ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পেঁয়াজ ও মুরগি ছাড়া ভোগ্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১২ মে ২০১৮

পেঁয়াজ ও মুরগি ছাড়া ভোগ্যপণ্যের বাজারে  স্বস্তি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শুধু পেঁয়াজ ও মুরগি ছাড়া রমজানে ব্যবহার হয় এমন সব ভোগ্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি রয়েছে। অথচ পেঁয়াজের কোন সঙ্কট নেই দেশে, ব্রয়লার মুরগির উৎপাদনও ভাল। রমজান সামনে রেখে অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। আগে দৈনিক ২০-২৫ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হলেও এখন গড়ে ৫০-৬০ ট্রাক আমদানি হচ্ছে। ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতিকেজি আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৩৫-৪০ এবং দেশী পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা টিসিবি বলছে, আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৩০-৩৫ এবং দেশীটি বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়। শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তানবাজার, কাওরানবাজার, ফকিরাপুল কাঁচাবাজার, ফার্মগেট কাঁচাবাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, মাছ, মাংস এবং ব্রয়লার মুরগির দোকানে ভিড় বেশি। মুদি দোকান থেকে রমজানে ব্যবহার হয়, বিশেষ করে ছোলা, চিনি, ভোজ্যতেল, ডাল ও পেঁয়াজসহ বিভিন্ন মসলা জাতীয় পণ্য বেশি কিনছেন ভোক্তারা। রোজা সামনে রেখে ভোক্তাদের এই প্রস্তুতি। পুরান ঢাকার কাপ্তানবাজারে এসেছেন স্বামীবাগের আসাদুজ্জামান মিয়া। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, রমজান কেন্দ্র করেই সব ধরনের ভোগ্যপণ্য সামগ্রী কেনাকাটা করা হচ্ছে। তবে বাজারে পেঁয়াজ ও মুরগির দাম চড়া। এছাড়া গরু, খাসির মাংস এবং মাছের দামও অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, তবে এবার এখন পর্যন্ত চিনি, ছোলা, ডাল, ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়েনি। এছাড়া বোরো কাটা শুরু হওয়ায় কমছে মোটা চালের দাম। বাজারে এক ধরনের স্বস্তি বিরাজ করছে। এদিকে, কারওয়ান বাজারের মুরগির দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি ১৫৫ টাকা থেকে ১৬০ টাকায়, লেয়ার মুরগি ২০০ টাকায় এবং পাকিস্তানী কর্ক মুরগি ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ওই বাজারের মুরগি বিক্রেতা রাশেদ হাসান বলেন, গত এক মাস ধরে মুরগির দাম বাড়তি। একটু একটু করে বেড়ে এখন সব ধরনের মুরগির দামই ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কারওয়ান বাজারে পটল ৩০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, বরবটি ৩৫ টাকা, ঢেঁড়শ ৩০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা দরে প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে। ফকিরাপুল বাজারের বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, এবার রোজায় অধিকাংশ মুদিপণ্যের দামই স্থিতিশীল। সবচেয়ে ভাল ছোলার দাম ৫ টাকা কমে ৭৫ টাকায় প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে চিনির দাম কেজিতে ২ টাকা বেড়ে এখন ৬০ টাকায় পৌঁছেছে। ভোক্তা স্বার্থে টিসিবির বিক্রি কার্যক্রম বাড়ানো প্রয়োজন ॥ শবে-বরাতের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ১৮৪ স্থানে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৩২ ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে। বিক্রি শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এসব পণ্য বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। তাই বিক্রি কার্যক্রমে পণ্যের পরিমাণ আরও বাড়ানোর তাগিদ রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। চিনি, মসুর ডাল, সয়াবিন তেল, ছোলা ও খেজুর বিক্রি করছে রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা টিসিবি। শুক্র ও শনিবার ছাড়া সপ্তাহের ৫ দিন নির্ধারিত স্থানে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। ভোগ্যপণ্য ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ে কাল বৈঠক ॥ রমজানে ভোগ্যপণ্যের মজুদ পরিস্থিতি, পণ্যের দাম, বাজার মনিটরিং এবং সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আগামীকাল রবিবার জরুরী বৈঠক আহ্বান করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে ঢাকাসহ সারাদেশে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
×