ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৬৪ জেলার ১৬২ উপজেলায় ১০ হাজার ৩৫ গ্রামে কর্মসূচীটি বাস্তবায়ন করা হবে

দারিদ্র্য বিমোচনে গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মসূচী নিচ্ছে সরকার

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

দারিদ্র্য বিমোচনে গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মসূচী নিচ্ছে সরকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মসূচী হাতে নিচ্ছে সরকার। সমবায় সংগঠনের আওতায় গ্রামের ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষসহ সব পেশা ও শ্রেণীর জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন করা হবে। এ বিষয়ক প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায় শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। এ পর্যায়ে দেশের ৬৪ জেলার ১৬২টি উপজেলায় ১০ হাজার ৩৫টি গ্রামে কর্মসূচীটি বাস্তবায়ন করা হবে। সম্প্রসারিত এ অংশ বাস্তবায়নে সম্পূর্ণ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ব্যয় হবে ৩০১ কোটি ৫ লাখ টাকা। এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক আল নূরি ফয়জুর রেজা বলেন, এই প্রকল্পটি পল্লী উন্নয়নের জন্য একটি সফল মডেল। এই মডেল ব্যবহার করে এ কর্মসূচীর প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায় ইতোমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় পর্যায় কর্মসূচীটি প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, কর্মসূচীটি চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (এডিপি) বরাদ্দহীনভাবে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর অনুমোদনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভূমিহীন, বিত্তহীন ও দুস্থ লোকদের উন্নয়ন কর্মকা-ে সম্পৃক্ত করা এবং একটি গ্রামের সব শ্রেণীপেশার লোকের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী সংগঠন সৃষ্টির মাধ্যমে পল্লী উন্নয়নের কার্যকর পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য কুমিল্লায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) গবেষণা চালায়। এই গবেষণার ফলেই সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচী (সিভিডিপি) মডেল। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের আওতাধীন ৪টি সংস্থা যেমন- বার্ড, কুমিল্লা-আরডিএ, বগুড়া, বিআরডিবি এবং সমবায় অধিদফতরের মাধ্যমে ২০০৫ সালের জুলাই হতে ২০০৯ সালের জুন পর্যন্ত ১৮টি জেলার ২১টি উপজেলায় মোট ২৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সিভিডিপির প্রথম পর্যায় এবং ২০০৯ সালের জুলাই হতে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬৪টি জেলার ৬৬টি উপজেলায় ৯৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে, সার্বিক গ্রাম উন্নয়নের জন্য গ্রামের ১৮ বছর বা তার উর্ধ বয়সে সব অধিবাসীকে সমবায় পদ্ধতির আওতায় আনার জন্য উদ্বুদ্ধকরণ, গ্রামের প্রাপ্ত বয়স্ক সব নাগরিকের সমন্বয়ে প্রতি গ্রামে ১টি করে মোট ১০ হাজার ৩৫টি গ্রামে সমবায় সমিতি গঠন, ১৪ লাখ ৩০ হাজার ১৬৩ জনকে দক্ষতা বৃদ্ধি, আয়বর্ধক কর্মকা- ও তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে, সমবায় সমিতির সদস্যদের ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে মোট ৫১০ কোটি টাকার মূলধন গঠন, এই মূলধন থেকে বিনিয়োগের মাধ্যমে ৩ লাখ ৫০ হাজার আত্মকর্মসংস্থানের সৃষ্টি এবং প্রতিটি সমবায় সমিতির জন্য গ্রাম উন্নয়ন কর্মী তৈরি করা।
×