ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বিজলী জাতের টমেটো আবাদে ব্যাপক সাফল্য

প্রকাশিত: ০৪:১৯, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বিজলী জাতের টমেটো আবাদে ব্যাপক সাফল্য

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ১০ ফেব্রুয়ারি ॥ টাঙ্গাইলে বাসাইল উপজেলার কাউলজানী ইউনিয়নের সুন্না গ্রামের আদর্শ কৃষক নজরুল ইসলাম সামান্য লেখাপড়া করে সংসারের হাল ধরতে চলে যান বিদেশে। সেখানে কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে সামান্য আয়ের টাকায় সংসার তো দূরের কথা নিজের খরচ জোগাতেই হিমশিম খেতে হতো তাকে। পরে প্রবাস জীবনের ইতি টেনে চলে আসেন নিজ দেশে। সংসার পরিচালনার তাগিদে বিভিন্ন পথও খুঁজতে থাকেন তিনি। অবশেষে ফলের বাগান করার কথা চিন্তার পর কাজ শুরু করে দেন নজরুল ইসলাম। নদী তীরবর্তী ৩০ শতাংশ জায়গা নিয়েই নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যেতে থাকেন। প্রথমেই চায়না জাতের লিচুর চারা লাগান তিনি। এর পাশাপাশি মিশ্র সবজির আবাদও করেন নজরুল। এরপর দেশীয় বিভিন্ন প্রকারের আমের চারাও লাগান এই সফল কৃষক। ছোটবেলা থেকেই কৃষি কাজের প্রতি প্রচুর দুর্বলতা। কঠোর পরিশ্রম আর দক্ষতার কারণেই লিচু চাষে দেখেন সফলতার মুখ। সাথী ফসল হিসেবে নানা জাতের শাক-সবজি চাষ করেন। লাভ হয় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি বর্তমানে বিজলী জাতের টমেটোর চাষ করেছেন। এই জাতের টমেটোর বীজের মূল্য অনেক বেশি হলেও ফলন ভাল পাবে বলে মাত্র ৪ গ্রাম বীজ রোপণ করে ২২ শতাংশ জায়গায় ৪শ’ টমেটোর চারা লাগিয়েছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, প্রত্যেকটা টমেটো গাছে প্রচুর পরিমাণে টমেটো এসেছে। নজরুল জানায়, প্রতিটি গাছে প্রায় এক মন টমেটো আসবে। এতে তার প্রায় লাখ টাকা লাভ হবে বলেও জানায়। এ বিষয়ে নজরুল ইসলাম আরও জানান, বর্তমানে আমি বিজলী জাতের টমেটোর চাষ করেছি। এই জাতের টমেটোর বীজের মূল্য প্রতি কেজি ৬ লাখ টাকা। আমি মাত্র ৪ গ্রাম বীজ কিনে চারা উঠিয়ে ৪শ’ চারা লাগিয়েছি। ফলন ভাল হয়েছে আশা করছি প্রতি গাছে একমন করে টমেটো আসবে। এতে আমার প্রায় লাখ টাকার মতো লাভ হবে। আমার বাগান দেখে এলাকার অনেকেই উৎসাহ পাচ্ছে। এলাকার বেকার যুবক ও আমার সমবয়সীরা সবজি চাষের দিকে আগ্রহী হচ্ছে। আমি আদর্শ একজন কৃষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। দেশের বেকার যুবকদের যদি সরকার সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে কৃষি কাজে উৎসাহিত করেন। তাহলে অসংখ্য বেকার যুবক নিজের ভাগ্য বদলাতে পারবে বলে মনে করেন সফল সবজি চাষী নজরুল ইসলাম। এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফারুক জানান, টমেটো একটি লাভজনক উচ্চ ফলনশীল পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এবং সি রয়েছে। এ ছাড়া ক্যান্সার প্রতিরোধক এন্টি অক্সিজেন (নাইকোপিন) রয়েছে। টমেটো আবাদ বৃদ্ধিতে আধুনিক কলাকৌশল প্রয়োগ করে ক্ষতিকর ফল ছিদ্রকারী পোকা ধ্বংস করার জন্য সেক্স ফেরোমন ফাঁদের ব্যবস্থা গ্রহণে কৃষক ভাইদের পরামর্শ প্রদান ও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এতে করে কৃষকের আবাদ ও আয় বাড়বে যা দেশের পুষ্টি চাহিদা দূর করে অর্থনীতিতে ভাল ভূমিকা রাখবে।
×