ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১১ মার্চ ২০১৮

নিরপেক্ষ সরকারের  অধীনে নির্বাচন  দিন ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্রের জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে দলীয় নেতা কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে শনিবার বিকেলে খুলনার কে ডি ঘোষ রোডের জেলা ও মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত জনসভায় তিনি এ আহ্বান জানান। নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে সমাবেশের অনুমতি না পাওয়ায় পরবর্তীতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন আন্দোলন শুধু খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন নয়, সঙ্গে সঙ্গে গণতন্ত্র, দেশ রক্ষা ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আন্দোলন শুরু হয়েছে। এ আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হবই। কারাগারে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মনোবল হারাননি, তিনি আগের চেয়ে আরও তেজস্বী রয়েছেন। ফলে আমাদের সকলকে আরও ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, এ সরকার বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ ধংস করে দিয়েছে। প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের মুখে পদত্যাগ ও বিদেশ যেতে বাধ্য করেছে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী নেতারা পুকুরচুরি করছে। ব্যাংক লুট করা হচ্ছে। সরকার শুধু বাগাড়ম্বর করছে। মিডিয়ার সামনে মিথ্যাকে সত্য আর সত্যকে মিথ্যা বলছে। তিনি বলেন, ১০টাকা কেজি চাল খাওয়াবে বলেছিল, এখন চালের দাম ৬০-৭০ টাকা। পেট্রোল ডিজেল গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনারা কেন জনগণের প্রতিপক্ষ হচ্ছেন। জনগণের বুকে পাথর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে । খালেদা জিয়াকে গণতন্ত্রের মা আখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীকে জেলে পাঠিয়েছেন। তাকে বাইরে রেখে নির্বাচন করার সাহস করেন না। কারাগারের জরাজীর্ণ কক্ষে তাকে রাখা হয়েছে। মিথ্যা মামলায় তিনি কারাগারে রয়েছেন। তাকে ন্যূনতম আইনী অধিকার দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে আছে। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য যত রকম অপরাধ আছে তা তারা করছে। তিনি সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, জনগণের চোখের ভাষা দেখুন। এ আওয়াজ শুনুন। যে আওয়াজ উঠেছে, যে দাবি উঠেছে তার প্রতি নতি স্বীকার করে অবিলম্বে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তৃতা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মেহেদী হাসান মুনীর, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুজিবুর রহমান সরোয়ার, কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল হক হাবিব, খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার , মাসুদ অরুন, খুলনা জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র মনিরুজ্জান মনিসহ খুলনা বিভাগের বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ড. মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, আমরা নাকি আন্দোলন করতে জানিনা। জানিনা, লগি- বৈঠার রাজনীতি করতে। আওয়ামী লীগকে মনে রাখতে হবে তারা বিএনপিকে ধ্বংস করতে পারবেনা। বিএনপির প্রতি দেশের কোটি কোটি মানুষের সমর্থন রয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে, উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জনগণের শক্তি দিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করা হবে। তাকে মুক্ত না করা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাবনা। নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া কোন দুর্নীতি করেন নাই। এক পয়সা দুর্নীতিরও প্রমাণ হয় নাই। ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এখন ৬ কোটি হয়েছে। একটি টাকাতেও তিনি হাত দেন নাই। তিনি অভিযোগ করেন শেয়ার মার্কেটের টাকা কোথায় গেল? ব্যাংকের টাকা কোথায় গেল? আজ হোক কাল এর হিসাব এ দেশের মানুষকে দিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনে যেতে চাই। নির্বাচনের নামে পাতানো খেলায় বিএনপি যায় নাই, যাবেনা। বেগম খালেদা জিয়াকে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাকে নিয়েই আমরা নির্বাচনে যাব। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচয় দিতে পারেনা, এটি একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে পরিচিত। তিনি বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছে। জনসভার জন্য সার্কিট হাউস মাঠ চাওয়া হলো দেয়া যাবেনা, শহীদ হাদিস পার্ক চাওয়া হলো দেয়া যাবেনা, শহীদ মহারাজ চত্বর চাওয়া হলো দেয়া হলোনা। এখানে জনসভার অনুমতি দিতেও চায়নি। তিনি বলেন, দেশনেত্রীকে জেলে রেখে শেখ হাসিনা ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের হৃৎপিন্ডে কম্পন উঠে গেছে।
×