে লাগাতে পেরেছে। সর্বোপরি আগের মেয়াদে তালুকদার আব্দুল খালেক মেয়র থাকাকালে যেসব দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছিল, পরবর্তীতে সেভাবে কোন কাজ না হওয়ার বিষটিও ভোটাররা বিবেচনায় নিয়েছেন। অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর দলগত সংহতির অভাব ছিল। তার দলের মেয়র থাকার পরও নগরীর কাক্সিক্ষত উন্নয়ন না হওয়া, দলের অন্তর্কলহ প্রভৃতি কারণে মঞ্জু জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারেননি। তারা বলেন, ২০০৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তালুকদার আব্দুল খালেক নগরীর অনেক দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছিলেন। এরপরও ২০১৩ সালের নির্বাচনে তালুকদার আব্দুল খালেককে পরাজয় বরণ করতে হয়। দলের মধ্যে অনৈক্য হেফাজত ইস্যুসহ নানা কারণে গত নির্বাচনে তিনি জয়ী হতে পারেনি। মেয়রের পদে তার ধারাবহিকতা না থাকায় যে ক্ষতি হয়েছে তা ঘর থেকে রাস্তায় বের হওয়ার পর নগরবাসী মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছে। তাই এই নির্বাচনে তার প্রত্যাবর্তনটা নগরীতে বসবাসকারী সাধারণ মানুষও মনেপ্রাণে চেয়েছিল। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও তারা দলের নেতারা উন্নয়নের বিষয়টিতে অত বেশি জোর দেননি, যতটা জোর দিয়েছেন দলের চেয়ারপার্সনের মুক্তি ও জাতীয় রাজনীতির বিষয় নিয়ে। দলীয় কোন্দল ওপর থেকে ছাই চাপা দেয়া হয়েছে। নানা বিষয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে। ভোট কেন্দ্র পাহারা দেয়ার কথা বলা হয়েছে, রাজপথে থাকার হুঙ্কার দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেভাবে দলীয় শক্তি সঞ্চয় করতে পারেনি। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সক্রিয় রাখতে পারেনি। ২০১৩ সালের মতো দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীরা মেয়র প্রার্থীর জন্য যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন না, যতটা নিজের জন্য চেষ্টা করেছেন। যদিও বিএনপির অভিযোগ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, পুলিশের নানা রকম হয়রানি এবং শাসক দলের লোকেরা ভোট কেন্দ্র দখল করে নিয়ে প্রার্থীকে জিততে দেয়নি। কিন্তু নির্বাচন পরবর্তী পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৩ সালের নির্বাচনের পরাজয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার আওয়ামী লীগ অনেক বেশি সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে ভোট যুদ্ধে নেমেছিল। কেন্দ্রীয়ভাবে কঠোর হস্তক্ষেপের কারণে কোন প্রকার বিভাজন বা গ্রুপিংই সক্রিয় ছিল না এবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। তাকে বিজয় করতে এক সূত্রে কাজ করার জন্য কেন্দ্রের চাপও ছিল। যে কারণে অতীতের সব পর্যায়ের গ্রুপিং মিটিয়ে স্থানীয় সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়। দলীয় বিভাজন নিরসনে কেন্দ্র থেকে যথাযথ মনিটরিং করা হয়। এ নির্বাচনে উন্নয়ন প্রচারকে প্রধান্য দিয়ে জনসম্পৃক্ততা তৈরি করা হয়। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ তালুকদার আব্দুল খালেক সমর্থন জানায়, তারা দ্বারে দ্বারে গিয়ে নৌকায় ভোটও চান। গত নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী তালুকদারের সঙ্গে ছিলেন না দলের অনেক কাউন্সিলর প্রার্থী। তারা নিজের প্রচার চালিয়েছিলেন। এবার ছিল বিপরীত চিত্র। দলীয় কাউন্সির প্রার্থীরা নৌকার জন্যও ভোট চেয়েছেন। নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, এবারের নির্বাচনে দলীয় সকল স্তরের নেতাকর্মীরা এক কাতারে ছিলেন। সবাই এক হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। যা উল্লেখ করার মতো। দলীয় কর্মীরা তৃণমূলে জনতার সঙ্গে মিশে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এর ফলে গণমানুষের ভোট আওয়ামী লীগ পেয়েছে। তিনি নগরবাসী, দলের নেতাকর্মীসহ যার যার অবস্থানে থেকে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন তাদেও সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর পরাজয়ের পেছনে অন্যতম কারণ ছিল দলীয় অন্তর্কলহ। খুলনায় এই দলটি কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত। কোন্দল নিরসনে কেন্দ্র থেকে চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সফলতা তেমন পেয়েছেন বলে কার্যক্ষেত্রে তা দেখা যায়নি। বিগত দিনের উন্নয়ন বঞ্চনার প্রচারের যুক্তিসঙ্গত জবাবও দিতে পারেননি এই দলের নেতারা। জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা এক সময় নজরুল ইসলাম মঞ্জু গ্রুপের সঙ্গে ছিলেন। বিপরীতে ছিলেন আলী আজগর লবি গ্রুপ। পরবর্তীতে শফিকুল আলম মনা তার অনুসাসীদের নিয়ে আলাদাভাবে চলতে থাকেন। নগর বিএনপির কোষাধ্যক্ষ আরিফুর রহমান মিঠুর সঙ্গেও মঞ্জুর বিরোধ তৈরি হয়। মিঠুকে বহিষ্কার করা হলে তিনি পাল্টা একটি গ্রুপ তৈরি করেন। নির্বাচন প্রচারের শুরুতে অবশ্য মনাকে প্রধান এজেন্ট করা হয়। লবী গ্রুপের নেতাকর্মীরা মাঠে প্রকাশ্যে না থাকাটা ছিল চোখে পড়ার মতো। এ ছাড়া এবারের নির্বাচনে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা সংঘবদ্ধ ভোট চাওয়ার চেয়ে একক ভোট পেতে তৎপর ছিলেন। অধিকাংশ প্রার্থী বাড়ি গিয়ে নিজের জন্যই ভোট চেয়েছেন। নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বর্তমান মেয়র মনিরুজ্জামান মনি বিধি নিষেধের কারণে প্রকাশ্যে মেয়র প্রার্থী পক্ষে অবস্থান নিতে পারেননি। কার্যক্রমে তার অনুপস্থিতি তৃণমূলের কর্মী সমর্থক ও জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আর নির্বাচিত হওয়া নিয়ে বিএনপি নেতাদের অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাস ছিল। ফলে অনেক কাজই করার কথা তারা চিন্তায় নিতে পারেননি। তবে দলীয় অনৈক্য ছিল না দাবি বিএনপি নেতাদের। তাদের অভিযোগ আওয়ামী লীগ পুলিশ দিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করিয়ে জনমনে ভীতি তৈরি করেছে। পুলিশের সহায়তায় ভোট কেন্দ্র দখলে নিয়ে তাদের কর্মীদের মেরে তাড়িয়ে দেয়া হয়, ব্যালট কেড়ে নিয়ে নৌকায় ছিল দিয়ে বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। ব্যাব, বিজিবি সদস্যরা মাঠে থাকলেও নির্বাচন কমিশনে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেয়ার পরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ভোটে ধানের শিষ প্রতীকে যে ভোট পেয়েছে তা ছিল বেলা ১১টার মধ্যের চিত্র। এরপরই চিত্র পাল্টে গেল। বিএনপির ভোট ব্যাংকে নৌকার আঘাত হল। বিএনপির কর্মীরা সুসংগঠিত ছিল। তাদের কাজ করতে বাধা দেয়া হয়েছে।
×