ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই ॥ জিএম সৈকত

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

শিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই ॥ জিএম সৈকত

সময়ের তরুণ ও মেধাবী নাট্য পরিচালক জিএম সৈকত। নাট্য নির্মাণের পাশাপাশি সম্প্রতি শিল্পী ঐক্যজোট নামে একটি সংগঠনের মাধ্যমে দুস্থ এবং অসহায় শিল্পীদের সহায়তায় কাজ করছেন। দেড় শতাধিক নাটকের পরিচালক জিএম সৈকত কিছুদিন আগে শেষ হওয়া বৈশাখী টিভির দর্শক নন্দিত ধারাবাহিক ‘লেডি গোয়েন্দা’ এবং এটিএন বাংলায় প্রচার চলতি ধারাবাহিক ‘ডিবি’ নাটকের পরিচালক হিসেবে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন। যদিও খন্ড নাটক নির্মাতা হিসেবেই তিনি বেশ পরিচিত। নাট্য পরিচালক হিসেবে অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত এবং প্রশংসিত মেধাবী এই পরিচালকের জন্মদিন আজ। সাম্প্রতিক কাজের ব্যস্ততা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। শিল্পী ঐক্যজোটের বর্তমান কার্যক্রম প্রসঙ্গে জানতে চাই। জিএম সৈকত : আমরা আসলে দুস্থ শিল্পীদের নিয়ে কাজ করছি। এজন্য একটা প্লাটফর্ম খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। বিশেষ করে আমি আমার উপলব্ধি থেকে দেখেছি আমাদের দেশে অনেক গুণীশিল্পী শেষ জীবনে অসহায় জীবনযাপন করেন। এমনকি অল্প বয়সেও কেউ অসুস্থ হলে তার খবর কেউ নেয় না। আমি এসব শিল্পীদের নিয়ে কাজ করতে চাই। সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আমাদের দেশের এক সময়ের কয়েকজন অসহায় শিল্পীকে নিয়ে কাজ করছি। বিশেষ করে চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, সঙ্গীত ও মঞ্চের শিল্পী কলাকুশলীদের সংগঠন শিল্পী ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। আমার মিডিয়ার গুরু ডি এ তায়েব স্যারের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় আজ আমি জি এম সৈকত। নির্মাণের পাশাপাশি শিল্পী ঐক্যজোটের মাধ্যমে শিল্পীদের যথার্থ সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার পাশাপাশি মানবতার কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই। এই কাজে সহায়তার জন্য বর্তমান শিল্প ও শিল্পীবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। যখনই কোন শিল্পীর জন্য তার কাছে সাহায্য চেয়েছি উনি সঙ্গে সঙ্গে সেটা করে দিয়েছেন। সর্বশেষ আমরা খালেদা আক্তার কল্পনা আপার জন্য তার কাছে গিয়েছিলাম। তিনি কল্পনা আপার চিকিৎসায় সহায়তা দিয়েছেন। এ জন্য আমি শিল্পী ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুস্থ অসহায় শিল্পীদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করেছেন। আমি এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। এছাড়া আমরা একটি শিল্পী ফান্ড গঠন করেছি। যেখানে আমার নাটকে অভিনেতা অভিনেত্রীরা ২০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক পেলে সেখান থেকে তারা ন্যূনতম এক হাজার টাকা দান করবেন। পাশাপাশি আমরা অসুস্থ শিল্পীদের চিকিৎসার জন্য একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করেছি। আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে আমরা, কাঙ্গালিনী সুফিয়া, চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রাণী সরকার, অভিনেত্রী আনোয়ারা, বনশ্রী, মায়া ঘোষ শুভ্রা, নায়ক সাত্তার এবং সর্বশেষ অভিনেত্রী খালেদা আক্তার কল্পনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য পেয়েছি। এছাড়া সংগঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন দুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে আপনার মূল্যায়ন জি এম সৈকত : দেখুন টিভি মিডিয়ায় পথ চলায় প্রায় দেড় যুগ অতিবাহিত করছি। ২০০০ সালে মিডিয়াতে পদার্পণ করি। দীর্ঘ প্রায় দশ বছর বিভিন্ন গুণী পরিচালককের সঙ্গে কাজ করার পর ২০১০ সালে ‘লটারি’ নাটকের মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে আমার যাত্রা শুরু হয়। দীর্ঘ এই যাত্রায় ‘মেয়েটি কে’, ‘মন যেখানে হৃদয় সেখানে’, ‘মা’, ‘মানুষ’, ‘বাবা’, ‘বৃদ্ধাশ্রম’, ‘বিবর্ণ স্বপ্ন’সহ দেড় শতাধিক একক নাটক, বাইশটি টেলিফিল্ম, বারটি ধারাবাহিক নাটক নির্মাণের সৌভাগ্য হয়েছে। বর্তমানে আমার পরিচালনায় মেগা-ধারাবাহিক নাটক ‘ডিবি’ এটিএন বাংলায় প্রচার হচ্ছে। আরও বেশ কিছু নাটকের কাজ হাতে আছে। সেগুলো ভালভাবে শেষ করতে চাই। আপনি একসময় থিয়েটারের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন? জিএম সৈকত : আমি আসলে থিয়েটারের মানুষ। ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিচরণ। সেই সুবাদে থিয়েটার করার লক্ষ্যে ২০০০ সালে ঢাকায় আসি। এরপর চয়নিকা এবং স্বরবীথি থিয়েটারের হয়ে ৪টি নাটকে শতাধিক প্রদর্শনীতে আমি অভিনয় করেছি। এরপর ২০০৯ সাল থেকে টিভি নাটক নির্মাণে যুক্ত হওয়ার পর থেকে থিয়েটারটা ঠিক সেভাবে করা হয়ে উঠছে না। তবে থিয়েটার নিয়ে আমার বিশেষ পরিকল্পনা আছে। অচিরেই থিয়েটার নিয়ে কিছু একটা করব। আপনি তো বেশ কিছু সম্মাননাও পেয়েছেন? জি এম সৈকত : হ্যাঁ নাট্য পরিচালনার স্বীকৃতিস্বরূপ ১১টি পুরস্কার পেয়েছি। এর মধ্যে ২০১৩ সালে ঈদে বিটিভিতে প্রচার হওয়া ‘মা’ নাটকটি শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হয়েছিল। ২০১৪ সালে বিটিভিতে প্রচার হওয়া ‘বৃদ্ধাশ্রম’ নাটকটি তৃতীয় হয়েছিল এবং সুধীজনদের প্রশংসা পেয়েছি। জন্মদিনে আপনার পরিকল্পনা কী? জিএম সৈকত : কোন পরিকল্পনা নেই। দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকব। তবে আগামীকাল আফতাব নগরে একটি আড্ডা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন আমার শিল্পী ঐক্যজোটের সহযাত্রীরা। তবে আমার বিভিন্ন কাজের অনুপ্রেরণাদাতাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সবার কাছে আমি দোয়া চাই যাতে দেশের সংস্কৃতি বিকাশের পাশাপাশি শিল্পীদের জন্য কিছু করে যেতে পারি। -সাজু আহমেদ
×