ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নয়াচালা লালন একাডেমির ৮ম লালন স্মরণোৎসব

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

নয়াচালা লালন একাডেমির ৮ম লালন স্মরণোৎসব

সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ ‘জগৎ মুক্তিতে ভোলালেন সাঁই, ভক্তি দাও হে যাতে চরণ পাই’। ফকির লালন সাঁইয়ের গানের অনেক গানে এমন মরমী বাণী পাওয়া যায়। যেখানে মানুষই মানুষের মুক্তির পথ হিসেবে বিবেচ্য হয়। এই চেতনা ছড়িয়ে দিতে সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ থানার নয়াচালা গ্রামে মোহাম্মাদ সাধুর আখড়া বাড়িতে রবিবার নয়াচালা লালন একাডেমি ও গবেষণা কেন্দ্রের ৮ম লালন স্মরণোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজনে মোহাম্মাদ সাধুর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সৈয়দ ইরতেজা আহসান, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন চৌধুরী, উপজেলা পরিষদ সদস্য কামরুল আহসান আমিনুল, ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন ঠান্ডু প্রমুখ। বাঙালী সংস্কৃতির অন্যতম প্রাণ, একতারার সঙ্গে বাউলের গান। একাডেমির মাঠে রাতভর পরিবেশিত হয় দেশ বরেন্য লালন সঙ্গীত শিল্পীদের সঙ্গীত ও লালন স্মরণে আলোচনাসভা। মোহাম্মাদ সাধুসহ লালন ভক্তরা লালনের গানকে সাধারণ কালাম বলে থাকেন। অনুষ্ঠানে এই কালাম পরিবেশন করেন বলাই শাহ, মুক্তা সাধু, অঞ্জলি দাস, ঝন্টু বাউল, হনুফা, মজনু শাহ, মিজু, তুহিন, ময়না পাগলসহ কুষ্টিয়া ও অন্যান্য লালন একাডেমির শিল্পীরা। প্রতি বছর ১৩ ফাল্গুন মোহাম্মাদ সাধুর আখড়া বাড়িতে নয়াচালা লালন একাডেমি ও গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। যেখানে আদি চর্চায় মানব মুক্তির আহ্বানে জড়ো হয় হাজার হাজার লালন ভক্ত প্রেমী, আশেকান বসে। সারা বিশ্ব যে সময় সম্প্রীতি বিমুখ হয়ে সাম্প্রদায়িক কোন্দলে লিপ্ত সেসময় লালন সাঁইজির ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ এ দর্শনে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানবতার অনুশীলনে মত্ত থাকেন লালন একাডেমির শিক্ষার্থী, ভক্ত ও সাধক বাউলরা । লালন সাঁইজির দর্শন ও আদর্শে আদর্শিত সাধক মোহাম্মাদ সাধু ২০১০ সালে নিজ উদ্যোগে গড়ে তোলেন মানবতা ও অসাম্প্রদায়িক চর্চার এই লালন একাডেমি ও গবেষণা কেন্দ্র। সাঁইজির বাণী ‘কেউ মালা কেউ তসবি গলে, তাইতে কি জাত ভিন্ন বলে। আসা কিংবা যাওয়ার কালে, জাতের চিহ্ন রয় কারে’ এমন সত্য প্রচার ও সাধনার উদ্দেশ্যে মোহাম্মাদ সাধুর এই প্রচেষ্টা। নানা বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আজ আট বছর এই একাডেমির পথচলা। প্রতি বছর এই দিনে দেশ-বিদেশ থেকে লালন ভক্ত, প্রেমী, আশেকানরা এখানে সমবেত হয়। শিল্পী, সাধক বাউলেরা রাতভর পরিবেশনা করেন লালন সঙ্গীত।
×