ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঘরের মাঠে আজ জিততে মরিয়া আবাহনী

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ৭ মার্চ ২০১৮

ঘরের মাঠে আজ জিততে মরিয়া আবাহনী

রুমেল খান ॥ আবাহনী লিমিটেড ঢাকা ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে’ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ‘এএফসি কাপ ২০১৮’র এশিয়ার বিভিন্ন দেশের লীগ চ্যাম্পিয়ন ক্লাব দলের বিপক্ষে খেলায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। এই মর্যাদাপূর্ণ ম্যাচে আবাহনী লিঃ ঢাকা আজ বুধবার বিকেল সোয়া ৪টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মালদ্বীপের নিউ রেডিয়েন্ট স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার মতিঝিলের বাফুফে ভবনের কনফারেন্স রুমে আবাহনী রেডিয়েন্ট দলের প্রধান প্রশিক্ষক, টিম ম্যানেজার ও দলের অধিনায়কের অংশগ্রহণে এক প্রি-ম্যাচ প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন আবাহনীর কোচ সাইফুল বারী টিটু, অধিনায়ক মামুন মিয়া, ম্যানেজার সত্যজিৎ দাশ রূপু এবং রেডিয়েন্টের কোচ অস্কার ব্রুজন, সহ-অধিনায়ক আকরাম আব্দুল ঘানি। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন এএফসি লোকাল মিডিয়া অফিসার আহসান আহমেদ অমিত।আবাহনীর কোচ টিটু ও অধিনায়ক মামুন বলেন, মালদ্বীপের চেয়ে তারা ব্যালান্সড ও শক্তিশালী দল। ম্যাচে তারা আত্মবিশ্বাসী ও সেরা খেলা প্রদর্শন করে জয়ী হবেন। মালদ্বীপের নিউ রেডিয়েন্ট দলের কোচ অস্কার এবং সহ-অধিনায়ক ঘানি বলেন, ম্যাচটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে এবং তারা সর্বোচ্চ খেলা প্রদর্শন করে আবাহনীকে হারাতে চান। আজকের ম্যাচের খেলা দেখার লক্ষ্যে আবাহনী ক্লাব থেকে সব দর্শকদের ফ্রি টিকেট সংগ্রহ করে খেলা দেখা যাবে। আবহাওয়া আর মাঠ নিজেদের বিপক্ষে হলেও রেডিয়েন্ট ক্লাব জয় নিয়েই বাড়ি ফিরতে চায়। অন্যদিকে ঢাকা আবাহনীও চায় ঘরের মাঠে পিছিয়ে থাকার গ-ি থেকে বের হয়ে এসে ভাল ফল করতে। দলীয় অধিনায়ক দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। আবাহনীর কোচ টিটু জানান, শিষ্যদের প্রতি তার আস্থার কথা, ‘এএফসি কাপে আমাদের হোম ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গত ১২ তারিখ থেকে আমরা ট্রেনিং শুরু করেছি। দুটি বিষয়ের ওপর খেয়াল রেখেছি। প্রথমত যেন ওভার ট্রেনিং না হয়ে যায়। দ্বিতীয়ত কম ট্রেনিংয়ের কারণে যাতে ফিটনেস ফল না করে। আমরা আমাদের বিদেশী প্লেয়ার একটু দেরিতেই পেয়েছি। তবে ম্যাচের আগে কোন এক্সকিউজ দাঁড় করাতে চাই না। শুধু একটা কথাই বলতে চাই এই ম্যাচটার জন্য সবাই কঠোর পরিশ্রম করেছি। ভাল কিছুই যাতে হয় সে চেষ্টাই থাকবে।’ দলীয় অধিনায়ক মামুন মিয়া বলেন, ‘বিগত সময়ে এএফসি কাপে আমাদের পারফর্মেন্স আশানুরূপ হয়নি। কখনই আমরা দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলতে পারিনি। এবার আমরা সেই অপূর্ণতা দূর করতে চাই। আমাদের বিদেশী খেলোয়াড়রা ঢাকার মাঠে পরীক্ষিত। এবার এশিয়ান কোটাতেও আমাদের একজন ফুটবলার আছে। আমরা শুধু একটি ক্লাব নয় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই যেন ভাল ফল করতে পারি।’ একটা সময় ছিল মালদ্বীপ এবং সে দেশের ক্লাবগুলোকে উড়িয়ে দিত বাংলাদেশ। এখন চিত্রটা উল্টো। সেই অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে চান টিটু, ‘আমি যখন খেলোয়াড় ছিলাম তখন রেডিয়েন্টের বিপক্ষে ঢাকায় এবং তাদের মাঠে গোল পেয়েছিলাম (১৯৯৩ সালে)। আমাদের এখনকার খেলোয়াড়রা যখন খালি স্টেডিয়ামে ম্যাচ খেলে আমার খুব খারাপ লাগে। আসলে সবাই চায় জয় দেখতে। সাফল্য না আসলে কেউ আগ্রহী হয় না।’ সাম্প্রতিক সময়ে মালদ্বীপ বা তাদের ক্লাবের সঙ্গে তেমন কোন সাফল্য নেই বাংলাদেশের। তাহলে আস্থার জায়গাটা কোথায়? জানতে চাইলে টিটু বলেছেন, ‘আপনাকে আমি এই গ্যারান্টি দিতে পারছি না যে ম্যাচটা আমরা জিতবোই। তবে আমরা নিজেদের শেষবিন্দু দিয়ে লড়বো সেই গ্যারান্টি দিতে পারি। আস্থার জায়গাটা হলো আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি। আমাদের যে এশিয়ান প্লেয়ারটা আছে তাকে ভাল মনে হয়েছে। দলের সবার মধ্যে যে মোটিভেশন দেখেছি তাতে মনে হয়েছে আমরা ভাল কিছু করব। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে ম্যাচ ডে’তে খেলোয়াড়রা মাঠে কেমন করবে তার ওপর।’ রেডিয়েন্ট ক্লাবের কোচ অস্কারের দলে আছেন মালদ্বীপের জাতীয় দলের ৯ ফুটবলার। ৪ বিদেশীর তিনজনই স্প্যানিশ, একজন আফগান। আলী আশফাকের মতো একজন ফুটবলার আছে তাদের দলে। যাকে কিনা ‘দক্ষিণ এশিয়ার মেসি’ বলে ডাকা হয়। এই বিদেশীরাই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট বলে মনে করছেন কোচ। সহকারী অধিনায়ক আকরাম আব্দুল বলেন, ‘আমার মনে হয় কঠিন একটা ম্যাচ হবে। আমরা দলের সবাই কঠোর পরিশ্রম করেছি। ম্যাচে ভাল ফল করতে চাই।’ আবাহনীর মাইনাস পয়েন্ট হচ্ছে তাদের ইমন বাবু নেই। আহত। ফলে আজ খেলতে পারবেন না। গত বছর এএফসি কাপের গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত ঢাকা আবাহনীকে। তবে এবার নিজেদের প্রথম ম্যাচের সপ্তাহখানেক আগে এ্যান্ড্রু অর্ডের জাতীয় দলকে ৪-০ গোলে হারিয়ে বেশ চাঙ্গা আকাশী-নীল জার্সিধারীরা। এএফসি কাপে ক্লাবের হয়ে এশিয়ান কোটায় একজনসহ মোট খেলতে পারবে চার বিদেশী। যেখানে ঢাকা আবাহনীতে আছে সানডে চিজোবা, এমেকা ডার্লিংটন, এ্যালিসন উদুকা ও জাপানী মিডফিল্ডার সাইয়া কোজিমা। এটি বাড়তি মাত্রা যোগ করবে খেলায়। নিজেদের সেরাটা দিয়ে মালদ্বীপের দলকে হারাতে আত্মবিশ্বাসী দলের বিদেশী খেলোয়াড়রা। ‘ই’ গ্রুপ থেকে একমাত্র বেঙ্গালুরু বাদে বাকি তিন দলই লীগ চ্যাম্পিয়ন। তাই পরের পর্ব নিশ্চিত করতে হলে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে সব ক্লাবকেই।
×