ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

২০ বছর আগের বিদ্যুত বিল পরিশোধের নোটিস!

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ৯ মে ২০১৮

২০ বছর আগের বিদ্যুত বিল পরিশোধের নোটিস!

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ৮ মে ॥ বাউফলে বিদ্যুত লাইন পিডিবি থেকে পল্লীবিদ্যুতের কাছে হস্তান্তর হওয়ার প্রায় ২০ বছর পর চলতি মাসে কয়েক হাজার গ্রাহকের কাছে ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মাসের বকেয়া দেখিয়ে বিল পরিশোধের নোটিস জারি করা হয়েছে। অন্যথায় বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে বলে নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে। নোটিস পেয়ে গ্রাহকরা লাইন বিচ্ছিন্ন করার আতঙ্কে ভুগছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। কয়েক গ্রাহক অভিযোগ করেন, ১৯৯৯, ২০০০ ও ২০০১ সালের বিভিন্ন মাসের সংখ্যা (যেমন জানুয়ারি-১, ফেব্রুয়ারি-২) উল্লেখ করে গ্রাহক ভেদে ২০০ টাকা থেকে ৫০-৬০ হাজার টাকা বকেয়া পরিশোধের জন্য তাদের কাছে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ২০০০ সালে পিডিবি থেকে বিদ্যুত লাইন পল্লী বিদ্যুতের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে গ্রাহকরা নিয়মিত বিল পরিশোধ করেও আসছে। অনেক গ্রাহকের কাছে পল্লীবিদ্যুত কর্তৃক বছর শেষে বিল পরিশোধের প্রত্যয়নপত্রও রয়েছে। এছাড়া বিগত বছরে গ্রাহকদের কাছে বিলি করা বিল কাগজে কখনও পিডিবির বিল পাওনা সংক্রান্ত কোন বকেয়ার কথাও উল্লেখ হয়নি। উপজেলার কালাইয়া মদন মোহন জিউর আখড়া বাড়ি মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার কর্মকার জানান, বাউফল পল্লীবিদ্যুত অফিসের ডিজিএম কর্তৃক স্বাক্ষরিত ২৮/০২/১৮ ইং তারিখের স্মারক নং ২৭.১২.০০০০.০১০.৪৮.১৩১.১৩.২৪২, উল্লেখ করা এক নোটিসে বলা হয়েছে, ২০০১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সংযোগটি পিডিবি থেকে অধিগ্রহণ করা হয়। অধিগ্রহণের পর পিডিবি কালীন ২০০০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর ৬ মাস এবং ২০০১ সালের জানুয়ারি মাস মোট ৮ মাসে ৫৬ হাজার ২৩৪ টাকা বকেয়া রয়েছে। অবিশ^াস্য বিপুল পরিমাণ অঙ্কের বকেয়া বিল দেখে মন্দির কর্তৃপক্ষ হতবাক। মন্দিরের কোষাধ্যক্ষ গোপাল দেবনাথ জানান, পিডিবি আমলে মন্দিরে মাসে ১০০ টাকাও বিল হতো না। এছাড়া মন্দিরের বিলও নিয়মিত পরিশোধ করা হয়েছিল। এ বিলতো ভৌতিক ও অকল্পনীয়। এ রকম বহু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নামে নোটিস দেয়ায় এখন তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। নোটিসপ্রাপ্ত বহু গ্রাহক জানান, ১৯৯৯ সালের পর সিডর এবং আইলার মতো একাধিক ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে। ওই দুর্যোগে বাড়িঘরসহ প্রাণ ও সম্পদহানি হয়েছিল। এরপর অনেক নতুন বাড়িঘর ও প্রতিষ্ঠান নির্মিত হয়েছে। এছাড়া নোটিসপ্রাপ্তদের মধ্যে অনেকে মারাও গেছেন। কারও পক্ষেই ওই সময়ের পরিশোধিত বিদ্যুত বিলের কাগজ সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব নয়। জনগণের কথা বিবেচনা করে বিষয়টি নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে নোটিস প্রাপ্তগণ আশা করেছেন। বাউফল পল্লীবিদ্যুত অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) একে আযাদ জানান, বকেয়ার কারণে অডিট আপত্তি হয়েছে। ফলে বকেয়া পরিশোধের নোটিস দেয়া হয়েছে। নোটিসে উল্লেখ করা টাকার পরিমাণ নিয়ে সংশয় রয়েছে এবং এত বছর পর কেন নোটিস দেয়া হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের বিষয়।
×