ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

চিটাগাং সিমেন্ট মামলায় তিন আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:২১, ১১ এপ্রিল ২০১৮

চিটাগাং সিমেন্ট মামলায় তিন আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় চিটাগাং সিমেন্ট (বর্তমানে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট) মামলায় আলোচিত রকিবুর রহমানসহ অন্য ২ আসামিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। এর আগে ২০১৭ সালের ৩০ মে শেয়ারবাজার বিষয়ক ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর আলী শেখ আসামিদের বেকসুর খালাসের রায় দেন। এর পরবর্তীতে ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল চেয়ে বিএসইসি উচ্চ আদালতে আপীল করে। এ মামলার আসামিরা হলেন ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট রকিবুর রহমান, টি কে গ্রুপের মালিক আবু তৈয়ব এবং বুলবুল সিকিউরিটিজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম শহিদুল হক বুলবুল। আত্মসমর্পণের পর তারা জামিন চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতকে তা বিবেচনা করতে বলা হয়েছে উচ্চ আদালতের আদেশে। ওই তিনজনের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) করা এক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোঃ রেজাউল হক ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ সম্প্রতি রুলসহ এ আদেশ দেয়। আদালতে বিএসইসির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ এম মাসুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ খুরশীদুল আলম। পরে খুরশীদুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, চিটাগাং সিমন্টে মামলায় আবু তৈয়ব এবং দুই পরিচালক এ এস শহীদুল হক বুলবুল ও রাকিবুর রহমানকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে নিম্ন আদালতের দেয়া তাদের খালাসের রায় কেন বাতিল করা হবে না - তা জানতে চেয়ে আদালত রুল দিয়েছে। এ মামলার নথিও হাইকোর্টে তলব করা হয়েছে। রায়ে ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর আলী শেখ বলেন, রকিবুর রহমান ও এএসএম শহিদুল হক বুলবুল সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে চিটাগাং সিমেন্টে পদ ধরে রাখেন নাই। আর স্টক এক্সচেঞ্জ ছাড়া বিদেশীদের কাছে শেয়ার বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। অভিযুক্তরা তাদের আত্মীয়দের কাছে বিপুল পরিমাণ শেয়ার হস্তান্তর করেছেন এমন অভিযোগও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এ ছাড়া ২.৯২ কোটি টাকা মূল্যের ২২৪০টি শেয়ার দীর্ঘদিন ফরেন এ্যাকাউন্টে আনসেটেলড অবস্থায় থাকার দায়ভার আসামিদের ওপর বর্তায় না। সর্বপরি আসামিরা সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ ১৯৬৯ এর ১৭ ধারা লঙ্ঘন করে ১৯৯৬ সালে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার কেনা-বেচায় কোন ধরনের কারসাজিমূলক কাজ করেনি বলে বিচারক রায়ে লিখেছেন। এ ক্ষেত্রে কোন ধরনের অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায়, আসামিদেরকে একই অধ্যাদেশের শাস্তিমূলক ২৪ ধারায় শাস্তি দেয়া যায় না। যে কারণে আসামিদেরকে খালাস দেয়া হলো বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে যুক্তিতর্ক শেষে ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের বিচারক হুমায়ুন কবীর রায় ঘোষণার জন্য ওই বছরের ৮ নবেম্বর দিন নির্ধারণ করেছিলেন। কিন্তু রায় ঘোষণার মাত্র ৫ দিন আগে ৩ নবেম্বর মামলাটির কার্যক্রমের ওপর উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। এ মামলার অন্যতম আসামি বুলবুল সিকিউরিটিজ হাউসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম শহিদুল হক বুলবুলের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেন আদালত। ফলে মামলাটির রায় ঘোষণা করতে পারেননি ট্রাইব্যুনালের বিচারক। এরপরে কয়েক দফায় মামলাটির স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ান হয়।
×