ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পটুয়াখালীতে তরমুজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ৭ মার্চ ২০১৮

পটুয়াখালীতে তরমুজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর দক্ষিণের দুই উপজেলা গলাচিপা ও রাঙ্গাবালীতে এবার তরমুজের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছেন, তরমুজের উৎপাদন পাঁচ শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও তরমুজের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এরইমধ্যে ক্ষেতে উৎপাদিত তরমুজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। শুরুতে দামও মিলছে বেশি। ফলে তরমুজ উৎপাদনে জড়িত চাষীদের চোখে-মুখে বইছে খুশির ঝিলিক। মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের সূত্রে জানা গেছে, এক দশক আগেও পটুয়াখালী অঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হাইব্রিড তরমুজের খুব বেশি চাষ হতো না। গত কয়েক বছরে এ চিত্র পাল্টে গেছে। কম সময়ে বেশি লাভ, কৃষকদের আগ্রহ, কৃষি বিভাগীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসাহব্যঞ্জক তৎপরতা ও হাতের কাছে সার, বীজ, কীটনাশকসহ অন্যান্য সরঞ্জাম পৌঁছে যাওয়ায় গত কয়েক বছরে তরমুজ চাষ ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার গলাচিপা উপজেলায় ৬ হাজার ও রাঙ্গাবালী উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু গত ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এক নাগাড়ে চারদিনের অধিক মাত্রায় বর্ষণ তরমুজ চাষকে বাধাগ্রস্ত করে। বহু তরমুজচাষী বোরো আবাদে ঝুঁকে পড়ে। এরপরেও দুই উপজেলায় এবার সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মান্নান আশা প্রকাশ করে জানান, প্রতি হেক্টরে ৩৫ মেট্রিক টন হিসেবে দুই উপজেলায় প্রায় সাড়ে চার লাখ টন তরমুজের ফলন হবে। যার বর্তমান বাজার মূল্য পাঁচ শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। তিনি আরও জানান, প্রতি একরে ৫০ হাজার টাকা হিসেবে তরমুজ চাষে চাষীরা দেড় শ’ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। চার মাসের ব্যবধানে এর বিপরীতে চাষীরা অন্তত সাড়ে তিন শ’ কোটি টাকা লাভ করবে। অল্প সময়ে ব্যাপক লাভ চাষীদের তাই তরমুজ চাষে ব্যাপক উদ্ধুদ্ধ করেছে। এদিকে, সরেজমিনে কয়েকটি তরমুজ ক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে-এরই মধ্যে এলাকার উৎপাদিত তরমুজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। আগামী এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজারে আসা তরমুজের পরিমাণ কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। বর্তমানে অধিকাংশ তরমুজ চাষী ও কৃষি শ্রমিক তরমুজ চাষের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। পানি সেচ ও পোকামাকড় দমনে কাটছে ব্যস্ত সময়। কয়েকজন তরমুজ চাষী জানিয়েছেন, তারা এখন কেবল গাছ থেকে তরমুজ কাটার ক্ষণ গুনছেন। আকস্মিক কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না এলে পাল্টে যাবে তাদের ভাগ্য।
×