ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উৎসবমুখর পরিবেশে দুই সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল

প্রকাশিত: ০৮:২৪, ১৩ এপ্রিল ২০১৮

  উৎসবমুখর পরিবেশে দুই সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র  দাখিল

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ আগামী ১৫ মে অনুষ্ঠিতব্য খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য বৃহস্পতিবার মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া খুলনায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১৮৯ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৪৮ এবং গাজীপুরে কাউন্সিলর পদে ৩৮৫ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৯৭ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। খবর স্টাফ রিপোর্টারের পাঠানোÑ জানা গেছে, আগামী ১৫ মে অনুষ্ঠিতব্য খুলনা সিটি কর্পোরেশন (খুসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সদ্য পদত্যাগকারী সংসদ সদস্য, সাবেক সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এবং বিএনপির মনোনীত প্রার্থী খুলনা মহানগর কমিটির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু মনোয়নপত্র দাখিল করেছেন। মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার নগরীর নূরনগর এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে রিটার্নিং আফিসার মোঃ ইউনুচ আলীর কাছে তারা মনোনয়নপত্র জমা দেন। এছাড়া মেয়র পদে এদিন মনোনয়নপত্র জমা দেন জাতীয় পার্টির (এরশাদ) নগর শাখার সদস্য সচিব এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহানগর সভাপতি মাওলানা মুজাম্মিল হক। গাজীপুর ॥ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ছিল বৃহস্পতিবার। এদিন ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দলের নেতাকর্মী সমর্থকদের নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত মেয়র পদে ১০, সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের ১৯টি কাউন্সিলর পদের জন্য ৮৭ ও ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৯৪ প্রার্থীসহ মোট ৩৯১ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষদিনে সকাল থেকেই প্রার্থী, কর্মী ও তাদের সমর্থকদের গাড়ি ভাড়া করে লোকজন নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস জেলা শহরের রথখোলার বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামের দিকে ছুটতে থাকেন। এ সময় প্রার্থীদের ব্যানার, পোস্টার ও দলীয় প্রতীক নিয়ে মিছিল ও সমাবেশ করে তাদের কর্মী-সমর্থকরা শোডাউন করেছেন। দুপুর না গড়াতেই প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে আশপাশের এলাকাসহ পুরো শহর সরগরম হয়ে ওঠে। সৃষ্টি হয় যানজটের। রিক্সা পর্যন্ত চলার উপায় ছিল না। এ যেন ছিল নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের মহোৎসব। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এবারের নির্বাচনে শেষদিন পর্যন্ত মোট ৩৯১ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, বিএনপি সমর্থিত দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকারসহ মেয়র পদে মোট ১০ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। মেয়র পদে অন্য প্রার্থীরা হলেন- ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা ফজলুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মোঃ নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মোঃ জালাল উদ্দিন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মোঃ রুহুল আমিন এবং স্বতন্ত্রপ্রার্থী মোঃ আফসার উদ্দিন, মোঃ সানাউল্লাহ মিয়া ও ফরিদ আহমেদ। বৃহস্পতিবার মেয়র পদের ৯ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর আগে বুধবার জাসদ মনোনীত প্রার্থী রাশেদুল হাসান রানা তার মনোনয়নপত্র জমা দেন। সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের ১৯টি কাউন্সিলর পদের জন্য ৮৭ জন ও ৫৭ সাধারণ ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৯৪ প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। বৃহস্পতিবার মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি সংরক্ষিত ওয়ার্ড ও সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীরাও উৎসব মুখর পরিবেশে জেলা শহরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ১৮ জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৯৭ জন এবং সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ৩৮৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এ্যাডভোকেট মোঃ জাহাঙ্গীর আলম রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম ফজলুল হক মিলন ও সাধারণ সম্পাদক সায়েদুল আলম বাবুল, বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন সরকার, ডা. মাজহারুল আলম, মীর হালিমুজ্জামান ননী ও সোহরাব উদ্দিনসহ প্রমুখ নেতা উপস্থিত ছিলেন। হাসান উদ্দিন সরকার তার মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে তিনি সকলের সহযোগিতা চান এবং এই নির্বাচনকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে রূপান্তরের কথা বলেন। সেই সঙ্গে তিনি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনেরও দাবি জানান। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোঃ রকিব উদ্দিন মন্ডল বলেন, আচরণবিধি যাতে লঙ্ঘিত না হয়, সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রার্থীদের সঙ্গেও কথা হয়েছে মনোনয়নপত্র দাখিল করার সময় কোন প্রার্থীর সঙ্গে যেন পাঁচজনের বেশি লোক না আসেন। তারপরও পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেটদের বলে দিয়েছি কোথাও যাতে কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন না করেন। আচরণ বিধি যাতে লঙ্ঘন না হয় এজন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছি, আচরণবিধি বিলি করছি, মাইকিং দিচ্ছি, প্রশাসনও চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। উল্লেখ্য, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও জমা দেয়ার শেষদিন বৃহস্পতিবার। তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাইবাছাই হবে ১৫-১৬ এপ্রিল এবং প্রার্থিতা (মনোনয়নপত্র) প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৩ এপ্রিল। ২৪ এপ্রিল প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে এবং ১৫ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গত ৩১ মার্চ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর হতে এটি হবে এ সিটি কর্পোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচন। এবার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৪২৫ জন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডলকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
×