স্টাফ রিপোর্টার ॥ অনুমতি না পাওয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ কর্মসূচী স্থগিত করেছে বিএনপি। বুধবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সমাবেশ স্থগিত করার কথা জানান। এর আগে দুপুরে আরেক দফা সংবাদ সম্মেলনে রিজভী মন্তব্য করেন জনতার ঢল নামার ভয়ে সরকার বিএনপিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে না। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আমরা বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের অনুমতি না দেয়ায় আপাতত সমাবেশ স্থগিত করা হলো। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকায় বিএনপির পক্ষ থেকে ১২ মার্চ ও ১৯ মার্চ সমাবেশ করতে পুলিশের অনুমতির জন্য আবেদন করা হলেও সরকারের নির্দেশে নিরাপত্তার অজুহাতে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি ডিএমপি।
রিজভী বলেন, ২৯ মার্চ সমাবেশ করতে বেশ কয়েক দিন আগে বিএনপির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। মঙ্গলবার দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বিএনপির একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার পর আমরা বিশ্বাস করতে চেয়েছিলাম সরকার সমাবেশের অনুমতি দেবে। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অনুমতি দেবে পুলিশ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে এটা প্রমাণিত হয়েছে দেশ চালাচ্ছে পুলিশ। আওয়ামী লীগ ক্ষয়িষ্ণু রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে বলেই দেশটা এখন পুলিশের কব্জায়।
রিজভী বলেন, সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করলেও আমরা অনুমতি পাইনি। বিএনপির মতো একটি দলকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি না দেয়া স্বৈরাচারী আচরণেরই বহিঃপ্রকাশ। অথচ ২৪ মার্চ গণতন্ত্র হত্যার দিনে এরশাদের জাতীয় পার্টিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে দেয়া হয়েছে। এই ঘটনায় গণতন্ত্রকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করা হলো।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ১ এপ্রিল লিফলেট বিতরণ, ৩ এপ্রিল প্রতিবাদ, ৭ এপ্রিল বরিশাল এবং ১০ এপ্রিল সিলেটে সমাবেশ। দলের সকল নেতাকর্মীকে এসব কর্মসূচী সফল করার আহ্বান জানান রুহুল কবির রিজভী।
এক সপ্তাহের নোটিসেও নির্বাচনে যেতে রাজি বিএনপি-দুদু খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার এক সপ্তাহ পর নির্বাচন হলেও বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতাদের মুক্তির দাবিতে ‘দেশ বাচাঁও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ফারুক বলেন, আমি বুঝতে পারি না সরকার কী চায়? যদি এটা নির্বাচনকালীন বছর হয়ে থাকে তাহলে সবাইকে মুক্তি দিন। বিএনপিকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালনের অনুমতি দিন। তা না হলে একতরফা নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে অংশ নেয়া সম্ভব হবে না।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান, দলের নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।