ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কালোতালিকাভুক্ত প্রক্রিয়ার মধ্যে কাজ পেল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ৭ এপ্রিল ২০১৮

কালোতালিকাভুক্ত প্রক্রিয়ার মধ্যে কাজ পেল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান

রশিদ মামুন ॥ চলছে কালো তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া। এরমধ্যে আবার কাজও পেয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোরতার নতুন এই নজির স্থাপন করেছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি)। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের একাংশে বিদ্যুত বিতরণ করে কোম্পানিটি। সম্প্রতি রাজধানীর বনশ্রী জোনে বড় রকমের জালিয়াতি ধরা পড়ে কোম্পানির তদন্তে। সেখানে বিল তৈরি এবং সরবরাহের দায়িত্বে থাকা কমার্স সাপোর্ট সার্ভিস (সিএসএস) ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মুন্সি ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটকে কালো তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি। আর সেই কোম্পানিকেই আবার নারায়ণগঞ্জের একটি জোনের সিএসএস ঠিকাদার হিসেবে কাজ দেয়া হয়েছে। সিএসএস ঠিকাদারদের কাজ হলো গ্রাহকের ব্যবহৃত বিদ্যুতের মাসিক হিসাব সংগ্রহ করে ডিপিডিসির সংশ্লিষ্ট শাখা অফিসে জমা দেয়া এবং মাসিক বিলের কাগজ গ্রাহককে পৌঁছে দেয়া। এছাড়া বকেয়া আদায়, লাইন বিচ্ছিন্ন, ক্রটি সারানোসহ বিভিন্ন কাজ করা। বনশ্রী এলাকায় নিয়োজিত সিএসএস ঠিকাদার মুন্সি ইঞ্জিনিয়ারিং এর সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়ে কেন তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হবে না জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিসও দিয়েছে ডিপিডিসি। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) বনশ্রী শাখায় ১১ লাখ ইউনিটের বেশি বিদ্যুত চুরির ঘটনা ঘটে। গ্রাহকের শতাধিক একাউন্টে তথ্য গড়মিল করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। ডিপিডিসি প্রধান প্রকৌশলী (সেন্ট্রাল) সারোয়ারে কায়নাতে মোঃ নূর এবং ডিপিডিসির আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ রবিউল হাসানের নেতৃত্বে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি গ্রাহক পর্যায়ে তদন্ত করে অভিযোগ সত্যতা পায়। গত ২৯ জানুয়ারি কমিটি এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে ডিপিডিসির বনশ্রী ডিভিশনের লাইনম্যান মীর কামাল হোসেন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল রানাসহ সিএসএস ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মুন্সি ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটের ১০ জন মিটার রিডারকে বিদ্যুত কারচুপির সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এরপর দুই মাসেরও বেশি সময় পার হলেও শুধুমাত্র লাইনম্যান মীর কামাল হোসেন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোহেল রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করে ডিপিডিসি। কমিটি জোনের কোন শীর্ষ কর্মকর্তাকে দায়ী না করায় তদন্তটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ এলাকায় সিএসএস ঠিকাদার হিসেবে মুন্সি ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েট কাজ পেয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডিপিডিসি নারায়ণগঞ্জ জোনের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান আবুল কালাম আজাদ। তবে তিনি প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় থেকে কাজ দেয়া হয়েছে জানিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ করেন। ডিপিডিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান বলেন, তাদের কালো তালিকাভুক্তির বিষয়টি চলমান রয়েছে। তাদের নোটিস দেয়া হয়েছে। কেন তালিকাভুক্ত করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তারা এই নোটিসের জবাব দিয়েছে। সেটি নিয়ে আরও একটি কমিটি কাজ করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত কালো তালিকাভুক্ত হচ্ছে না ততক্ষণ পর্যন্ত কাজ দিতে কোন সমস্যা নেই বলে মনে করেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি জানান, কালো তালিকাভুক্ত তাকে যে করার প্রক্রিয়া চলছে না তা কিন্তু নয়। কালো তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়ার মধ্যে সেই কোম্পানিকে কাজ দেয়াটা যৌক্তিক কী না জানতে চাইলে ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালক(প্রকৌশল) রমিজ উদ্দিন সরকার জনকণ্ঠকে বলেন, তাদের এখনও কালো তালিকাভুক্ত করা হয়নি। এখন বিষয়টি নিয়ে একটি কমিটি কাজ করছে। এখন পিপিআর অনুযায়ী কেউ সর্বনিম্ন ঠিকাদার হলে আমাদের কাজ দেয়া ছাড়া বিকল্প কিছু করার নেই। তিনি বলেন, মুন্সি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের যেসব মিটার রিডার সম্পৃক্ত ছিল তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
×