ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপিকে ধ্বংস করার চক্রান্তে খালেদা জিয়াকে বন্দী করা হয়েছে

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৬ এপ্রিল ২০১৮

বিএনপিকে ধ্বংস করার চক্রান্তে খালেদা জিয়াকে  বন্দী করা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হলেও তাকে কোন চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। রবিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি করেন রিজভী আহমেদ। রিজভী বলেন, সরকারী মেডিক্যাল বোর্ড খালেদা জিয়ার এক্স-রে ও রক্ত পরীক্ষা করে ফিজিওথেরাপির সুপারিশ করেছে। একজন বয়স্ক মানুষ যিনি দীর্ঘদিন ধরে হাঁটু ও চোখের সমস্যায় ভুগছেন, তাকে কারাগারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখায় আরও বেশকিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার জন্যই তাকে পরিকল্পিতভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করা হয়েছে। আর এখন তাকে চিকিৎসার সুযোগও দেয়া হচ্ছে না। এটা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে বহুমুখী চক্রান্তের অংশ। খালেদা জিয়ার শারীরিক সমস্যার কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে এবং চোখের অপারেশনও হয়েছে। সরকারী মেডিক্যালের চিকিৎসক বোর্ড বলেছে তার এক্স-রে রিপোর্টগুলোতে দেখা যাচ্ছে ঘাড়ে ও কোমরের হাড়ে সমস্যা আছে। এমন অবস্থায় আধুনিক চিকিৎসার যুগে এমআরআইসহ উন্নত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া শুধুমাত্র এক্স-রে ও রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট ও সঠিক রোগ নির্ণয় সম্ভব নয়। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়াকে যেদিন বিএসএমএমইউ হাসপাতালে আনা হয়েছিল সেখানে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের ডাকা হলেও তাদের চিকিৎসা সেবা দেয়ার সুযোগ ও পরামর্শ নেয়া হয়নি। অথচ খালেদা জিয়াকে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা নেয়ার সুযোগ দেয়ার প্রয়োজন ছিল। বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী বলেন, কারাবন্দী খালেদা জিয়ার সঙ্গে আত্মীয়স্বজনদের দেখা করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেও প্রসঙ্গে টেনে রিজভী বলেন, শনিবার পহেলা বৈশাখের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, অশুভ শক্তি যেন আর ক্ষমতায় না আসতে পারে। তবে দেশের জনগণ এখন মনে করে দেশের সবচেয়ে বড় অশুভ শক্তি বর্তমান মহাজোট সরকার। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ। নতুন বছর হোক খালেদা জিয়ার বিজয়ের বছর- ড. মোশাররফ ॥ নতুন বছরে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে তার নেতৃত্বে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, আজকে আমাদের প্রত্যাশা নতুন বছর হোক খালেদা জিয়ার বিজয়ের বছর। শনিবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাসাস আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ড. মোশাররফ বলেন, আগামী এক বছর হোক মিথ্যার বিপরীতে সত্যের বছর, এ সরকারের গ্লানি মোচন করে গণতন্ত্রের বছর। আগামী বছর হোক জনগণের বিজয়ের বছর। তিনি বলেন, প্রতিবছর বৈশাখের এ অনুষ্ঠানে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকতেন। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই। তাকে মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে। আমরা যখন নতুন বছরকে বরণ করতে এসেছি, তখন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাধ্য হয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন। ড. মোশাররফ বলেন, দেশের গণতন্ত্র আজ সরকারের বাক্সে বন্দী। বর্তমান সরকার বলে দেশ নাকি উন্নয়নশীল হয়েছে, কিন্তু দেশে সাধারণ মানুষের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। মানুষের কোন উন্নতি হয়নি। উন্নয়ন যদি হয়ে থাকে তা আওয়ামী লীগের নেতা ও তাদের ঘরানার ব্যবসায়ীদের হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আবার গায়ের জোরে ক্ষমতায় আসার জন্য খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দী রেখেছে। জাসাসের সভাপতি ড. মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গাজী মাজহারুল আনোয়ার, জাসাস সহ-সভাপতি শায়রুল কবির খান, সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, বেবী নাজনীন প্রমুখ।
×