ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্যাটেলাইট আগে ঘুরুক তারপর দেখা যাবে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৩ মে ২০১৮

স্যাটেলাইট আগে ঘুরুক তারপর দেখা যাবে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মালিকানা ২ ব্যক্তির হাতে এবং তাদের কাছ থেকে অন্যদের কিনে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। তবে স্যাটেলাইটের মালিকানা কোন ২ ব্যক্তির হাতে তাদের পরিচয় তিনি প্রকাশ করেননি। এদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে সোমবার সারাদেশে বিক্ষোভ করবে বিএনপি। নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচী ঘোষণা করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করতে তিনি কারাগারে বন্দী। ইতোমধ্যেই খালেদা জিয়া দলের চেয়ারপার্সন হিসেবে ৩৪ বছর পূর্ণ করেছে। এই ৩৪ বছর পূর্ণ হওয়ার দিনটিতেও তিনি কারাগারে। তার মতো ত্যাগী গণতান্ত্রিক নেতা আর আমাদের দেশে নেই। মির্জা ফখরুল বলেন, স্যাটেলাইট মহাকাশে গেছে, আগে ঘুরুক। পৃথিবীর চারপাশে পরিক্রম করুক, তারপর দেখা যাবে। তবে এর মালিকানা চলে গেছে দুই ব্যক্তির কাছে। তাদের কাছ থেকে টাকা দিয়ে কিনতে হবে। সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা তো সংসদে নির্বাচিত নন। এসব চুক্তি করার অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে। তবে আমি এই চুক্তি নিয়ে কিছু বলব না, কারণ এখনও দেখিনি। ফখরুল বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল, চুক্তি করে একটা লোকও এখন পর্যন্ত পাঠানো যায়নি। ভারতের সঙ্গে পাঁচটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের খবর গণমাধ্যমে দেখার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের পক্ষে যত চুক্তি করেন প্রধানমন্ত্রী সেই চুক্তি তো জনগণের চুক্তি নয়। যেটা আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার সেই তিস্তার পানি চুক্তি এখন পর্যন্ত হয়নি। এত ভাল বন্ধু তারা, তারপরও বছরের পর বছর কিছুই হয়নি। দেশ কে চালাচ্ছে এমন প্রশ্ন করে তিনি বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী মঞ্জু সাহেব অভিযোগ করেছেন তার একজন এজেন্টও কাজ করতে পারছে না। যাকেই নির্বাচনে এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হচ্ছে তিনি বাসায় থাকতে পারছেন না। তাহলে নির্বাচনটা কীভাবে হবে? নির্বাচন কমিশন (ইসি) বলছে এখন পর্যন্ত সবকিছু ঠিক আছে। এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে সেনা মোতায়েন করতে হবে। ফখরুল বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন যেদিন স্থগিত করল হাইকোর্ট সেদিন আমাদের দলের নেতা নোমান সাহেব গিয়েছিলেন গাজীপুরে। তাকে সেখানে আটক করে পুলিশ। তাকে গলা ধাক্কা দিয়ে গাড়ির মধ্যে তুলেছে। এরপর বিএনপির মেয়র প্রার্থীর বাড়ি ঘিরে ফেলে ডিবি পুলিশ। নির্বাচন কমিশনারকে ফোন করেছিলাম। তিনি বললেন, আমি কিছু বলতে পারছি না। সরকারের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি বললেন, এগুলো যারা করে তারা অতি উৎসাহী। ইসির সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধিদের যেদিন বৈঠক ছিল সেদিন বলা হয়েছিল গাজীপুরের এসপি হারুনকে প্রত্যাহার করার জন্য। কিন্তু প্রত্যাহার তো করেইনি, বরং আরও ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আবদুল মান্নান মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ড্যাবের মহাসচিব এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ড্যাব নেতা রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, অধ্যাপক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতার হোসেন খান, শেরে বাংলানগর কৃষি বিশ্ববিদ্যলয়ের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু প্রমুখ। সোমবার সারাদেশে বিক্ষোভ করবে বিএনপি ॥ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে সোমবার সারাদেশে বিক্ষোভ করবে বিএনপি। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচী ঘোষণা করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দেশব্যাপী থানা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তাদের সুবিধা মতো সময়ে এ কর্মসূচী পালন করবে। রিজভী বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা সন্দেহজনক। তিনি বলেন, কেসিসি নির্বাচন নিয়ে ইসি উদাসীন। মনে হচ্ছে এ নির্বাচনে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও নির্বাচন কমিশন একই টিমে খেলছে। প্রধানমন্ত্রীর একজন আত্মীয় ও সরকার দলীয় এমপি দলবলসহ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে খুলনায় অবস্থান করে বিএনপি নেতাদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। প্রতিদিনই তিনি প্রশাসন ও পুলিশসহ নানা শ্র্রেণীর মানুষদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করছেন। রিজভী বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে ভোটার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলেও, নির্বাচনী এলাকায় সরকারের অনাচারের এক ভয়ানক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি প্রিজাইডিং অফিসারদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করছে সাদা পোশাকধারী পুলিশ। খুলনায় নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের ভয়মুক্ত পরিবেশ তৈরির জন্য নির্বাচনের আগে সেনা মোতায়েনের দাবি জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
×