স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান এখন তুষার ইমরান। ১০ হাজারের (১০৪১৮ রান) বেশি রান করেছেন। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এমন মাইলফলক গড়েছেন তুষার। আবার ২৮টি সেঞ্চুরি করেছেন। যা বাংলাদেশের প্রথম কোন ব্যাটসম্যান প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এত বেশি সেঞ্চুরি করে দেখালেন। এত রান, এত সেঞ্চুরির পরও ২০০৭ সালের জুলাইয়ে সর্বশেষ টেস্ট খেলা তুষারের ভাগ্যে টেস্ট খেলা জুটছে না। বিসিএলের চতুর্থ রাউন্ডে টানা দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির পর প্রশ্নটি আরও বেশি করে উঠছে, তাহলে কী তুষার এবার টেস্ট দলে সুযোগ পাবেন? তুষারই বা ভাবছেন কী? তুষার টেস্টে ফিরতে প্রস্তুত। তা জানিয়ে দিয়েছেন।
গণমাধ্যমকে তুষার বলেন, ‘আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। আর প্রমাণের একটাই জায়গা ঘরোয়া ক্রিকেটে। আমি এখানে সুযোগ পাচ্ছি, ভাল করে যাচ্ছি, ইনশাল্লাহ সামনেও করব। যদি নির্বাচকরা মনে করে এটা এনাফ, আমাকে নিতে চায়, আমি প্রস্তুত আছি।’ কিন্তু কিভাবে? তুষার খেলেন মিডলঅর্ডারে। বাংলাদেশ দলে এ পজিশনে আছেন মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ওপেনিংয়ের পর চারটি পজিশনের একটিতে আছেন মুশফিকুর রহীমও। সবাই ভাল করছেন। একটি দলেও পরিণত হয়ে গেছে। এরমধ্যে নতুন কাউকে কী ঢোকানো সম্ভব? তুষারও তা ভাল করেই বোঝেন। দলে এখন ঢুকতে হলে যে এ ব্যাটসম্যানদের বিট করতে হবে। হার মানাতে হবে। কিংবা এ ব্যাটসম্যানদের কাউকে ধারাবাহিক খারাপ করতে হবে। তুষার তাই জানালেন, ‘এখন যে দলটা খেলছে বাংলাদেশের হয়ে, ভেরি ডিফিকাল্ট এদের বিট করা। অনেকদিন ধরেই এক সঙ্গে খেলে যাচ্ছে। আমি আমার মতোই চেষ্টা করছি, কাউকে বিট করা যায় কি না। লাইক আমি যে পজিশনে ব্যাট করি সে পজিশনে মুশফিক আছে, রিয়াদ আছে, সাকিব আছে, তারপর মুমিনুল আছে। এরাতো জাতীয় দলের হয়ে ধারাবাহিক পারফর্মেন্স করে যাচ্ছে। আমি হয়তো ঘরোয়া ক্রিকেটে করে যাচ্ছি। আমাকে নিয়ে যদি চিন্তা-ভাবনা করে, আমি ওইভাবেই চেষ্টা করে যাচ্ছি ১০০% দেয়ার জন্য। আমি যে জায়গায় ব্যাট করি সে জায়গাটা আসলে অনেক টাফ। ওদের বিট করতে হলে হয়তো আরও অনেক বেশি রান করতে হবে।’
২০০২ সালে টেস্ট অভিষেক হয় তুষারের। বছরটিতে তিন টেস্ট খেলেন। এর তিন বছর পর ২০০৫ সালে আরও একটি টেস্ট খেলেন। এর প্রায় দুই বছর পর আরেকটি টেস্ট খেলেন তুষার। মোট পাঁচ টেস্ট খেলেন। ৮.৯০ গড়ে ৮৯ রান করেন। সর্বোচ্চ ইনিংস রান ২৮। এমন পারফর্মেন্সের পর স্বাভাবিকভাবেই দলে টিকে থাকার কথা নয়। তাই প্রায় ১১ বছর আগে যে বাদ পড়েছেন, আর দলে ঢোকার সুযোগ হয়নি। কেন? তুষার জানান, ‘টেস্ট ম্যাচ খেলতে গেলে অভিজ্ঞতা লাগে, এখন যেটা আমি ফিল করি। হয়তো বা যারা আর্লি শুরু করেছে টেস্ট ম্যাচ তারাও হয়তো আজ থেকে ৫/৬ বছর পর ফিল করবে টেস্ট ম্যাচটা আসলে ২৭/২৮ বছর বয়সেই খেলা উচিত।’
টেস্ট খেলতে হলে যে ফিটনেসটাও খুব জরুরী, তাও বুঝিয়ে দেন তুষার। এবার বিসিএলে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৪টি সেঞ্চুরিসহ ১১১.৬০ গড়ে সর্বোচ্চ ৫৫৮ রান করা তুষার বলেন, ‘আপনি যখন রান করতেন তখন এক্সট্রা ফিটনেস নিয়ে কাজ করা লাগে না। যখন ইনজুরিতে পড়েন তখনই ফিটনেসে ঘাটতি দেখা যায়। আমি ২২ গজে রান করে যাচ্ছি। ফিটনেস আলহামদুলিল্লাহ্ আগের চেয়ে ভাল। আর চেষ্টা করে যাচ্ছি আরও কিভাবে নিজেকে ফিট রাখা যায়।’ তুষার শুধু নিজের জাতীয় দলে ঢোকা নিয়ে ভাবছেন তা নয়। সিনিয়রদের পরীক্ষায় ফেলে সুযোগ করে দেয়া উচিত; তাও ভাবছেন। সর্বশেষ পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষে ম্যাচটিতে যে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করলেন দক্ষিণাঞ্চলের তুষার, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু তা দেখেছেন। কিন্তু কোন কথা হয়নি জানিয়ে তুষার বললেন, ‘এ ধরনের কোন আলাপ হয়নি, হ্যাঁ নান্নু ভাই ছিলেন ওইখানে।
পুরো ম্যাচ উপভোগ করেছেন। যদি প্রয়োজন মনে করে ফাইনাল পরীক্ষা দেয়ার আগে একটা টেস্ট দেয়া উচিত, তাহলে এ দলের সফর আছে সামনে এবং শ্রীলঙ্কা এ দল আসবে সামনে। তো যারা সিনিয়র আছে শাহরিয়ার নাফীস, নাঈম ইসলাম এবং (আব্দুর রাজ্জাক) রাজেরও সুযোগ আসতে পারে। আলোক কাপালী আছে। এদের যদি সুযোগ হয় এ দলে তাহলে সেখানে পারফর্ম করেই জাতীয় দলে জায়গা নিতে প্রস্তুত আছে সবাই।’
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: