ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বড় পুকুরিয়ার উত্তরে উন্মুক্ত খনি করা সম্ভব

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৪ মে ২০১৮

 বড় পুকুরিয়ার উত্তরে উন্মুক্ত খনি করা সম্ভব

রশিদ মামুন ॥ বড় পুকুরিয়ার উত্তরে উন্মুক্ত খনি করা সম্ভব। ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) খনির পানি ব্যবস্থা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। জ্বালানি বিভাগের নির্দেশনায় এখন পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে বড় পুকুরিয়া খনি কর্তৃপক্ষ (বিসিএমসিএল)। বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা উত্তোলন নিয়ে সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগে একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে জানানো হয়েছে এখন খনির তৃতীয় স্তর থেকে কয়লা আহরণের কাজ চলছে। কিন্তু ভূতাত্ত্বিক জটিলতা এবং কারিগরি সীমাবদ্ধতায় খনির চতুর্থ স্তর থেকে কয়লা তোলা দুরূহ হবে। এজন্য খনির উত্তর এবং দক্ষিণাংশ থেকে কয়লা তোলা জরুরী বলে মনে করা হচ্ছে। বিসিএমসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহম্মাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, আইডব্লিউএম যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে খনি করলে পানি ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব। তিনি বলেন, জ¦ালানি বিভাগে বৈঠকে পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষার কথা আলোচনা হয়েছে। এখন পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষার জন্য নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। আমরা সমীক্ষা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি জানান, বড় পুকুরিয়ার উত্তরে ১০০ মিটার নিচেই কয়লা রয়েছে। তবে এখানকার ঘনবসতি এবং উচ্চফলনশীল জমি প্রাপ্তিকেই খনি করার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন তিনি। জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, খনির তৃতীয় স্তর থেকে কয়লা তোলার কাজ চলছে। গত বছর ১১ আগস্ট যে চুক্তি সই হয়েছে তার আওতায় ৪ বছরে তিন দশমিক ২০৫ মিলিয়ন মে.টন কয়লা তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এখন পর্যন্ত ছয় লাখ ৫৮ হাজার মে.টন কয়লা তোলা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব বলে জ্বালানি বিভাগকে বিসিএমসিএল জানিয়েছে। এর আগে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনকে প্রধান করে গঠিত একটি কমিটি বড়পুকুরিয়ার উত্তরে উন্মুক্ত খনি করা সম্ভব বলে জানিয়েছিল। যদিও সরকার কয়লা তোলার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত না দেয়ায় ওই প্রতিবেদন নিয়ে আর কাজ করা হয়নি। এরমধ্যে খনি করলে পানি ব্যবস্থাপনায় কোন সমস্যা তৈরি হবে কি না তা নিয়ে ওয়াটার মডেলিংকে গবেষণার দায়িত্ব দেয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন উন্মুক্ত খননে সর্বোচ্চ ৯৫ ভাগ কয়লা উত্তোলন করা যায়। আর সুড়ঙ্গ পদ্ধতিতে এখন ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ কয়লা তোলা যায়। তবে উন্মুক্ত খনি হলে পানি ব্যবস্থাপনা, পুনর্বাসন এবং অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা যাচাই করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ জরুরী বলে মনে করা হয়। উত্তর বড়পুকুরিয়াতে উন্মুক্ত খনি করা গেলেও সুড়ঙ্গ পদ্ধতিতেই বড়পুুকুরিয়ার দক্ষিণাংশ থেকে কয়লা তোলা হবে। এখন যার সমীক্ষা চলছে। আগামী আগস্টে ওই সমীক্ষার কাজ শেষ হবে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত এর আগে ফুলবাড়িতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তোলার চেষ্টা করে এশিয়া এনার্জি। তখন বিদ্রোহে প্রাণঘাতী সংঘাতে রূপ নিলে সরকার ফুলবাড়ি থেকে পিছু হটে।
×