অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ভিয়েতনাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মাথাপিছু আয়, বিদ্যুত ব্যবহার, রফতানি কিংবা সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ। গত আড়াই দশকে এমন প্রায় সব অর্থনৈতিক সূচকেই বাংলাদেশের চেয়ে অনেক দূর এগিয়েছে ভিয়েতনাম। এমনকি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এসেও শেষ পর্যন্ত ভিয়েতনামে ঘাঁটি গেড়েছে অনেক নামীদামী প্রতিষ্ঠান। বিশ্লেষকরা বলছেন, দুদেশের পার্থক্য গড়ে দিয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার বিপরীত ছবিটাই। দক্ষিণ চীন সাগর পাড়ের দেশ ভিয়েতনাম। যার পূর্ব-দক্ষিণের পুরোটা জুড়েই সমুদ্রের নীল জলরাশির মায়া। আর উত্তরে প্রতাপশালী চীনের সঙ্গে শুধু সীমান্তই নয় দেশটির অর্থনীতিও জড়িয়ে আছে ওতপ্রোতোভাবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৮ বছরে যুদ্ধ শেষে ১৯৭৫ এ প্রায় ৩ লাখ ৩১ হাজার বর্গকিলোমিটারের এক ক্ষতবিক্ষত ভূখ-ই আজকের সোস্যালিস্ট রিপাবলিক অব ভিয়েতনাম বিশ্বের অন্যতম উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। এমনকি ৯০ দশকেও দেশটির চেয়ে প্রায় সবক্ষেত্রেই এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তবে এরপরে ছবিটা পাল্টেছে বিপরীত সুরে। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য বলছে, ১৯৯১ সালে গণতান্ত্রিকভাবে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশের রফতানি ছিল ভিয়েতনামের কাছাকাছি। এরপরের আড়াই দশকে সমাজতান্ত্রিক এই রাষ্ট্রটির যেখানে রফতানি বেড়েছে প্রায় ৬৭ গুণ, সেখানে বাংলাদেশ ছুঁতে পারেনি ৪০ বিলিয়নের ঘরও। ওই সময়টাতে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ভিয়েতনামের প্রায় তিনগুণ। আর এখন ভিয়েতনামের বেশি ৭৩০ ডলার। দুই দেশের পার্থক্য মূলত গড়ে দিয়েছে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ। ৯১ সালে মাত্র সাড়ে ৩৭ লাখ ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ ভিয়েতনাম নিয়ে গেছে প্রায় সাড়ে ১২ বিলিয়নে। সেখানে বাংলাদেশ ছাড়াতে পারেনি ২ বিলিয়নের ঘরও। ইয়াংওয়ান কিংবা স্যামসাং এর মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলোও এক সময় বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এসেও শেষ পর্যন্ত ঘাঁটি গাড়ে ভিয়েতনামে। দুদেশের মধ্যকার ৫শ’ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যও ভিয়েতনামের পক্ষে। দেশটিতে বাংলাদেশ রফতানি করে যত আমদানি তার ৬ গুণেরও বেশি। যেই ছবিটাই ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির এবারের সফরে কিছুটা হলেও বদলাতে চায় ঢাকা। প্রত্যাশা নতুন বিনিয়োগেরও। গেল ১ দশকে জ্বালানি খাতে ব্যাপক উন্নয়নের পরেও ভিয়েতনামের মাথাপিছু বিদ্যুত ব্যবহার বাংলাদেশের চেয়ে সাড়ে ৪ গুণের বেশি।