ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে দরিদ্র ভাতা নিচ্ছেন কোটিপতির স্ত্রী ও বোন

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ২৬ মার্চ ২০১৮

বরিশালে দরিদ্র ভাতা নিচ্ছেন কোটিপতির স্ত্রী ও বোন

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ দরিদ্র মায়েদের তালিকায় নাম লিখিয়ে মাতৃত্বকালীন ভাতা নিচ্ছেন জেলার উজিরপুর উপজেলার এক কোটিপতির স্ত্রী ও বোন। ভাতা নেয়ার ঘটনাটি ফাঁস হলে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কোটিপতি ভাতা গ্রহীতারা হলেন উপজেলার বামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পল্লী চিকিৎসক আতিকুর রহমান রাঢ়ীর স্ত্রী লিপি বেগম (৩০) এবং আতিকুর রহমানের বোন দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী মুনির বিশ্বাসের স্ত্রী রানী বেগম। বামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক বাসিন্দা জানান, ইউপি সদস্য ও পল্লী চিকিৎসক আতিকুর রহমানের বামরাইল বন্দরে অত্যাধুনিক ফার্মেসি ও চিকিৎসালয় রয়েছে। সেখান থেকে তার মাসে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক টাকা আয় হয়। তার দোতলা একটি বাড়িছাড়ার বরিশাল নগরীতে জমি রয়েছে। এরপরেও ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান নিজের স্ত্রী লিপি বেগম ও বোন দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী মুনির বিশ্বাসের স্ত্রী রানী বেগমকে দরিদ্র উল্লেখ করে মাতৃত্বকালীন ভাতা দিচ্ছেন। সূত্রমতে, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে দুই বছর মেয়াদে এ ভাতা কার্যক্রমে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ইতোমধ্যে তিন কিস্তিতে দুজনে ১৮ হাজার টাকা ভাতা উত্তোলন করেছেন। স্থানীয়রা জানান, দরিদ্র অসহায় মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্যক্রম চালু করেছে সরকার। দুই সন্তানের জননীদের জন্য ভাতা প্রযোজ্য। সে মোতাবেক ২০১৬ সালে ওই ওয়ার্ডে দুইজন নারীর মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য নাম বরাদ্দ হয়। তবে ইউপি সদস্য এলাকার দরিদ্র মায়েদের বাদ দিয়ে স্ত্রী ও বোনের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। এছাড়া তিন সন্তানের জননী হয়েও লিপি বেগম নিয়মবহির্ভূতভাবে ভাতা নিচ্ছেন। তবে কৌশলে এতদিন ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান বিষয়টি গোপন রেখেছেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান বলেন, মাতৃত্বকালীন ভাতা শুধুই যে দরিদ্র মায়েরা পাবেন তা আমার জানা ছিল না। তাই ভাতা গ্রহণ ভুল হয়েছে। বামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ২ নম্বর ওয়ার্ডের তালিকা তৈরি করেছেন ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান। তিনিই বিষয়টি ভাল বলতে পারবেন। তবে এখন জানলাম। আরও দুটি কিস্তি বাকি রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অনিয়ম পেলে ভাতা দেয়া হবে না। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইশরাত জাহান বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। তবে ওই নাম দুটিতে ভাতা চলমান। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুমা আক্তার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×